03/16/2025 নেপথ্যে ভারত সরকার! দিল্লিতে বন্ধ আফগান দূতাবাস
রাজ টাইমস ডেস্ক :
১ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:৪৪
অনেক দিন আগেই আফগানিস্তান রয়েছে তালেবানের নিয়ন্ত্রণে। তবে বিভিন্ন দেশে আফগান দূতাবাসে এখনো কাজ করে চলেছেন আগের পাশ্চাত্যের সমর্থনপুষ্ট সরকারের সময়ে নিযুক্ত কর্মকর্তা ও কর্মকর্তারা।
ভারতেও এত দিন সেটাই হচ্ছিল। তবে আজ থেকে দিল্লিতে অবস্থিত আফগান দূতাবাসটি বন্ধ হয়ে গেল। দূতাবাসের কর্মীদের অভিযোগ, মোদি সরকারের থেকে সাহায্য না পাওয়ার জেরেই দূতাবাস বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে তারা।
উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পাশ্চাত্যের উপস্থিতির সময় বিগত দু'দশক ধরে আফগানিস্তানে উন্নয়মূলক কাজের সাথে যুক্ত ছিল ভারত। সেই দেশে একাধিক প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছিল দিল্লি। ওই সময়কার সরকারের সাথেও ভারতের সম্পর্ক ভালো ছিল। তবে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে আফগানিস্তানে ভারতীয় প্রকল্পগুলো নিয়ে জল্পনা ও আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। তবে ধীরে ধীরে দিল্লি পিছনের দরজা দিয়েই তালেবানের সাথে আলোচনায় বসে শুরু করেছিল।
আফগানদের জন্য সাহায্য পাঠানোও অব্যাহত রেখেছিল। এই পরিস্থিতিতে গত সরকারের নিযুক্ত আফগান কূটনীতিকরা দিল্লিতে অভিযোগ করলেন, ভারত সরকার তাদের যথেষ্ট সাহায্য করছে না। যার জেরে আজ, ১ অক্টোবর থেকে দিল্লির আফগান দূতাবাস বন্ধ করতে তারা বাধ্য হচ্ছেন।
তালেবানের সাথে কথা বললেও এখনো পুরোপুরি তাদের সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি দিল্লি। এই আবহে আগের সরকারের নিযুক্ত আফগান কূটনীতিকদেরই দিল্লির দূতাবাস চালাতে দিচ্ছিল দিল্লি। তবে সাহায্য না পাওয়ার অভিযোগে আফগানরা দূতাবাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।
এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই মর্মে তারা মৌখিক বার্তাও পাঠিয়েছিল। গত ২৫ সেপ্টেম্বরে এক বিবৃতি জারি করে আফগান দূতাবাসের তরফে জানানো হয়, আফগান নাগরিকদের স্বার্থে কাজ করতে পারছে না এই দূতাবাস। কাবুলে 'বৈধ সরকার' না থাকার কারণে আরো সমস্যা হচ্ছে। এর আগে একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, দিল্লির আফগান দূতাবাসে কর্মরত অনেক কূটনীতিক তৃতীয় কোনো দেশে চলে যাচ্ছেন।
এদিকে যে সব কূটনীতিকরা আছেন, তাদের মধ্যেও দ্বন্দ্ব রয়েছে। এদিকে আগের আশরাফ গনি সরকারের নিযুক্ত আফগান রাষ্ট্রদূত মুসা নাইমির ভিসা মে মাস থেকে নবায়ন করেনি ভারত সরকার। এই আবহে অবৈধভাবেই ভারতে আছেন তিনি। আর তাই শিগগিরই তিনি দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা কছেন।
এদিকে দিল্লিতে আফগান দূতাবাস বন্ধ হলেও মুম্বই ও হায়দরাবাদে আফগান কনসুলেটগুলো চালু থাকবে। এই নিয়ে অবশ্য আফগান দূতাবাস বিবৃতি জারি করে বলে, 'এই মিশনগুলো কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করলে তা নিয়ে আমরা অবগত নই। এই কনসুলেটগুলো নির্বাচিত বৈধ সরকারের হয়ে নয়, বরং অবৈধ শাসকদের হয়ে কাজ করছে।'
উল্লেখ্য, মুম্বই এবং হায়দরাবাদের কনসাল জোরেলদের এর আগের আশরাফ গনির সরকারই নিয়োগ করেছিল।
তবে তালেবান ক্ষমতায় আসার কয়েক মাস পরই নাকি তারা বর্তমান শাসকদের সাথে কাজ করতে শুরু করেছিলেন। এদিকে আফগান দূতাবাস বন্ধ প্রসঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো কিছু বলেনি।
এদিকে নিজেদের বিবৃতিতে আফগান দূতাবাস দাবি করে, তাদের যা সম্পত্তি রয়েছে তা ভারত সরকারের হস্তগত হবে। এদিকে বিভিন্ন রিপোর্টে উল্লেখিত 'অন্তর্দ্বন্দ্ব' নিয়েও মুখ খোলে দূতাবাস। তারা দাবি করে, এই সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। তবে তারা মেনে নেয়, দূতাবাসে কাজ করার লোকের অভাব দেখা দিয়েছে।
এদিকে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আফগান কূটনীতিকদের আবেদন, ভবিষ্যতে যেন আফগানিস্তানের 'বৈধ সরকারের' হাতেই তুলে দেয়া হয় দূতাবাসের সম্পত্তি। আর নিয়মিত যেন আফগান পতাকা উত্তোলন করা হয় সেই প্রাঙ্গনে।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস