2044

09/19/2024 উপাচার্যের অনিয়মের জেরে রাবির আইইআর পরিচালকের পদত্যাগ

উপাচার্যের অনিয়মের জেরে রাবির আইইআর পরিচালকের পদত্যাগ

রাজটাইমস ডেস্ক

২৫ নভেম্বর ২০২০ ০০:৪৪

দায়িত্ব নেয়ার নয়মাসের মাথায় পদত্যাগ করলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন অধ্যাপক গোলাম কবীর।

মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর এই পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।

পদত্যাগের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন ‘বিধিলঙ্ঘন’ করে বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের এক শিক্ষককে পদোন্নতি দিতে চাপ সৃষ্টি করায় পদত্যাগ করেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

এর আগেও পদত্যাগ করেন প্রতিষ্ঠানটির তৎকালীন পরিচালক। দায়িত্ব নেয়ার এক বছর হবার আগেই চলতি বছর মার্চে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন আইইআরের নবম পরিচালক অধ্যাপক আবুল হাসান চৌধুরী। পরে দশম পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেন অধ্যাপক গোলাম কবীর।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই শিক্ষক জানান, নিয়োগ ও পদন্নোতিতে স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়ম নিয়ে উপাচার্য আব্দুস সোবহানের সঙ্গে বিরোধের সৃষ্টি হয় অধ্যাপক গোলাম কবীরের। এই বিরোধের জেরে আইআইআরের পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।

এই বিষয়ে সার্বিক খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দফতরের সাবেক প্রশাসক অধ্যাপক এফ এম হায়দারের স্ত্রী দীর্ঘদিন একটি সরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে গতবছর রাবি স্কুল এন্ড কলেজে নিয়োগ পান। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী আগের চাকরি থেকে ছাড়পত্র জমা দেয়া বাধ্যতামূলক হলেও তিনি তা এখনও বিশ্ববিদ্যালয়কে জমা দেননি। এদিকে, পদন্নোতির জন্য ওই শিক্ষিকা পূর্বের সার্ভিস কাউন্টের আবেদন করেন। নিয়ম বহির্ভূত হওয়ায় আবেদনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, আইইআরের আগের পরিচালক ও বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের অধ্যক্ষ নাকচ করে দেন।


সম্প্রতি উপাচার্য শিক্ষিকাকে পদোন্নতি দিতে চাপ সৃষ্টি করেন। উপাচার্য আইইআরের পরিচালক অধ্যাপক গোলাম কবীরের কাছ থেকে নথিপত্র চেয়ে পাঠান। তিনি দাবি করেন, ওই নথিতে আগের বার নাকচ হওয়া পদন্নোতির আবেদনটি থাকলেও উপাচার্যকে দেয়ার পর তা আর পাওয়া যায় নি। পরে ওই শিক্ষিকাকে নতুন করে পদোন্নতির আবেদনে অনুমোদন দিতে চাপ প্রয়োগ করা হলে অধ্যাপক গোলাম কবীর পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। মঙ্গলবার সকালে উপাচার্যকে পদত্যাগ পত্র জমা দেন। উপাচার্য পদত্যাগপত্রটি জমা নিতে অস্বীকৃতি জানালে পরে রেজিস্ট্রারকে জমা দেন।

পদত্যাগকারী পরিচালক অধ্যাপক গোলাম কবীর অভিযোগ করেন, আমার আগের পরিচালকের সময়ে ওই শিক্ষিকা আগের চাকরির ছাড়পত্র জমা না দিয়েই চাকরি পেয়ে যান। নিয়ম অনুযায়ী ওই ছাড়পত্র দেয়া বাধ্যতামূলক। ছাড়পত্র জমা না দিয়েই তিনি আগের চাকরির সার্ভিস কাউন্ট করে পদোন্নতির আবেদন করেন। তৎকালিন রেজিস্ট্রার, আইইআরের পরিচালক ও বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের প্রিন্সিপাল সেটি নাকচ করে দেন। এখন আবার ওই শিক্ষিকাকে পদোন্নতি দিতে আমাকে চাপ দেয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ম বহির্ভূত হওয়ায় আইইআরের পরিচালক পদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য সকল অতিরিক্ত দায়িত্ব থেকে আমি পদত্যাগ করেছি।

উল্লেখ্য, নানাবিধ দূনীতি ও অনিয়মে অভিযুক্ত উপাচার্য আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে এসব অনিয়মের অভিযোগ তুলে তাকে অপসারণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে ইউজিসি তাকে শুনানিতে ডাকলেও তাতে অংশ নেননি তিনি। তবে এরই মধ্যে ইউজিসি সেই তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষামন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়েছে বলে জানা যায়।

 

  • এসএইচ
প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]