19433

05/09/2024 শত কোটি টাকা লোপাট, নষ্ট করা হয় গুরুত্বপূর্ণ দলিল

শত কোটি টাকা লোপাট, নষ্ট করা হয় গুরুত্বপূর্ণ দলিল

রাজটাইমস ডেস্ক:

১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:৩০

আইন মেনেই গ্রামীণ টেলিকম ভবনের সাতটি প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম সাইফুল মজিদ বলেছেন, গ্রামীণ ব্যাংকের শত কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত গ্রামীণের অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ নথি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। এসময় গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পরিচালক নূর মোহাম্মদ, গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক মোহাম্মদ জুবায়েদ, আইন উপদেষ্টা মাসুদ আক্তারসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

গত বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে ইউনূস অভিযোগ করেন, ১২ ফেব্রুয়ারি মিরপুরের চিড়িয়াখানা রোডে গ্রামীণ টেলিকম ভবনে থাকা ১৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আটটি জবরদখল করেছে গ্রামীণ ব্যাংক। এছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানে গ্রামীণ ব্যাংকের কোনো টাকা নেই। এসব প্রতিষ্ঠান তিনি ব্যবসার মুনাফা দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ড. ইউনূসের সেই অভিযোগের জবাব দিতে আজ সংবাদ সম্মেলন ডাকে গ্রামীণ ব্যাংক।

সংবাদ সম্মেলনে এ কে এম সাইফুল মজিদ বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ৫১/৫২টি। এসব প্রতিষ্ঠানের মালিক সরকার এবং ঋণদাতা জনগণ। ড. ইউনূসের কোনো ধরনের মালিকানা বা শেয়ার নেই।

তিনি বলেন, আইন মেনেই গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ ফান্ড, গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ উদ্যোগ, গ্রামীণ সামগ্রী, গ্রামীণ শক্তি- এ সাতটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও পরিচালনা পর্ষদ গঠন করেছে গ্রামীণ ব্যাংক। গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ ফান্ড- এ তিনটি কোম্পানি থেকে ড. ইউনূসের চেয়ারম্যান পদের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে।

গ্রামীণ ব্যাংক থেকে শত কোটি টাকা লোপাট
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান বলেন, ১৯৮৩ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গত বছর আমরা সাত মাস সময় নিতে গ্রামীণ ব্যাংকে একটা কম্প্রিহেনসিভ অডিট করেছি। ১৯৮৩ সাল থেকে ২০২৩ পর্যন্ত কম্প্রিহেনসিভ অডিটে অনেক কাগজপত্র, নথি খুঁজে পেয়েছি। সেসব নথিতে আমরা দেখেছি গ্রামীণ ব্যাংকের স্বার্থ অনেক ক্ষুণ্ন হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকসহ গ্রামীণের ৫১ বা ৫২টা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ বোর্ডের অনুমোদনে হয়েছে।

মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে গ্রামীণের অনেক প্রতিষ্ঠানের টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক টাকা এসব প্রতিষ্ঠান থেকে সরে গেছে। সেটা আমরা অনুসন্ধান করছি, অনেক আলামত সংগ্রহ করেছি। অনেক তথ্য সরিয়ে ফেলা হয়েছে অথবা নেই বা ধ্বংস করা হয়েছে। পূর্ণ তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত কাউকে দোষারোপ করছি না।

তিনি বলেন, গ্রামীণের অনেক প্রতিষ্ঠান হয়েছে ৯০ এর দশকে। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৯ সাল, ওই সময়ে কোনো খতিয়ান খুঁজে পাইনি। যেহেতু আমরা পাইনি, আমরা জিডি করেছি। আমরা চাই, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস যেন সেগুলো ফেরত দেন।

গ্রামীণ টেলিকম ভবনে কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার হয়নি:
আইনি বৈধতার ভিত্তিতে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ গ্রামীণ টেলিকম ভবনে থাকা তিনটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের নমিনেশন দিয়েছে জানিয়ে গ্রামীণ ব্যাংক চেয়ারম্যান বলেন, নমিনেশন গেলে আইনিমতে আগে যিনি ছিলেন তার চেয়ারম্যানশিপ শেষ হয়ে যাবে। আইনানুযায়ী ইউনূস ওইসব প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান না। গ্রামীণ টেলিকম ভবনে থাকা প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করা হয়নি। গ্রামীণ ব্যাংক ড. ইউনূসের আটটি প্রতিষ্ঠান দখল করেছে বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে, সেটি সঠিক নয়।

তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৪২তম সভায় কোম্পানি আইনের আলোকে ১৯৯৬ সালে গ্রামীণ কল্যাণ গঠিত হয়। আর্টিকেলস অব অ্যাসোসিয়েশনের ৪৮ নম্বর ধারায় বলা আছে, গ্রামীণ ব্যাংক গ্রামীণ কল্যাণের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দিতে পারবে।

গ্রামীণ ব্যাংক চেয়ারম্যানের দাবি, গ্রামীণ কল্যাণ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ৪৪৭ কোটি টাকা নিয়েছেন। গ্রামীণ টেলিকম প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েও ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ২৪ কোটি টাকা অনুদান নিয়েছেন। কিন্তু গ্রামীণ টেলিকম এ পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংককে সুদ ও লভ্যাংশ বাবদ কোনো টাকা দেয়নি।

গ্রামীণের ৫১টি প্রতিষ্ঠানে ড. ইউনূসের কোনো মালিকানা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, উনাদের কোনো শেয়ার হোল্ডিং নেই। এটা গ্রামীণের নিয়ন্ত্রণে, গ্রামীণ ব্যাংকের একটা অঙ্গ সংগঠন।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]