পদ্মায় নেমে যাচ্ছে বাঁধের ব্লক, বসতবাড়ি তলিয়ে যাবার শঙ্কা

সোহরাব হোসেন সৌরভ: | প্রকাশিত: ২৪ জুন ২০২১ ২৩:৪৩; আপডেট: ২৫ জুন ২০২১ ০১:৪১

রাজশাহীতে পদ্মার তীর রক্ষা বাঁধ থেকে ব্লক নেমে যাচ্ছে, যে কোন সময় তলিয়ে যেতে পারে শত শত বসত বাড়ি।

রাজশাহীতে পদ্মার তীর রক্ষা বাঁধ থেকে নেমে যাচ্ছে ব্লক। যে কোন সময় তলিয়ে যেতে পারে বাঁধের ধারে অবস্থিত শত শত বসতবাড়ি। গত কয়েক দিন আগে হওয়া ভারী  বর্ষণ এবং সপ্তাহ আগে থেকে নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে নগরীর কেশবপুর এলাকায় পদ্মার তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের ব্লকগুলো অনেক এলাকা নিয়ে নিচে নেমে গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এ এলাকায় নদীর পাড়ে শতাধীক ঘরবাড়ী রয়েছে। বসবাস করেন বহু মানুষ। ব্লকগুলো নিচে নেমে যাওয়ায় এলাকাবাসীর নদী ভাঙ্গনের আশঙ্কা করছেন।  যেকোনো সময় তাদের শেষ আশ্রয়টুকুও তলিয়ে যেতে পারে এনিয়ে অজানা অাতঙ্কে দিন পার করছেন। 

স্থানীয় অধিবাসী ব্লক নেমে যাবার পর নদীর ধারের রাস্তা বাঁশ দিয়ে বন্ধ করেছেন। তবে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডও (পাউবো) ইতিমধ্যে বালুর বস্তা ফেলার উদ্যোগ নিলেও  এলাকাবাসীর দাবি, স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা না করলে বালুর বস্তায় কোনই কাজ হবে না।

নদীর তীরের বাসিন্দা আলী নেয়াজের স্ত্রী কহিনুর বেগম (৫০) জানান, ‘গত বছরই বাঁধের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। তখনো শুধু বস্তাই ফেলা হয়। পানি কমে যাবার কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ড আর কাজে হাত দেয়নি। সারাটা বছর গেল, তাঁদের কোনো খবর নেই। আবার এখন নাকি বস্তা ফেলবে। বস্তা দিয়ে তো বড় বিপদ ঠেকানো যাবে না।’

পদ্মাপাড়ের ফয়সাল কবির বলেন, এই বাঁধের বয়স হয়েছে। এত দিনে সব নড়বড়ে হয়ে গেছে। এবার বৃষ্টি হলেই সব নেমে যাবে। এখন হয়তো আগের মতো বালুর বস্তা ফেলবে। কিন্তু বাঁধটাই মেরামত করা দরকার। এই স্রোতের মুখে বস্তা টিকবে না।

রাজশাহী নগরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন বলেন, কেশবপুর এলাকাটি আমার ওয়ার্ডের মধ্যে হবার কারণে ইতোমধ্যে পাউবো কে  জানানো হয়েছে। তারা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবে বলে আশ্বস্ত করেছেন।  

তিনি আরও বলেন, প্রায় ১৫ বছর আগে এখানে নদীর বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের স্থায়ী কাজ হয়। এই কাজে ব্যবহৃত ব্লকের কোনোটির গায়ে ২০০৫ সাল আবার কোনোটির গায়ে ২০০৬ সাল লেখা রয়েছে। এই দীর্ঘ সময়ে নদীর প্রবল স্রোতের কারণে ব্লকগুলো নড়বড়ে হয়ে গেছে। এক সারি থেকে আরেক সারির মধ্যে অনেকখানি ফাঁকও হয়ে গেছে।

রাজশাহী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম শেখ বলেন, ‘আপাতত বালুর বস্তা ফেলেই সমাধান করতে হবে। ইতিমধ্যে বস্তায় বালু ভরার কাজ শুরু করা হয়েছে। শিগগিরই আরও বস্তা ফেলা হবে। একটি প্রকল্প ছাড়া তো স্থায়ী কাজ করা যায় না। প্রকল্প অনুমোদন হতেও সময় লাগে।’ 

শফিকুল ইসলাম আরও জানান, বুলনপুর থেকে বাঘা উপজেলা পর্যন্ত পদ্মা নদীর বাঁ তীরের যেসব জায়গায় ব্লক নেমে গেছে, সেই জায়গাগুলোতে স্থায়ী কাজ করার জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরির কাজ করা হয়েছে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top