03/14/2025 শর্টগান হাতে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করলেন চেয়ারম্যানের গাড়িচালক
রাজটাইমস ডেস্ক:
২ আগস্ট ২০২৪ ২৩:০৩
লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের গণমিছিলে ধাওয়া করে লাঠি দিয়ে শিক্ষার্থীদের পেটানোর ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুর গাড়িচালক রাসেল শর্টগান নিয়ে অন্যান্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করেন। তার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক চেয়ারম্যানের এক শুভাকাঙ্খী জানিয়েছেন, অস্ত্রটি উপজেলা চেয়ারম্যানের নামে লাইসেন্সকৃত।
শুক্রবার (২ আগস্ট) বেলা ২টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের তমিজ মার্কেট এলাকায় উপজেলা চেয়ারম্যান টিপুর বাসায় ইটপাটকেল ছুড়লে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে পিটিয়ে আহত করে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। জুমার নামাজ শেষে চক বাজার এলাকায় টিপু নেতাকর্মীদের নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঠেকাতে অবস্থান নেয়। তখন তারা শিক্ষার্থীসহ মুসল্লিদের ধাওয়া করে। ঘটনার সময় চেয়াম্যানের সরকারি গাড়িটি মসজিদের সামনেই ছিল। সেখান থেকে গাড়িটি তার বাসভবন তমিজ মার্কেট এলাকায় নিয়ে রাখা হয়। সেখানে গাড়িচালক রাসেল অস্ত্র হাতে শিক্ষার্থীদের পেছনে ধাওয়া করে।
অস্ত্র হাতে ধাওয়ার বিষয়ে জানতে গাড়িচালক রাসেলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
টিপু জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি। ২০২১ সালের ৩ অক্টোবর যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর লক্ষ্মীপুর জেলায় নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এতে যুবলীগের বিভিন্ন ইউনিটের দায়িত্বে এখনো তার অনুসারীরা রয়েছে।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু বলেন, আমরা আন্দোলনে মাঠে থাকলেও দোষ, না থাকলেও দোষ। স্থানীয় প্রশাসনের অনুরোধে আমরা মাঠে ছিলাম।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক মজুমদার বলেন, ঘটনার সময় অস্ত্রহাতে কাউকে চোখে পড়েনি। এখন ফেসবুকে দেখছি। তার নাম-পরিচয় জানা নেই। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, উপজেলা চেয়ারম্যান টিপু চক বাজার জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে নামাজ পড়তে আসেন। নামাজ শেষেই তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে বের হয়ে মুসল্লিদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ করে দ্রুত বাসায় যাওয়ার জন্য বলেন।
এ সময় তার সঙ্গে থাকা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মারমুখী ছিলেন। তারা মসজিদের সামনে থেকে বাজারের বিভিন্ন সড়কে স্লোগান দিয়ে সাধারণ মুসল্লি ও শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করেন। পরে তারা মিছিল নিয়ে তমিজ মার্কেট এলাকায় টিপুর বাসার ভেতরে অবস্থান নেয়।
এদিকে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মিছিল শেষেই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা বাজার ব্রিজ থেকে মিছিল নিয়ে বের হয়। মিছিলটি চকবাজার মসজিদের সামনে গেলেই শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া’, ‘ভুয়া’ স্লোগান শুরু করে।
উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসার সামনে গেলে মিছিল থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। এতে পুলিশের বাধা ভেঙে লাঠি নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারাও শিক্ষার্থীদের ওপর ইটপাটকেল ছুড়ে। এরমধ্যে সাত-আট শিক্ষার্থীকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। শিক্ষার্থীদের ছোড়া ইটপাটকেলে ছাত্রলীগের দুইজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।