21827

04/19/2025 নওগাঁয় পশুরহাটে অতিরিক্ত টোল আদায়, নীরব প্রশাসন

নওগাঁয় পশুরহাটে অতিরিক্ত টোল আদায়, নীরব প্রশাসন

রাজটাইমস ডেস্ক:

৭ জুন ২০২৪ ১৪:০০

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় পশুর হাটগুলোতে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। টোল আদায়কারীরা ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছ থেকে কারি নির্ধারিত রেটের (টাকার) চেয়ে অতিরিক্ত আদায় করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। আর রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকায় রয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। যেন দেখার কেউ নেই।

অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে হাটের ইজারাদার এবং খাস আদায়কারীরা তাদের ইচ্ছামতো হাটে টোল আদায় করছেন।

জানা গেছে, উপজেলার বৃহত্তম পশুরহাট আবাদপুকুর ও ত্রিমোহনী হাট। এ বছর আবাদপুকুর হাটটি উপজেলা প্রশাসনের আওতায় খাজনা আদায় করা হচ্ছে। আর ত্রিমোহনী হাটটি টেন্ডারের মাধ্যমে হিটলার নামে এক ইজারাদার হাটটি ইজারা নিয়েছেন। সপ্তাহে রোববার ও বুধবার দুদিন আবাদপুকুর হাট হয়। আর সপ্তাহে শনিবার ও মঙ্গলবার দুদিন বসে ত্রিমোহনী হাট। আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা (কোরবানি) ঈদ উপলক্ষে রাণীনগর উপজেলা ও আশপাশের উপজেলাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে এই দুই হাটে গরু, মহিষ, ছাগল ভেড়া বেচাকেনার জন্য আসেন হাজার হাজার ক্রেতা-বিক্রেতা।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, গরু-মহিষ থেকে ৫০০ টাকা ও ছাগল-ভেড়া থেকে ২০০ টাকা খাজনা (টোল আদায়) করা যাবে। কিন্তু আবাদপুকুর ও ত্রিমোহনী হাটের উল্টো চিত্র। টোল আদায়কারীরা গরু, মহিষের জন্য ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত টোল (খাজনা) নিচ্ছেন। আর ছাগল-ভেড়া থেকে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা পর্যন্ত টোল আদায় করছেন। আবার খাজনার টাকা নিলেও রসিদে লেখা হচ্ছে না টাকার পরিমাণ। এতে করে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা।

বুধবার আবাদপুকুর হাট থেকে গরু কিনেছেন ঘাটাগন দিঘিরপাড়ের এমদাদুল হক। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি হাট থেকে ৮২ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কিনেছি। সেই গরুর জন্য লেখনী বাবদ ১০০ টাকা ও খাজনা (ছাপ) বাবদ ৬০০ টাকা আমার কাছ থেকে নিয়েছে টোল আদায়কারীরা। কিন্তু ৭০০ টাকা নিলেও রশিদে একটি টাকাও লিখে দেননি।

ছাগল ক্রেতা মো. বছির আকন্দ জানান, কোরবানির জন্য আবাদপুকুর হাট থেকে একটি ছাগল কিনেছি। ওই ছাগলের খাজনা বাবদ আমার কাছ থেকে ৩০০ টাকা নিয়েছে।

গরু ক্রেতা একরামুল হোসেন বলেন, মঙ্গলবার ত্রিমোহনী পশুরহাট থেকে একটি লাল ষাঁড় কয়েকজন মিলে দেড় লক্ষাধিক টাকা দিয়ে কিনেছি। গরুটির খাজনার জন্য আমাদের কাছ থেকে ৭০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। এই হাটে ছাগল ক্রেতার কাছ থেকেও সরকারি নির্ধারিত রেটের চেয়ে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করা হয়েছে বলেও অভিযোগ বেশ কয়েকজন ক্রেতার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন ক্রেতা বলেন, উপজেলা প্রশাসন হাটের এসব বিষয়ে সব কিছু জানার পরেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেন না। দ্রুত ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ হাট থেকে অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধ করতে পদক্ষেপ নিলে ইজারাদার ও টোল আদায়কারীদের হাত থেকে রক্ষা পাবে ক্রেতা-বিক্রেতারা।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আবাদপুকুর হাটের টোল আদায়কারীর মধ্যে একজন হেলু মন্ডল সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হাটে অতিরিক্ত কোনো টোল আদায় করা হচ্ছে না। সরকারি রেটেই খাজনা আদায় করা হচ্ছে।

অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য ত্রিমোহনী হাটের ইজারাদার হিটলারকে গুমাধ্যমকর্মী একাধিকবার মুঠোফোনে ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাসসুম বলেন, অতিরিক্ত টোল আদায়ের বিষয়ে কোনো ক্রেতা-বিক্রেতার কাছ থেকে লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]