14406

04/21/2025 উত্তর-পূর্বাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা আসছে

উত্তর-পূর্বাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা আসছে

রাজ টাইমস ডেস্ক :

১৬ জুন ২০২৩ ১৪:০৬

মৌসুমী বায়ুর সক্রিয়তার সঙ্গে বাংলাদেশের পাশাপাশি উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। আবহাওয়ার সব পূর্বাভাস মডেল ও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, আগামী তিনদিনের মধ্যে সিলেট ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা দেখা দিতে পারে।

আজ ১৬ জুন থেকে আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত ১০ দিনে সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর ওপর ভারী বর্ষণের সতর্কতার কথা বলা হয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে প্রায় ২৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে ডুবেছে সিলেট নগরীর নিচু এলাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা। আজ ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যার আশঙ্কার প্রেক্ষাপটে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা’ শেষে জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান জানিয়েছেন, বন্যার পূর্বাভাসে আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। নগদ টাকাসহ ত্রাণসামগ্রীর ব্যবস্থা করে রেখেছে জেলা প্রশাসন। জেলা সদর ও সব উপজেলায় প্রস্তুত করা হচ্ছে আশ্রয়কেন্দ্র।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বৃষ্টিপাত ও নদ-নদীর অবস্থা নিয়ে প্রতিবেদনে বলেছে, উজানে ও দেশের অভ্যন্তরে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব প্রধান নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উজানে ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এতে এ অঞ্চলের

সুরমা,কুশিয়ারা,মনু,খোয়াই,সারিগোয়াইন, ঝালুখালি, ভোগাই-কংশ, সোমেশ্বরী, যাদুকাটাসহ সব নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়তে পারে এবং বিপদসীমা পার হয়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার কয়েকটি নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।

জুন মাসের বন্যা পূর্বাভাস সম্পর্কিত বিশেষ প্রতিবেদনে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, এ মাসে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, ধরলা, তিস্তাসহ সব প্রধান নদ-নদীর পানির সমতল অব্যাহতভাবে বাড়তে পারে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে যমুনা নদী বিপদসীমা কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, সুনামগঞ্জে ও ভারতের মেঘালয়ে অতিবৃষ্টির কারণে উজান থেকে ঢল নামছে। এতে সীমান্তবর্তী যাদুকাটা ও ধোপাজান নদী দিয়ে বিভিন্ন হাওরে ঢলের পানি প্রবেশ করছে। এ কারণে বালু-পাথর তোলার শ্রমিকেরা বিপাকে পড়েছেন।পানি বাড়া অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।

সুনামগঞ্জে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দোহা বলেন, সীমান্তবর্তী যাদুকাটা ও ধোপাজান নদী বেয়ে ঢলের পানি বিভিন্ন হাওরে প্রবেশ করছে। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে যদি ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত বৃষ্টিপাত হয়, তাহলে আমাদের এই অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।

কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলা এবং মেঘালয় পর্বতের সীমান্তবর্তী চেরাপুঞ্জিতে খুবই ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ১৪ জুন থেকে এখনও চলছে।

তিনি আবহাওয়ার বিভিন্ন পূর্বাভাস মডেল বিশ্লেষণ করে জানান, সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী স্থানের নদীগুলোতে পাহাড়ি ঢল নামা শুরু হওয়ার প্রবল আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে। আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত ১০ দিনে সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর ওপর ভারী বৃষ্টির আশঙ্কার নির্দেশ করছে আবহাওয়ার সব পূর্বাভাস মডেল।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]