22200

07/04/2024 ‘দাফনের’ ৯ দিন পর ফিরলেন নিখোঁজ নারী, তাহলে লাশটি কার?

‘দাফনের’ ৯ দিন পর ফিরলেন নিখোঁজ নারী, তাহলে লাশটি কার?

রাজটাইমস ডেস্ক:

৩০ জুন ২০২৪ ১৪:২৬

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে `দাফনের’ ৯ দিন পর বাড়ি ফিরে এসেছেন নিখোঁজ এক নারী। এতে এলাকায় চাঞ্চল্যের পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে- তাহলে দাফন করা মরদেহটি কার? তার পরিচয় কী?

ফিরে আসা রোকসানা আক্তার (৩০) চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের রাজবল্লবপুর গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের মেয়ে।

স্বজনরা জানান, মে মাসের শেষ দিকে রোকসানা চট্টগ্রামের ষোলশহরে ছোট ভাই সালাহ উদ্দিনের বাসায় বেড়াতে যান। কিন্তু ১ জুন ভোরে কাউকে না জানিয়ে বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে তিনি বের হন। এরপর দীর্ঘদিন আত্মীয়-স্বজনসহ সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে রোকসানা বলেন, “আমি চট্টগ্রামে ভাইয়ের বাসা থেকে কাউকে কিছু না বলে ঢাকায় ঘুরতে চলে যাই। সেখানে গিয়ে আমি একটি চাকরি পেয়েছি। কিন্তু শরীর খারাপ থাকায় কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি।”

কাপড়-চোপড় নিয়ে যাওয়ার জন্য বাড়িতে ফিরে এসেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “কিন্তু বুধবার বাড়িতে এসে দরজা নক করলে আত্মীয়-স্বজনরা আমাকে দেখে হতবাক হয়েছেন। তখন আমি জানতে পারি, আমি নাকি মারা গেছি এবং আমার লাশও দাফন করা হয়ে গেছে। আমিতো জীবিত ফিরে আসলাম। ”

রোকসানার ভাই এবায়দুল হক বলেন, গত ১৭ জুন কোরবানি ঈদের দিন বিকালে ফেনীতে থাকা খালাতো বোন হাজেরা আক্তার ও খালাতো ভাই শাহজাহান খবর পান, ফেনী শহরের জিয়া মহিলা কলেজের সামনে ড্রেনে এক নারীর লাশ পড়ে আছে।

তারা সেখানে গিয়ে লাশের চেহারা রোকসানা আক্তারের সঙ্গে মিল দেখে এবায়দুল হককে খবর দেন। রাতেই এবায়দুল হক জিয়া মহিলা কলেজের আশ-পাশের মানুষকে বোনের ছবি দেখালে তারা ছবির সঙ্গে লাশটির মিল রয়েছে বলে জানান।

এরই মধ্যে ফেনী শহর ফাঁড়ির পুলিশ লাশটির সুরতহাল শেষে উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। পরে এবায়দুল হক আত্মীয়-স্বজনসহ ফাঁড়িতে গিয়ে লাশ উদ্ধারকারী এসআই প্রতুল দাসকে রোকসানার ছবি দেখান ও পারস্পরিক আলোচনায় তারা রোকসানার লাশ শনাক্ত করে।

পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ এবায়দুল হকের কাছে উদ্ধার হওয়া নারীর লাশ হস্তান্তর করে।

এবায়দুল হক আরও বলেন, “ছবিতে কিছুটা মিল থাকার কারণে বোনের লাশ মনে করে পুলিশ থেকে লাশটি এনে ওইদিনই বাদ আসর রাজবল্লবপুর গ্রামের মধ্যমপাড়ায় সামিশকরা দিঘির দক্ষিণ পাড়ে দাফন করা হয়।”

তবে বুধবার বিকালে রোকসানা জীবিত বাড়ি ফিরলে ফেনী মডেল থানায় গিয়ে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান এবায়দুল।

ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই প্রতুল দাস শনিবার সন্ধ্যায় বলেন, “উদ্ধার করা লাশটি বিকৃত ছিল। এবায়দুল হক ও তার স্বজনরা লাশটি রোকসানার বলে শনাক্ত করে নিয়ে যায়। এখন যেহেতু তাদের বোন সশরীরে বাড়িতে উপস্থিত হয়েছেন, তাই আমরা বিষয়টি নতুন করে তদন্ত করব।”

এদিকে হঠাৎ ‘দাফন করা’ রোকসানা সশরীরে বাড়িতে হাজিরের ঘটনা জানাজানি হলে বাড়ির উঠানে আশপাশের উৎসুক মানুষ তাকে একনজর দেখতে ভিড় জমায়।

স্থানীয় নারী-পুরুষ যখন তাকে জিজ্ঞেস করছে, রোকসানা তোমাকে দাফন করলাম, তুমি কোথায় থেকে আসলে? তখন উল্টো রোকসানাই তার ভাই এবায়দুল ও সাধারণ মানুষকে প্রশ্ন করছেন- “কে বলছে আমি মারা গেছি? আমাকে ভেবে তোমরা কোন মহিলাকে দাফন করেছ, তার পরিচয় কী? ”

এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি ত্রিনাথ সাহা শনিবার সন্ধ্যায় বলেন, “তরুণী নিখোঁজ, উদ্ধার, দাফন ও আবার ফিরে আসার বিষয়ে কেউ আমাকে অবগত করেনি। খবর নিয়ে দেখব-আসলে কী ঘটেছে।”

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]