04/22/2025 তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপরে, হাজারো মানুষ পানিবন্দি
রাজ টাইমস ডেস্ক :
১৫ জুলাই ২০২৩ ০৩:৩০
নীলফামারীতে তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। শুক্রবার (১৪ জুলাই) সকাল ৬টার দিকে ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর সকাল ৯টায় কিছুটা কমলেও ৩২ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপরে পানিপ্রবাহ ছিল।
জানা যায়, উজানের ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। ফলে নদীবেষ্টিত ডিমলা উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ১৫টি চর গ্রামের তিন সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, গয়াবাড়ি, খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের তিস্তা নদীবেষ্টিত ১৫টি চর গ্রামের তিন সহস্রাধিক পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সন্ধ্যা ৬টায় আরও বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার এবং রাত ৯টায় ৩৭ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে। শুক্রবার সকাল ৬টায় আবারও বৃদ্ধি পেয়ে ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর পানি কিছুটা কমতে থাকলে সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সবগুলো জলকপাট (৪৪টি) খুলে রাখা হয়েছে।
ডিমলা উপজেলার খালিশাচাপানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সহিদুজ্জামান সরকার বলেন, রাতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে ইউনিয়নের ছোটখাতা ও বাইশপুকুর গ্রামের প্রায় ১ হাজার ২০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এসব পরিবার আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে।
ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, বৃহস্পতিবার সারারাত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। এতে করে ইউনিয়নের পূর্বছাতনাই, ঝাড়সিংহেশ্বর, বারবিশা ও ফ্লাটপাড়া গ্রামের প্রায় দেড় হাজার পরিবারের বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। এসব পরিবারের অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছেন।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদদৌলা বলেন, ভারি বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। শুক্রবার সকাল ৬টায় ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ব্যারাজের সব কয়টি জলকপাট (৪৪টি) খুলে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি। ইউপি চেয়ারম্যানদের পানিবন্দি মানুষের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। তিস্তার ঢলের পানিতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন। এসব ইউনিয়নের তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ করছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ আছে।