04/21/2025 তীব্র তাপদাহে পুড়ছে রাজশাহী, নেমে গেছে পানির স্তর
বিশেষ প্রতিনিধি
১৬ জুন ২০২৩ ২৩:৫০
আষাঢ়েও তীব্র তাপদাহে পুড়ছে রাজশাহী। বৃষ্টির মৌসুম বর্ষাকালের প্রথম মাস আষাঢ় শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে। এখনও দেখা নেই বৃষ্টির। বরং সকাল থেকে সূর্যেও তাপদাহে তেতে উঠে রাজশাহী। প্রকৃতির এ রুক্ষতায় দিশেহারা মানুষ। এদিকে তীব্র খরায় রাজশাহীতে নেমে গেছে পানির স্তর। যার কারণে বিভিন্ন উপজেলার অধিকাংশ টিউবওয়েলে উঠছে না পানি। কয়েক দিন থেকে বিশুদ্ধ পানি নিয়ে মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ি, বৃহস্পতিবার রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন বুধবার রাজশাহীর তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল শুত্রবারও এ তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দীর্ঘ এমন টানা তাপদাহে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে মানুষ। সকাল থেকে দিনভর কাঠফাটা রোদে দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে মানুষের জীবন। প্রচন্ড গরমে তেঁতে উঠছে কলের পানি। দুপুর গড়াতেই খাঁ খাঁ করছে পথ-ঘাট। প্রকৃতি যেন তপ্ত নিঃশ্বাস ছাড়ছে। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তির ছিটেফোঁটাও নেই। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লোডশেডিং।
ওষ্ঠাগত গরমে মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিরাও হাঁসফাঁস করছে। সারাদিন দাবদাহ আর সন্ধ্যার পর ভ্যাপসা গরমে মানুষের প্রাণ এখন ওষ্ঠাগত। দিনভর তীব্র সূয্য দহরে সবুজ বৃক্ষরাজি তামাটে বর্ণ ধারণ করতে চলেছে। রাজশাহীর নগরের দক্ষিণে থাকা পদ্মাপাড় থেকে ধূলিকণাগুলো যেন আগুনের স্ফূলিঙ্গ হয়ে উড়ে এসে পড়ছে মানুষের শরীরে। তবে পরিবেশ বিজ্ঞানিরা বলছেন, আঞ্চলিক কোনো সমস্যার কারণে আবহাওয়া এমন বিরূপ হয়ে ওঠেনি। এটা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কু-প্রভাব। বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় প্রতি বছরই বাড়ছে তাপমাত্রা।
এদিকে তীব্র খরায় রাজশাহীতে নেমে গেছে পানির স্তর। যার কারণে বিভিন্ন উপজেলার অধিকাংশ টিউবওয়েলে উঠছে না পানি। কয়েক দিন থেকে বিশুদ্ধ পানি নিয়ে মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের এক তথ্য মতে, কোন কোন উপজেলার কোথাও কোথাও ৩০ থেকে ৪০ ফিট পানির স্তর নীচে নেমে গেছে। যার কারণে বিশুদ্ধ পানি পানির সমস্যা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি না হবার কারনে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তবে সরকারিভাবে বসানো সাবমার্সিবল নলকূপে তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছে না। রাজশাহীতে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলেই হলেই পানির স্তর স্বাভাবিক হবে।
এসময় আর কোন সমস্যা থাকবে না। এদিকে বাঘা উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌর এলাকার বিশুদ্ধ পানির জন্য চরম দুর্ভোগে পড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে নিচে নেমে যাচ্ছে। এ কারণে নলকূপে পানি না উঠায় মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। তথমতে, উপজেলায় গভীর নলকূপের সংখ্যা ৪৫টি ও অগভীর নলকূপ ১৪ হাজার ৪২৮টি।
আড়ানী পৌরসভার গোচর গ্রামের শিরিন সুলতানা বলেন, গত এক সপ্তাহ থেকে বাড়িতে বসানো সাধারণ মটারে পানি উঠছে না। পানি নিয়ে খুব কষ্টে আছি। উত্তর মিলিক বাঘা গ্রামের নাসির উদ্দীন বলেন, বাড়ির টিউবওয়েলে ১৭০ ফুট পাইপ বসিয়েছি। এরপরেও পানি উঠছেনা। বিদুৎ চালিত মর্টার বসানো আছে,সেখানেও পানি উঠছেনা। ফলে পানি নিয়ে খুব বেকায়দায় রয়েছি।