03/13/2025 রাবি ক্যাম্পাসে তীব্র যানজট; চরম ভোগান্তিতে ভর্তিচ্ছুরা
রাবি প্রতিনিধি
২৭ জুলাই ২০২২ ০৬:০৮
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের 'এ' ইউনিটের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে রাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো ভর্তিযুদ্ধ। এদিকে পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও যানবাহনের চাপে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে পুরো ক্যাম্পাসে।
সোমবার (২৫ জুলাই) সকাল ৯ টা থেকে শুরু হয় কলা অনুষদভুক্ত রাবির 'এ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা। চার শিফটের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হবে বিকাল ৫ টায়। প্রবেশে বিধিনিষেধ থাকা সত্বেও ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছে অতিরিক্ত যানবাহন যার ফলে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন থেকে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে বের হওয়ার প্রধান ফটক, রাবির প্যারিস রোড, কাজলা গেইট, বিনোদপুর গেইট, জোহা চত্বর, টুকিটাকি চত্বরে এমন তীব্র যানজট দেখা দেয়। যার ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বিভিন্ন জেলা থেকে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের।
এদিকে ভর্তি পরীক্ষার আগে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ক্যাম্পাসে সুষ্ঠুভাবে চলাচলসহ ভর্তি পরীক্ষা সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এর অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসে সব ধরনের ভারী যানবাহন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, ব্যক্তিগত ও অন্যান্য যানবাহন কাজলা ও বিনোদপুর গেট দিয়ে প্রবেশ করে মেইন গেট দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া, কৃষি ও চারুকলা অনুষদে যাওয়ার ক্ষেত্রে মন্নুজান হল-বেগম খালেদা জিয়া হল-স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন-তুঁত বাগান সংলগ্ন রাস্তাটি চলাচলের জন্য ব্যবহার, দূরপাল্লা ও আন্তঃজেলার বাসগুলোর ক্ষেত্রে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক এড়িয়ে বেলপুকুর বাইপাস ও ফল গবেষণার সামনের সড়ক ব্যবহার করাসহ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
জানা গেছে, এবারের ভর্তি পরীক্ষায় কোটাসহ চার হাজার ৬৪১টি আসনের বিপরীতে এক লাখ ৭৮ হাজার ২৬৮ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। তাদের সঙ্গে গড়ে আরও দুজন করে অভিভাবক আছেন। এতে সব মিলিয়ে বাড়তি অন্তত চার লাখ মানুষ ও অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে এ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত জনবল নিয়েও রাজশাহী মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ যানজট সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে।
এ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার জন্য চাঁদপুর থেকে তার মেয়েকে নিয়ে এসেছেন মিলন মাহমুদ নামের এক অভিভাবক। তিনি বলেন, আমার মেয়ের দ্বিতীয় শিফটে পরীক্ষা ছিলো। আমাদের ২ টায় বাসের টিকিট কাটা। ওর পরীক্ষা শেষে তাড়াতাড়ি রিকশায় উঠি কিন্তু আধা ঘন্টা পার হয়ে যাওয়ার পর মহাসড়কে উঠতে পারিনি।
চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে ফাতেমা বেগম বলেন, ক্যাম্পাসে আগেও এসেছি। শহরের এক আত্মীয়ের বাসায় উঠেছি। বিনোদনপুর থেকে রিকশা যোগে যেখানে যাবো ১৫ মিনিটের জায়গা কিন্তু ৩৫ মিনিট হবে এক জায়গাতেই বসে আছি। কখন বাসায় পৌঁছাবো আল্লাহ ভালো জানে।
বরিশাল থেকে মেয়ে নিয়ে আসা আমিরুল ইসলাম বলেন, যানজটের কারণে ক্যাম্পাসে তিনগুণ ভাড়া বেশি নিচ্ছে যানবাহনগুলো। যেই বাডে ৭০০ টাকায় আসছি এখন এই বাসেই ১ হাজার টাকা কাটতে হয়েছে। ঢাবির মতো রাবির ভর্তি পরীক্ষাগুলো যদি বিভাগীয় শহরগুলোতে হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের সময় ও কষ্ট দুটোই বেঁচে যাবে।
প্রাইভেটকার সাথে আসা এক অভিভাবক বলেন, গাড়ি নিয়ে জোহা চত্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইনগেই পর্যন্ত আসতে সময় লেগেছে ৪০ মিনিট যেখানে যানজট ছাড়া ৩০ সেকেন্ড সময় লাগে।
ক্যাম্পাসের রিকশা চালক শামসুল আলম বলেন, যানজটের কারণে অনেক সময় এক জায়গায় অবস্থান করতে হয়। বাড়তি ভাড়া নেওয়া যাবে না বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে নিষেধ করেছে।
যানজট নিরসনের বিষয় জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর আসাবুল হক বলেন, ভর্তিচ্ছুদের সাথে আসা অতিরিক্ত অভিভাবক ও বিধিনিষেধ থাকার পরও অতিরিক্ত যানবাহন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করায় এমন যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। তবে যানজট নিরসনে প্রচুর ট্রাফিক মোতায়েন করা হয়েছে তারা সর্বাত্বক চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন যানজট সব সময় থাকে না যখন প্রতি শিফটে পরীক্ষা শেষ হচ্ছে এবং সবাই একযোগে বের হচ্ছে তখন যানজট বেধে যাচ্ছে।