10120

04/17/2024 অবৈধ উপায়ে জ্বালানি তেলের দাম না বাড়ানোর দাবি ক্যাবের

অবৈধ উপায়ে জ্বালানি তেলের দাম না বাড়ানোর দাবি ক্যাবের

রাজটাইমস ডেস্ক

২১ জুন ২০২২ ০৫:০৯

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর আইনগত এখতিয়ার জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি)। অথচ প্রজ্ঞাপন জারি করে তেলের দাম বাড়ায় জ্বালানি বিভাগ বা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। এভাবে অবৈধ উপায়ে জ্বালানি তেলের দাম না বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

অনলাইনে আয়োজিত ‘জ্বালানি তেলের মূল্য আবারও অবৈধ উপায়ে বৃদ্ধি না করার দাবি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে আজ সোমবার এমন দাবি জানায় ক্যাব। এতে তারা চারটি দাবি তুলে ধরেছে। শুরুতে ক্যাবের ধারণাপত্র ও দাবি উপস্থাপন করেন জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম শামসুল আলম। জ্বালানির মূল্য নির্ধারণে প্রশাসনিক প্রতিকার না হলে ক্যাব উচ্চ আদালতে যাবে বলে জানান তিনি।

বিইআরসির আইন না মেনে নির্বাহী আদেশে গত ৩ নভেম্বর তেলের দাম বাড়ায় জ্বালানি বিভাগ। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত নভেম্বরে উচ্চ আদালতে একটি রিট দায়ের করে ক্যাব। এটি বিচারাধীন অবস্থায় দাম বাড়ানো অব্যাহত রেখেছে বিপিসি। এ ছাড়া বিপিসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিইআরসির কাছেও একটি চিঠি দিয়েছে ক্যাব।

ক্যাবের লিখিত বক্তব্য বলছে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হবে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর এসেছে। দিনে ১০০ কোটি টাকা ভর্তুকি কমানোর অজুহাতে জীবনযাত্রার খরচ শত শত কোটি টাকা বাড়িয়ে দেবে। এ নিয়ে ভোক্তারা অতিমাত্রায় আতঙ্কিত ও দিশাহারা।

শামসুল আলম বলেন, কোম্পানির পরিচালনায় আমলাতান্ত্রিক ক্ষমতা থাকায় জ্বালানি খাতে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। তাদের কাছ থেকে এসব কোম্পানি মুক্ত করা এখন মৌলিক দায়িত্ব। এ ছাড়া ভোক্তাদের জ্বালানি অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হবে না।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ক্যাবের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি বলেন, গণশুনানির মাধ্যমে বিপিসির প্রস্তাবে যৌক্তিক নাকি অযৌক্তিক, সে বিষয়ে মতামত দিতে পারবেন ভোক্তারা। একতরফাভাবে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতির কথা বলে দাম বাড়ানো যাবে না। তিনি আরও বলেন, এলপিজির দাম আগে একতরফাভাবে বাড়াতেন ব্যবসায়ীরা। ক্যাব উচ্চ আদালতে গিয়ে রায় এনেছে। এখন বিইআরসি এলপিজির দাম নির্ধারণ করে।

ক্যাবের দাবি বলছে, জ্বালানি তেলের দাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ নিয়ে শুনানি নিশ্চিত করবে বিইআরসি। কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের মাধ্যমে বিপিসির আয়-ব্যয়ের হিসাব অডিট করা দরকার। জ্বালানি খাতের সব প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বোর্ড থেকে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সরাতে হবে। এ ছাড়া বিইআরসি আইন লঙ্ঘন করে তেলের দাম বাড়ানোর দায়ে জ্বালানি সচিব ও বিপিসি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ভূতত্ত্ববিদ বদরূল ইমাম বলেন, রাষ্ট্র যদি লুণ্ঠনের হাত থেকে জনগণকে সুরক্ষা দেয়, তাহলে রাষ্ট্র কীভাবে লুণ্ঠন করে। ক্যাবের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, রাষ্ট্র অবৈধ কাজ করছে এবং বিইআরসির দ্বারা মূল্য নির্ধারণের যে বিধি রয়েছে, তা অমান্য করা হচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, জ্বালানি তেল একটি কৌশলগত পণ্য; এর দামের ওপর বাজারের অন্যান্য পণ্যের দাম নির্ভর করে। স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, বিপিসি এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয় যে কাজগুলো করছে, সেগুলো আইনসম্মত কি না? নাকি জ্বালানি খাতে তারা যা সিদ্ধান্ত নেবে, বাংলাদেশের জনগণকে তা মাথা পেতে নিতে হবে।

ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবীর ভূঁইয়া বলেন, ভোক্তারা এমনিতেই বিপদের মধ্যে আছেন। পণ্যের দাম এখন আকাশছোঁয়া। জ্বালানি তেলের দাম এখন বাড়ানো হলে ভোক্তাদের আর যাওয়ার কোনো জায়গা থাকবে না।

ক্যাব বলছে, বিপিসি ৪৩ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে ভোক্তার কাছ থেকে। শুনানিতে এলে তাদের জবাবদিহি করতে হতো। গ্যাসের দাম বাড়াতে ১১৭ শতাংশ ঘাটতির কথা বলা হয়েছিল। শুনানির পর গ্যাসের ঘাটতি বের হয়েছে ৬২ শতাংশ। যদিও অযৌক্তিক ও লুণ্ঠনমূলক ব্যয় বাদ দিলে গ্যাসের দাম বাড়াতে হতো না এবং ভর্তুকিও কমে যেত। জ্বালানি তেল খাতেও চুরি এবং অযৌক্তিক ব্যয় বাদ দিতে হবে। বিপিসির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে। তাদের আয়-ব্যয় নিয়ে আন্তর্জাতিক অডিট দরকার।

 

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]