04/23/2025 সনি হত্যা মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেওয়ার দাবি
রাজটাইমস ডেস্ক
১৯ জুলাই ২০২২ ০৯:৪৭
কিশোর মো. সনি (১৭) হত্যার মামলাটিকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেওয়ার দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে পরিবার ও স্থানীয় লোকজন। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরের শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান চত্বরে এ মানববন্ধন হয়।
মানববন্ধনে হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে নানা রকম প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয়। বক্তব্যে নিহত সনির বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, তাঁর ছেলেকে তুলে নিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের বিচার তাঁরা দ্রুত চান। এ জন্য তাঁর হত্যা মামলাটিকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
৩ জুলাই রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ এলাকা থেকে সনিকে একদল যুবক তুলে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। সনি রাজশাহী পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম ওরফে পাখির ছোট ছেলে। সে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। তার বাড়ি নগরের বোয়ালিয়া থানার দড়িখরবোনা এলাকায়। এ ঘটনায় সেদিন রাতেই সনির বাবা বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। ঘটনার পরদিন বিকেলে সনির লাশ কাঁধে নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রধান আসামিসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ-র্যাব।
নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, তাঁরা এই মামলার প্রধান আসামিদের গ্রেপ্তার করেছেন। দ্রুত অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।
হত্যাকাণ্ডের পর এসএসসি পরীক্ষার্থী মো. সনির একটি তরবারি হাতে টিকটক ভিডিও সবার নজরে আসে। ভিডিওটি সে খুন হওয়ার ২০ দিন আগে প্রকাশ করেছিল, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিও থেকে তাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ‘কিশোর গ্যাং’–এর দ্বন্দ্ব বিষয়টি সামনে আসে। হত্যাকাণ্ডের পর রাজশাহী নগরে উঠতি বয়সীদের নিয়ন্ত্রণে তৎপরতা শুরু করে বাহিনীটি।
টিকটকের জন্য ধারণ করা ভিডিওটি গত ১৪ জুন সনি তার ফেসবুক আইডিতে প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, তরবারি নিয়ে সে হেঁটে যাচ্ছে। তার পেছনে সমবয়সী আরেক কিশোর। পুলিশ বলছে, এ ভিডিওকে সনির প্রতিপক্ষ মঈন গ্রুপ নিজেদের জন্য হুমকি মনে করে।
হত্যাকাণ্ডের তিন দিন পর মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব বলেছিল, প্রধান আসামি মঈন ওরফে আন্নাফ (২০) মঈন গ্রুপের প্রধান। এই গ্রুপের সঙ্গে সনির গ্রুপের বিরোধের জেরে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মঈন গ্রুপ রাজশাহী মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালায়। এ বিরোধের জেরে মঈন গ্রুপ সনিকে টার্গেট করে শহরের বিভিন্ন জায়গায় তার ওপর হামলার পরিকল্পনা করেছিল।
পুলিশ বলছে, সনি ও মঈন গ্রুপের মধ্যে বিরোধ পুরোনো। সনি গ্রুপ গত ঈদুল ফিতরের সময় শহরের আরডিএ মার্কেটের ভেতর মঈন গ্রুপের ওপর হামলা করে। একজনকে কুপিয়ে জখম করে। তার শরীরে ১৮টি সেলাই পড়ে। এ ঘটনায় সনির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। এর আগে অন্য আরেকটি গ্রুপের সঙ্গে মারামারির ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়েছিল। এ দুটি মামলার পর কিছুদিন গা ঢাকা দিয়েছিল সনি। সম্প্রতি মঈন গ্রুপের সঙ্গে মীমাংসা হয়। সে প্রকাশ্যে চলাফেরা করতে শুরু করে। এর মধ্যে গত ১৪ জুন সনির তরবারি হাতে ওই টিকটক ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, মঈন গ্রুপ নিজেদের জন্য হুমকি মনে করে। এর ২০ দিনের মাথায় সনি খুন হয়।