208

05/09/2024 ‘ঘরের চালোত ২৫ দিন বাহে’

‘ঘরের চালোত ২৫ দিন বাহে’

রাজ টাইমস ডেস্ক

২৩ জুলাই ২০২০ ০৩:১৪

‘২৫ দিন থাকি ঘরের চালত আছি বাহে, কাঁইয়ো এ্যালাও দেইকপের (খোঁজ খবর) আসিল ন্যা। খেয়া না খেয়া কোনোমতে বাঁচি আছি। তোমরাগুইলা ছবি তুলি কি করেন বাহে। গরিবের কাঁইয়ো নাই’। কথাগুলো বলছিলেন কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভের খাষ ইউনিয়নের কালার চর এলাকার জসিম উদ্দিনের স্ত্রী চার সন্তানের জননী শাহিনুর বেগম।

প্রথম দফা বন্যার শুরুতে একমাত্র ছাপরা (কুঁড়ে) ঘরে বন্যার পানি উঠে। প্রথম দিকে সেখানেই থাকার চেষ্টা করলেও পানি বেশি হওয়ায় স্বামী, চার সন্তান, হাড়ি-পাতিল, খড়ি-চুলা, কাপর- চোপড়সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে ছাপরা ঘরটির চালে আশ্রয় নেয়।

সেখানে পলিথিনের একটি ছাউনি তৈরি করে মাথা গোজার ঠাই করেন তারা। এ ছাউনিতে রাতদিন বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে থাকতে হয় তাদের। বাড়ির নলকূপ, টয়লেট আগেই ডুবে গেছে পানিতে। ফলে পানি এবং পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য কলার ভেলায় অন্যত্র যেতে হয়। রয়েছে রান্না করারও কষ্ট। মিলছে না উপযুক্ত খাদ্য।

শাহিনুর বেগমের স্বামী জসিম উদ্দিন জানান, কাজকর্ম না থাকায় আয় নাই তার। এখন পানিবন্দি অবস্থায় দিনে খেয়ে-না খেয়ে সন্তানদের নিয়ে দিন পার করছেন তিনি। কোনও প্রকার সরকারি বা বেসরকারি সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে তার।

অপরদিকে একই ইউনিয়নের চরকাচারী পাড়ার মাজিয়া বেগম একমাস ধরে বাড়ি ছেড়ে প্রতিবেশীর উঁচু ভিটায় পলিথিনের ছাউনিতে আছেন । তার স্বামী শহিদুল ইসলাম পেশায় বর্গাচাষি। এবার বর্গা নিয়ে ৪ বিঘা কাউন বুনেছিলেন তিনি। বন্যার শুরুতে এক বিঘা কাটতে পারলেও তিন বিঘা ক্ষেতের কাউন পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে । এই বন্যায় তিন সন্তানসহ পাঁচ সদস্যের পরিবার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। কোনও রকমে এক বেলা খেয়ে দিন পার করছেন তারা।

মাজিয়া বেগম বলেন, একমাস পানিবন্দি অবস্থায় থাকার পরেও কোনও ত্রাণ সহযোগিতা পায়নি তারা।
ত্রাণ না পাওয়ার কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, এই দুই পরিবার স্থানীয় ভোটার না হওয়ায় ত্রাণ পাচ্ছে না। শাহিনুর বেগমের পরিবার কর্মের খাতিরে অন্য জেলায় অবস্থান করায় সেখানকার ভোটার হন। পরে তারা কয়েক বছর হলো এখানে বসবাস করছেন। অপরদিকে মাজিয়া বেগম নদী ভাঙনের শিকার হয়ে অন্য ইউনিয়ন থেকে বল্লভের খাষ ইউনিয়নের বাসিন্দা হন। ছবি ও তথ্য সূত্র: আর টিভি অনলাইন।

নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর আহমেদ মাছুম জানান, স্থানীয় ভোটার না হলে ত্রাণ দেয়ার ক্ষেত্রে একটু সমস্যা আছে। ত্রাণ দেয়ার মাস্টার-রোল আমাদের জেলায় জমা দিতে হয়। তবে যেহেতু তারা বন্যায় দুর্গত হয়ে পড়েছে তাদেরকে অন্য কোনও উপায়ে সহযোগিতা করা হবে।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]