03/17/2025 বাগমারায় স্বাভাবিক বন্যা পরিস্থিতি, কমেনি জনদুর্ভোগ
রাজটাইমস ডেস্ক
৬ অক্টোবর ২০২০ ১৮:৩৬
টানা বর্ষণে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বন্যা পরিস্থিতি। ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি।ইতোমধ্যেই বেশ কিছু এলাকার পানি নেমে গেছে।
তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে বেশ কিছু দিন লাগবে। তবে পানি কমায় ধীরে ধীরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও কমেনি জনদুর্ভোগ।
টানা বর্ষণে উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়। বন্যায় ১৩টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভার মধ্যে ১৩ টি ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামে বন্যার পানি ঢোকে পড়ে কাঁচা বাড়িঘর ভেঙে পড়ে মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠে।
বন্যার পানি বেড়ে গেলে কবলিত এলাকার কয়েক হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়।
ভারী ও টানা বর্ষণে পানি বন্দী হয়ে পড়ে এলাকার লক্ষাধিক মানুষ।
বন্যায় ব্যাপক ফসলহানি হওয়ায় লোকসানে এলাকার চাষীরা। ৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমির ফসলহানি হয়েছে। ডুবে গেছে রাস্তা-ঘাট, পানবরজ, ফসলের জমি। ভেসে গেছে পুকুরের কোটি কোটি টাকার মাছ।
বাগমারা ও উপজেলার ফকিরনী ও বারানই নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা সৃষ্ট হয় বলে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবি)। নওগাঁর আত্রাই নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বারানই ও ফকিরনী নদীর পানি প্রবাহের ধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের খাল, বিল ভরে লোকালয়ে পানি ঢোকে পড়ে। নাটোরের সিংড়াই বেড়িবাঁধ ভাঙার কারণেই দু'দিন ধরে বাগমারায় বন্যা পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে।
বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি খাপ খাইয়ে নিতে বেগ পোহাতে হচ্ছে মানুষেদের। পরিস্থিতির উন্নতি হলেও জনদুর্ভোগ এখনো কমেনি। বন্যাদুর্গত এলাকার জনসাধারণ এখনও তাদের বসতবাড়িতে ফিরে যেতে পারেনি। কেউ কেউ বসতবাড়ি ফিরে গেলেও বসবাসের উপযোগী না হওয়ায় বাড়ির উঠানে পলিথিন টাঙ্গিয়ে বসবাস করার চেষ্টা করছে।
বসতবাড়ি বসবাসের অনুপযোগী হওয়ার পাশাপাশি দেখা দিয়েছে তীব্র পানি সংকট। বানভাসী মানুষের খাবার সংকটের পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে তারা পেটের পিড়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বানভাসী মানুষের খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।
সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে কথা হয় বাগমারা উপজেলা চেয়ারম্যান অনিল সরকারের সাথে। তিনি বলেন, পানিতে ডুবে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে রাস্তার। মাটির তৈরি অনেক ঘর বাড়ি ধসে পড়েছে। কোটি কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। পান বরজ, ধানসহ সবজি খেত ডুবে গেছে।
ঘরবাড়ি হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াদের তালিকা করে প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠানো হবে বলে ও জানান তিনি। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত ৫৫ টন চাল বরাদ্ধ হয়েছে। তবে এটা যথেষ্ট নয়। আরো প্রয়োজন।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ইতিমধ্যে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে জানান বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ। এছাড়া বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরের তালিকা তৈরি করে তাদের পুনর্বাসনের কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে ও জানানো হয়।