12691

05/14/2025 উত্তরা-আগারগাঁও অংশে মেট্রোরেল উদ্বোধন আজ

উত্তরা-আগারগাঁও অংশে মেট্রোরেল উদ্বোধন আজ

রাজটাইমস ডেস্ক

২৮ ডিসেম্বর ২০২২ ১৩:১৬

উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত নির্মাণ করা হচ্ছে দেশের প্রথম মেট্রোরেল। এজন্য ২০১২ সালে নেয়া হয়েছিল ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬ নির্মাণ প্রকল্প, যা শেষ হবে ২০২৫ সালে।

যদিও প্রাথমিকভাবে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণের কথা ছিল। পরে তা কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। খবর শেয়ার বিজ।

দেশের প্রথম এ মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশটি আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যদিও সাধারণ যাত্রীদের জন্য আগামীকাল খুলবে মেট্রোরেলের দ্বার।

আজ উদ্বোধন করা হলেও উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে সরাসরি আগারগাঁও স্টেশনে যাতায়াত করতে হবে যাত্রীদের। কারণ মাঝের স্টেশনগুলো এখনই খুলে দেয়া হচ্ছে না। এই স্টেশনগুলো আগামী মার্চে খুলে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক।

তিনি জানান, আগামী ২৬ মার্চ থেকে মেট্রোরেল সব স্টেশনে থামবে। তবে শুরুতে মেট্রোরেল রাজধানীর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে। মাঝখানে কোনো স্টেশনে থামবে না। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, অন্যান্য স্টেশনে মেট্রোরেল থামানোর জন্য তাদের সব প্রস্তুতি আছে। কিন্তু মানুষ অভ্যস্ত নয় বলে এখনই তারা থামাচ্ছেন না। এই তিন মাস মানুষকে অভ্যস্ত করা হবে।

যদিও বাস্তব চিত্র ভিন্ন কথাই বলছে। গতকাল সরেজমিন মেট্রোরেলের কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, মিরপুর-১০ স্টেশনগুলোয় ঘুরে দেখা গেছে, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া স্টেশন দুটিতে যাত্রী ওঠানামার সিঁড়ি নিয়ে জটিলতার সমাধান হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আগে থেকেই আলোচনা চলছিল। এ বিষয়ে মেট্রোরেল নির্মাণকারী কর্তৃপক্ষ আগেই জানিয়েছে, জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। তাই আপাতত ফুটপাতের রাস্তাতেই ওঠানামার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ শেষ হলে এবং উদ্বোধনের পর কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া স্টেশনে যাত্রী ওঠানামার বাকি কাজ সম্পন্ন করা হবে।

স্টেশন দুটির ভেতরের কাজের বিষয়ে জানতে চাইলেÑনাম না প্রকাশের শর্তে কর্মরত এক প্রকৌশলী বলেন, স্টেশনের কাজ শেষ হওয়ার পথে। অল্প কিছু কাজ বাকি আছে, যা কয়েকদিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। যাত্রী ওঠানামার ফুটপাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই স্টেশন দুটিতে কিছুটা সময় লাগবে। জায়গা স্বল্পতা থাকায় পুরো কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি, তবে কাজ চলছে।

মিরপুর-১০ স্টেশনের ফুটপাতের কিছু কাজ শেষ হতে কয়েকদিন সময় লাগবে বলে নাম না প্রকাশের শর্তে জানান সেখানে কর্মরত আরেক কর্মী। তিনি জানান, ফুটপাতের কাজ তো শেষ হয়েই আসছে, আর দু’একদিনের কাজ আছে। উদ্বোধনের পরপরই তা শেষ হয়ে যাবে। স্টেশনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, স্টেশনের কাজ শেষ হয়েছে। কোনো কাজ বাকি আছে বলে জানা নেই।

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী বছর ডিসেম্বরে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হবে। আর ২০২৫ সালে কমলাপুর পর্যন্ত চলবে। সে ক্ষেত্রে পুরোটা চালু হলে উত্তরা থেকে মতিঝিলে যেতে ৩৮ মিনিট লাগবে। ঘণ্টায় ৬০ হাজার অর্থাৎ দিনে ৫ লাখ যাত্রী মেট্রোরেলে চলাচল করতে পারবেন।

তথ্যমতে, উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার ৪৭১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) ঋণ দিচ্ছে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আর সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হবে ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

উত্তরা-মতিঝিল পর্যন্ত অংশের জন্য মেট্রোরেল প্রকল্পের ৮টি প্যাকেজ ছিল। এর মধ্যে ১নং প্যাকেজের আওতায় রয়েছে উত্তরায় ডিপোর ভূমি উন্নয়ন করা। জাপানের টোকিও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এটি বাস্তবায়ন করেছিল। ২নং প্যাকেজের আওতায় ডিপোর পূর্ত কাজ করা হয়। আর প্রকল্পটির ৩ ও ৪নং প্যাকেজের আওতায় উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট (উড়ালপথ) ও ৯টি স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। এ তিনটি প্যাকেজ বাস্তবায়ন করছে থাইল্যান্ডভিত্তিক ইটাল-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি। তবে ২নং প্যাকেজে ইটাল-থাইয়ের সহযোগী হিসেবে আছে চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন।

মেট্রোরেলের ৫নং প্যাকেজের আওতায় আগারগাঁও থেকে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত প্রায় ৩ দশমিক ১৯৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট এবং বিজয় সরণি, ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার এলাকায় তিনটি স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। এ অংশের কাজ যৌথভাবে করছে জাপানের টেকেন করপোরেশন ও অ্যাবে নিক্কো এবং বাংলাদেশের আবদুল মোনেম লিমিটেড। আর ৬নং প্যাকেজের আওতায় কারওয়ান বাজার থেকে মতিঝিল পর্যন্ত প্রায় ৪ দশমিক ৯২ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট নির্মাণ করা হবে। এছাড়া শাহবাগ, টিএসসি, প্রেস ক্লাব ও মতিঝিলে চারটি মেট্রো স্টেশনও নির্মাণ করা হবে। এ অংশের কাজ যৌথভাবে করছে জাপানের সুমিতোমা মিতসুই কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ও ইটাল-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি।

৭নং প্যাকেজের আওতায় মেট্রোরেলের স্টেশনগুলো ওঠানামার জন্য চলন্ত সিঁড়ি ও লিফট, প্রায় ২০ কিলোমিটার রেলওয়ে ট্র্যাক, স্বয়ংক্রিয় ভাড়া আদায় ব্যবস্থাপনা, ১৩২ কেভি বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন ও ট্রেনে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা, টেলিকমিউনেশন সিস্টেম, প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর ইত্যাদি স্থাপন করা হবে। এর কাজ করছে জাপানের মারুবিনি করপোরেশন ও ভারতের এলঅ্যান্ডটি (লারসন অ্যান্ড তুবরো)।

৮নং প্যাকেজের (সিপি-০৮) আওতায় মেট্রোরেলের জন্য রোলিং স্টক (ইঞ্জিন-কোচ) ও ডিপো ইকুইপমেন্ট সরবরাহ করেছে জাপানের কাওয়াসাকি-মিৎসুবিশি কনসোর্টিয়াম। এর মধ্যে ২৪ সেট ট্রেন এবং ডিপো ইকুইপমেন্ট ছাড়াও ট্রেন সিমুলেটর, খুচরা যন্ত্রাংশ ও সংশ্লিষ্টদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এদিকে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত নির্মাণকাজের জন্য ৯নং প্যাকেজ গ্রহণ করা হয়েছে। এ অংশের নকশা প্রণয়নের কাজ চলছে। এখনও ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]