14220

05/18/2024 বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা শিগগিরই ‘নতুন ফিলিস্তিনি’ হতে পারে

বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা শিগগিরই ‘নতুন ফিলিস্তিনি’ হতে পারে

রাজ টাইমস ডেস্ক :

৩১ মে ২০২৩ ১৫:৫০

বাংলাদেশের কক্সবাজার ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়ে 'চরম ভয়াবহ' পরিস্থিতি দেখে সংকট সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের চরম দারিদ্র্য ও মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত অলিভার ডি শাটার। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা 'নতুন ফিলিস্তিনি' হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। খবর গার্ডিয়ানের।

অলিভার ডি শাটার বলেন, কক্সবাজারের জনবহুল রোহিঙ্গা শিবিরে বসবাসরত প্রায় ১০ লাখ মানুষকে তাদের আশ্রয় দেওয়া বাংলাদেশে কাজ করার অধিকার দিতে হবে।

সম্প্রতি কক্সবাজার সফরের পর গার্ডিয়ানের সঙ্গে কথা বলার সময় ডি শুটার বলেন, পরিস্থিতি একেবারে ভয়ঙ্কর।

২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংস দমন-পীড়ন থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের বেশিরভাগই বাংলাদেশের আশ্রয়ে বসবাস করছে। ডি শাটার বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা পাঁচ বছরেরও বেশি সময় আগে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে। জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতে একটি গণহত্যার মামলাও হয়।

তবে আন্তর্জাতিক দাতারা এখন অন্য নানা স্থানে সংকটের কারণে নিজেরাও সংকটে আছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সম্প্রতি ঘোষণা করেছে, তহবিলের অভাবে তারা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাদ্য ভাতা জনপ্রতি মাত্র ৮ ডলারে নামিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে।

ডি শাটার বলেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে উচ্চ খাদ্য-মূল্যস্ফীতি নতুন করে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। এর ফলে শরণার্থীদের জন্য ক্যালোরি গ্রহণ এবং পুষ্টির গুণমান উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। শিশুদের অপুষ্টির হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার হলো, এই মানুষগুলো (রোহিঙ্গারা) পুরোপুরি মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।

জাতিসংঘের এই বিশেষ দূত আরও বলেন, রোহিঙ্গারা সম্পূর্ণ অলসতার মধ্যে দিন কাটায়। ফলে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বাড়ছে। ক্যাম্পগুলোর নিরাপত্তা খুবই সমস্যাজনক, সশস্ত্র দলগুলো মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে মাদক পাচার নিয়ন্ত্রণ করছে। যার ফলে এসব গ্রুপগুলোর মধ্যে গোলাগুলিও হয়। এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

ডি শাটার বলেন, বাংলাদেশ সরকারের এই আশঙ্কা আছে, কাজ করার অনুমতি দিলে রোহিঙ্গারা এই দেশেই বেশিদিন থাকতে উৎসাহিত হবে। সরকারি সেবার বোঝা পড়বে এবং অন্যদের জন্য চাকরির সুযোগ কমে যাবে। তবে যদি তারা কাজ করতে পারে, তারা কর দিতে পারে, তারা ছোট ব্যবসা শুরু করতে পারে, তাহলে অন্যদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হতে পারে। মানুষের জীবিকার অধিকার রয়েছে।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের নিরাপদে তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে মিয়ানমার জান্তাকে চাপ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনা করেছে। শরণার্থীদের সহায়তায় আন্তর্জাতিক তহবিলের অভাবের দিকে ইঙ্গিত করা হচ্ছে।

প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে চলতি মাসের শুরুতে একটি রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদল মিয়ানমার সফর করে। যদিও ২০২১ সালে মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রত্যাবর্তনের আশা আরও কমে গেছে।

ডি শাটার বলেন, সঠিকভাবে নিরাপদে প্রত্যাবাসনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মিয়ানমারকে জবাবদিহি করতে হবে। রোহিঙ্গা সংকটটি আন্তর্জাতিক দৃষ্টির নিচে নেমে গেছে। এদিকে আরও বেশি মনোযোগ প্রয়োজন। অন্যথায় এই লোকেরা, ১০ বছরের মধ্যে নতুন ফিলিস্তিনি হবে।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]