15105

09/17/2024 ইউক্রেনের পালটা হামলায় বিপাকে রাশিয়া

ইউক্রেনের পালটা হামলায় বিপাকে রাশিয়া

রাজ টাইমস ডেস্ক

১২ আগস্ট ২০২৩ ১৭:১৭

ইউক্রেনে বিরুদ্ধে রাশিয়ার অভিযান শুরুর ৭৬ সপ্তাহ আগে। তবে এখনো পর্যন্ত তেমন কোনো সুবিধা করতে পারেনি রাশিয়া। শুক্রবারও মস্কোয় ড্রোন হামলা চালিয়েছিল ইউক্রেন।

এ হামলার জেরে মস্কোর দুটি বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে হামলায় তেমন কোনো ক্ষতির চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এদিকে পালটা মোকাবিলা হিসেবে খারকিভ, জাপোরিঝিয়ায় হামলা জোরদার করেছে রুশ বাহিনী।

শুক্রবার মস্কো লক্ষ্য করে যে ড্রোন নিক্ষেপ করা হয়েছিল, সেটি ঠেকিয়ে দিয়েছে রাশিয়া। তবে সম্প্রতি এমন হামলার পরিমাণ বেড়েছে। মস্কো লক্ষ্য করে একাধিক ড্রোন হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া রাশিয়ার জাহাজেও হামলা চালিয়েছে দেশটি। খবর আলজাজিরার।

হামলার শিকার রাশিয়ার একটি জাহাজের নাম ওলেনেগোরস্কি গোর্নইয়াক। কৃষ্ণসাগরের পূর্ব উপকূলে নভোরোসিয়াক পোতাশ্রয়ের বাইরে জাহাজটিতে হামলা চালানো হয়। পোতাশ্রয়টি রাশিয়ার জন্য নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত হলেও সেখানে হামলার ঘটনা ঘটে। ইউক্রেনের এমন হামলার পর রাশিয়া বড় সংকটের মধ্যে পড়েছে বলে মনে করেন স্কটল্যান্ডের সেন্ট অ্যান্ড্রুস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ফিলিপস ওব্রিয়েন।

তার প্রশ্ন— ‘কৃষ্ণসাগর পাড়ি দেওয়া তেলবাহী এবং এ ধরনের জাহাজগুলোর সুরক্ষার জন্য রাশিয়া কি আরও যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করবে? তবে এতে ওই যুদ্ধজাহাজগুলোও (ইউক্রেনের) লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে। নাকি ইউক্রেনের উপকূলজুড়ে হামলার চেষ্টা করবে রাশিয়া? যদিও এটা রুশ বাহিনীর জন্য কতটা বিধ্বংসী, তা ইতোমধ্যে দেখেছে মস্কো।’

ওলেনেগোরস্কি গোর্নইয়াক নামের জাহাজটি তেমন একটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এবং শিগগিরই তা মেরামত করা হবে বলে জানিয়েছে রুশ সূত্রগুলো। তবে ব্রিটিশ সামরিক গোয়েন্দারা বলছেন উলটো কথা। তারা জানিয়েছেন, হামলায় জাহাজটির বড় ক্ষতি হয়েছে। একই তথ্য দিয়েছেন ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার মুখপাত্র আন্দ্রি ইউসভ।

রাশিয়ার ভূখণ্ডের কাছের বন্দরগুলোয় দেশটির সামরিক ও পণ্যবাহী জাহাজগুলোয় এ ধরনের হামলা চলতে থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ইউক্রেনের নাবিকদের কাছে দেশটির স্টেট হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভিসের পাঠানো এক বার্তায় কার্চ প্রণালি থেকে সোচি শহর পর্যন্ত কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার বন্দরগুলোকে ‘সামরিক হুমকি’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়্যারের ভাষ্যমতে, আগে স্থলে থাকা রুশ সামরিক বাহিনীকে লক্ষ্য করেই মূলত হামলা চালাচ্ছিল ইউক্রেন। তবে এখন মনে হচ্ছে, তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে রাশিয়ার নৌবাহিনীকেও যুক্ত করা হয়েছে।

আগে ইউক্রেনের হামলা বলতে গত বছর সেপ্টেম্বরে খারকিভ ও খেরসন অঞ্চলে দেশটির বাহিনীর অগ্রগতির কথা বুঝিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়্যার। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ইউক্রেন এখন রুশ ভূখণ্ডের ভেতরে হামলা চালাচ্ছে। একই সঙ্গে রুশ জলযানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রী হানা মালিয়ার জানিয়েছেন, কিছু এলাকায় দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় বাহিনী রাশিয়ার প্রতিরক্ষাব্যবস্থার প্রথম স্তর ভেঙে দিয়েছে। সেখানে ইউক্রেনীয় সেনারা রুশ বাহিনীর ভেতরের স্তরের প্রতিরক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়ছেন।

অগ্রগতির বিষয়টি আরও সুনির্দিষ্টভাবে জানিয়েছেন ইউক্রেনের সেনা কর্মকর্তা কর্নেল মিকোলা উরশালোভিচ। তিনি বলেন, মেলিতোপোলের দিকে যুদ্ধের সম্মুখসারিতে রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত যে দেড় কিলোমিটার এলাকা রয়েছে, সেখানে ৩ আগস্ট ৬৫০ মিটার পর্যন্ত এগিয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।

যুদ্ধে দক্ষিণাঞ্চলের সম্মুখসারিতে ইউক্রেনের অগ্রগতি ধীরে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর সহায়তাকারী বাহিনীগুলোর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল দিমিত্র গেরেগা। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন রাশিয়ার পুঁতে রাখা মাইন, পরিখা, ট্যাংকবিরোধী কংক্রিটের ব্যারিকেড ও কাঁটাতারের বেড়ার কথা। ১০ থেকে ৪০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। দিমিত্র গেরেগা বলেন, ইউক্রেনের আরও মাইনবিরোধী সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষিত সেনা লাগবে।

এদিকে যুদ্ধ ঘিরে আন্তর্জাতিক সমর্থন পেতে কূটনৈতিক পদক্ষেপও নিচ্ছে ইউক্রেন। আগে থেকেই দেশটি পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও অস্ট্রেলিয়াকে পাশে পেয়েছে। এরই মধ্যে ৬ আগস্ট সৌদি আরবে ৪২ দেশের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। রাশিয়াকে আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি সম্মান দেখানোর আহ্বান জানাতে ওই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। এই সম্মেলন থেকেও রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়ছে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]