16053

03/17/2025 শান্তিতে নোবেল পাওয়া ৫ ব্যক্তি যারা ছিলেন জেলে

শান্তিতে নোবেল পাওয়া ৫ ব্যক্তি যারা ছিলেন জেলে

রাজ টাইমস ডেস্ক :

৬ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:২৭

এ বছরের শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন ইরানের নার্গিস মোহাম্মদী। তিনি নারীদের অধিকার ও মুক্তির জন্য লড়াইয়ের স্বীকৃতিস্বরুপ নোবেল জিতেছেন। তিনি বর্তমানে দেশটির এভিন কারাগারে বন্দি।

নার্গিস ছাড়াও আরও ৪ ব্যক্তি জেলে থাকা অবস্থায় শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন।

সাংবাদিক এবং শান্তিবাদী কার্ল ভন ওসিৎস্কি যখন ১৯৩৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেছিলেন তখন তাকে একটি নাৎসি কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে বন্দী করা হয়েছিল। পুরস্কার নিতেও আসতে পারেননি তিনি কারণ তার জন্য অসলোতে ভ্রমণ ছিল নিষিদ্ধ।

পুরস্কার জেতার তিন বছর আগে তাকে অ্যাডলফ হিটলারের বিরোধীদের বিরুদ্ধে অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ছিলেন বিশ্বের প্রথম কোনো সরকারের সমালোচক যে কিনা নোবেল জিতেছেন। পরবর্তীতে ১৯৩৮ সালে বন্দি অবস্থাতেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেতা ১৯৯১ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেছিলেন। তখন তিনি গণতন্ত্রপন্থী বিরোধীদের বিরুদ্ধে দেশটির সামরিক নেতৃত্বের ক্র্যাকডাউনের অংশ হিসেবে গৃহবন্দী ছিলেন।

বন্দি থাকায় তার পরিবর্তে ১৯৯১ সালের পুরস্কার অনুষ্ঠানে তার দুই ছেলে এবং তার স্বামী প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন এবং তার পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেছিলেন। তার অনুপস্থিতিতে স্মরণ করে রাখতে মঞ্চে একটি চেয়ার খালি রাখা হয়েছিল।

জেলে থাকা চীনা ভিন্নমতাবলম্বী লিউ ২০১০ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেছিলেন। বিদ্রোহের দায়ে তিনি ১১ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। পুরস্কার ঘোষণার পর তার স্ত্রী লিউ জিয়াকে গৃহবন্দী করা হয় এবং তার তিন ভাইকে চীন ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

২০১৭ সালের জুলাই মাসে ৬১বছর বয়সে একটি চীনা হাসপাতালে লিভার ক্যান্সারে মারা যান লিউ। বন্দী অবস্থায় মারা যাওয়া দ্বিতীয় নোবেল বিজয়ী ছিলেন তিনি।

বিলিয়াতস্কিকে ২০২১ সালের জুলাই মাসে কারাবন্দী করা হয়। তিনি ২০২২ সালে রাশিয়ার মেমোরিয়াল গ্রুপ এবং ইউক্রেনের সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিজের সঙ্গে যৌথভাবে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবাধিকার অপব্যবহার নথিভুক্ত করার স্বীকৃতিস্বরুপ নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।

বেলারুশের সবচেয়ে বিশিষ্ট অধিকার গোষ্ঠীর প্রধান, ভিয়াসনা বেলারুশীয় শক্তিশালী নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর শাসনের সমালোচনাকারীর শীর্ষে ছিলেন।

তার প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তার স্ত্রী নাটালিয়া পিনচুক। মার্চ মাসে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ভিয়াসনার অন্যান্য সদস্যদেরও কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এ বছর শান্তিতে নোবেল জয়ী নার্গিস মোহাম্মদী একজন কারাবন্দী ইরানি নারী অধিকার আইনজীবী। দেশটির নেতৃস্থানীয় মানবাধিকার কর্মীদের একজন নার্গিস নারী অধিকার এবং মৃত্যুদণ্ড বাতিলের জন্য প্রচারণা চালিয়েছেন।

নার্গিসকে একজন ‘মুক্তির যোদ্ধা’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির প্রধান বেরিট রেইস-অ্যান্ডারসেন তার বক্তৃতায় বলেন, ফার্সি ভাষায় ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ শব্দগুলো ইরান সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অন্যতম স্লোগান।

তিনি আরও বলেন, ‘নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি ইরানে নারীদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং সবার জন্য মানবাধিকার ও স্বাধীনতার প্রচারের জন্য লড়াইয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ নার্গিস মোহাম্মদীকে ২০২৩ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নার্গিস বর্তমানে তেহরানের এভিন কারাগারে প্রায় ১২ বছরের কারাদণ্ডের একাধিক সাজা ভোগ করছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়ানো। তিনি ২০০৩ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী শিরিন এবাদির নেতৃত্বে একটি বেসরকারি সংস্থা ডিফেন্ডারস অব হিউম্যান রাইটস সেন্টারের উপপ্রধান।

১৯তম নারী হিসেবে ১২২ ধরে প্রচলিত নোবেল পুরস্কার জয়ের গৌরব অর্জন করেছেন নার্গিস। ফিলিপাইনের মারিয়া রেসা ২০২১ সালে রাশিয়ার দিমিত্রি মুরাতোভের সঙ্গে যৌথভাবে এই পুরষ্কার জেতার পর প্রথম নারী হিসেবেও শান্তিতে নোবেল জিতেছেন তিনি।

পুরস্কার হিসেবে তিনি ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা বা প্রায় ১০ লাখ ডলার পাবেন। আগামী ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে এ বছরের বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।

১৮৯৫ সালের এক উইলে এই পুরস্কার প্রবর্তন করেন ডিনামাইটের আবিষ্কারক এবং সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেল।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]