বিদেশি দায়দেনায় তিন বছর পর অস্বস্তিকর অবস্থানে যেতে পারে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

রাজ টাইমস | প্রকাশিত: ১০ মে ২০২২ ০২:২৬; আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৬:৩৬

সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত

বিদেশি দায়দেনায় তিন বছর পর অস্বস্তিকর অবস্থানে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের পরে বিদেশি দায়দেনায় অস্বস্তিকর অবস্থানে চলে যেতে পারে বাংলাদেশ। বর্তমানে বাংলাদেশ সবুজ (স্বস্তিকর) অবস্থানে আছে। এটি ধীরে ধীরে হলুদ অবস্থানে (অস্বস্তিকর) যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আপাতস্বস্তি না–ও থাকতে পারে। এখন আমরা বিদেশি দ্বিপক্ষীয় উৎস থেকে বেশি মূল্যে বেশি ঋণ করছি। যেমন চীন, রাশিয়া ও ভারত। এসব দেশের ঋণের রেয়াতি সময় (গ্রেস পিরিয়ড) শেষ হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া সরবরাহকারী ঋণের পরিমাণও বাড়ছে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, বহুপক্ষীয় উৎসের বদলে দ্বিপক্ষীয় উৎস থেকে বেশ ঋণ নিচ্ছি। অথচ পাইপলাইনে ৫০ বিলিয়ন ডলারের মতো সাশ্রয়ী ঋণ ব্যবহার করতে পারছি না।

আজ সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক অনলাইন আলাপচারিতায় দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এসব কথা বলেন। অবশ্য তিনি মনে করেন, বিদেশি দায়দেনার দেশি উৎসের দায়দেনাও কোনো অংশে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাঁর মতে, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে তুলনামূলক বেশি সুদে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। গত তিন বছরে অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি—দুই উৎস থেকেই ঋণ নেওয়া বেড়েছে। আবার বিগত দুটি জাতীয় নির্বাচনের আগের বছর, নির্বাচনের বছর ও পরের বছর ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। দেশের দায়দেনা পরিস্থিতি ব্যাখ্যায় নির্বাচনী চক্র সূচক হিসেবে উঠে আসছে।

বাংলাদেশে কি শ্রীলঙ্কার মতো সংকট হতে পারে—এমন প্রশ্নের উত্তরে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমি তা দেখি না। কোনো দেশের সঙ্গে অন্য দেশের তুলনীয় নয়। মূল বিষয় হলো, শ্রীলঙ্কা থেকে কী শিখলাম। একসময় আমাদের দেশেও বন্ড ছাড়ার ধোয়া উঠেছিল। সরকার এই বিষয়ে রক্ষণশীল ছিল। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কায় হাম্বানটোটা বন্দর নিয়ে ওই দেশের বিশেষজ্ঞরা এর বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন। তবু দেশটির সরকার তা করেছে।’

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য একটি হিসাব করে দেখিয়েছেন, ২০২০-২১ অর্থবছরের সার্বিকভাবে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে সরকারি দায়দেনা ৪৪ দশমিক ১০ শতাংশ। মাথাপিছু সরকারি দায়দেনা ৪৩২ ডলার। তিনি মনে করেন, সরকারি ঋণ পরিশোধসহ সার্বিক দায়দেনায় পূর্ণাঙ্গ হিসাব করতে হলে বিদেশি ঋণের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ঋণ, ব্যক্তি খাতের ঋণ, সরকারের সংযুক্ত দায়দেনাও বিবেচনায় আনা উচিত। এসব হিসাবে আনা হলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মূল্যায়ন থেকে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, সরকারি দায়দেনা পরিস্থিতি পাঁচ ধরনের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। যেমন বিনিময় হারের ঝুঁকি বাড়ছে, অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদের হার বাড়ছে, বিদেশি ঋণের সুদের হার বাড়ছে, উচ্চমূল্যে প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে এবং প্রকল্পের অর্থনৈতিক সুবিধা।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top