10830

04/20/2025 হলিক্রস শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা: অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের খাতা জব্দ

হলিক্রস শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা: অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের খাতা জব্দ

রাজটাইমস ডেস্ক

২৫ আগস্ট ২০২২ ০৭:০৪

রাজধানীর হলিক্রস স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী পারপিতা ফাইহা’র বাড়ির ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যার ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রনালয়ধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর (ডিআইএ) ওই শিক্ষার্থীসহ ৫৫ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষার খাতা জব্দ করেছে।

এ ঘটনায় পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. রেহানা খাতুনকে প্রধান করে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির অন্য সদস্য হচ্ছেন শিক্ষা পরিদর্শক মো. দেলোয়ার হোসেন।

বুধবার (২৪ আগস্ট) তদন্ত কমিটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা, পারপিতার শ্রেণি শিক্ষক ও অভিযুক্ত উচ্চতর গণিতের শিক্ষক শোভন রোজারিওর এবং নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছে। তদন্ত কমিটি প্রত্যেকের বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেছে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিকেল ৫ টার দিকে স্কুল থেকে ২৯, তেজগাঁও স্টেশন রোডের নন্দন রোকেয়া অ্যাপার্টমেন্টের বাসায় ফিরে ১০ তলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। পারপিতা হলিক্রস স্কুলের নবম শ্রেণির সি শাখার শিক্ষার্থী ছিল। চলতি বছর প্রথম সাময়িক পরীক্ষায় উচ্চতর গণিতে ৩৫ জন ও দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় ৫৫ জন শিক্ষার্থী ফেল করে। পারপিতা দুই পরীক্ষায় উচ্চতর গণিতে ফেল করে। পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের পৃথকভাবে স্কুলে আসার নির্দেশ দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে, যারা উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের অভিভাবকদের ভিন্ন তারিখে স্কুলে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়। এতে উত্তীর্ণ ও অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। ফেল করার বিষয়টি পারপিতা তার বাবা মাকে বলতে পারেনি বলে তার মধ্যে হতাশা দেখা দেয়। এরপরই মঙ্গলবার বিকালে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

এদিকে, মঙ্গলবার রাতেই পারপিতার লাশ বিনা ময়নাতদন্তে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। তার লাশ নেওয়া হয় গ্রামের বাড়ি নোয়খালীর সেনবাগ উপজেলায়। বুধবার সকালে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।

অন্যদিকে, পারপিতার মা কামরুন নাহার অভিযোগ করেছেন, স্কুলে পড়াশুনার বিষয়ে শিক্ষকের অতিরিক্ত চাপের কারণে তার সন্তান আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। তার মৃত্যুর পর স্কুল থেকে জানানো হয়েছে যে পারপিতা ৩ টি বিষয়ে ফেল করেছে। তবে তার মৃত্যুর আগে তারা পারপিতার ফেল করার বিষয়টি জানতেন না।

তেজগাঁও রেল স্টেশন রোডের ২৯, নন্দন রোকেয়া ১০ তলা অ্যাপার্টমেন্টের ১০/ডি নম্বর ফ্ল্যাটে পারপিতা তারা বাবা মার সঙ্গে থাকত। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে পারপিতা ছিল বড়। ছোট ভাই একটি মাদ্রাসায় পড়ে। বাবা আব্দুল মাজেদ একজন ব্যবসায়ী।

পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের তদন্ত কমিটির একটি সূত্র জানায়, বুধবার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে যে উচ্চতর গণিতে একজন শিক্ষকের বাসায় প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করা হত। এ বছর উচ্চতর গনিতে অর্ধেক শিক্ষার্থী ফেল করার ঘটনায় তাদের মধ্যে হতাশা নেমে আসে। পারপিতার সহপাঠী সুহা মার্জিয়া বলে, ৪/৫ দিন ধরে পারপিতার কথাবার্তার মধ্যে এক ধরনের হতাশা দেখা গেছে। একবার আলাপ প্রসঙ্গে সে বলেছিল, পটাসিয়াম সায়ানাইড পেলে খেয়ে মরে যাবে।

ডিআইএ পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ্ মো. আজমতগীর গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনা ফৌজদারি আইনের বিষয়। তবে একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে প্রাইভেট না পড়ায় তাকে ফেল করানো হয়। আমরা এই বিষয়টি তদন্ত করবো। তদন্ত করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

পারপিতার শ্রেণি শিক্ষিকা রোকেয়া বেগম সাংবাদিকদের বলেন, পারপিতা কখনই ফার্স্ট গার্ল ছিল না। তার মেধার সিরিয়াল ১৯। আর পারপিতা উচ্চতর গণিতসহ ৩ টি বিষয়ে ফেল করেছে। একজন শিক্ষকের যদি আক্রোশ থাকে, তাহলে তো তিনি ৩ টি বিষয়ে পারপিতাকে ফেল করাতে পারবে না। আমাদের ধারণা করোনাকালীন দুই বছর শিক্ষার্থীদের সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণিতে সেভাবে পড়াশুনা করতে পারেনি। নবম শ্রেণিতে এসে বিজ্ঞান বিভাগের বিভিন্ন বিষয়ের সিলেবাস সব শিক্ষার্থী আয়ত্ব করতে পারছে না।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]