রাজশাহীতে পুলিশ সদস্যদের জনসাধারণের মুখোখুখি দাঁড় করিয়ে উর্দ্ধতন কর্মকতাদের আত্মগোপনের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে পুলিশ লাইনসে বিক্ষোভ করেছেন পুলিশ সদস্যরা।

বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) লাইনসে এ বিক্ষোভ হয়। এ সময় পুলিশ সদস্যদের শান্ত করতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েন নগরীর বোয়ালিয়া জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) নূরে আলম সিদ্দিকী। পরে সেনাসদস্যরা তাঁকে নিরাপদে সরিয়ে নেন।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া পুলিশ সদস্যদের অভিযোগ, সরকারের পতন হচ্ছে তা আগের দিনই টের পেয়েছিলেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তখন ঊর্ধ্বতন অনেক পুলিশ কর্মকর্তা নিরাপদে চলে যান। অথচ সরকার পতনের দিনও শিক্ষার্থীদের দমন করতে সাধারণ পুলিশ সদস্যদের মাঠে নামানো হয়। এমন কি মেয়র লিটন ও আওয়ামীলীগের সাধরণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে ছাত্র জনতার উপর গুলি বর্ষণ করা। যার কারণে পুলিশকে জনরোষে পড়তে হয়। বিক্ষোভ থেকে আরএমপি কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদারের কঠোর সমালোচনা করা হয়। একই সাথে ১৩ পুলিশ হত্যার মতো ঘটনাও ঘটেছে। পুলিশের এসব হতাহতের জন্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের দায় রয়েছে বলে পুলিশ সদস্যরা মনে করেন। বিক্ষোভে পুলিশ সদস্যরা ‘দায়িত্বহীন’ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিচার দাবি করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ পুলিশ অধস্তন কর্মচারী সংগঠন যে ৯ দফা দিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেছে, তা বাস্তবায়নের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।

এদিকে বিক্ষোভের সময় পুলিশের বোয়ালিয়া জোনের ডিসি নূরে আলম সিদ্দিকী গিয়ে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে বক্তব্য দিয়ে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান। এ সময় পুলিশ সদস্যদের কেউ কেউ নূরে আলম সিদ্দিকীকে আরএমপি ‘কমিশনারের দালাল’ আখ্যা দিতে দেখা যায়। একপর্যায়ে তিনি পুলিশ সদস্যদের তোপের মুখে পড়েন। এ সময় পুলিশ লাইনসের প্রধান ফটকে দায়িত্বরত সেনাসদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন। এসময় সেনাবাহিনীর সদস্য এবং পুলিশ সদস্যদের মধ্যেও হট্টগোল হয়। ডিসিকে পুলিশ (আরএমপি) লাইনস থেকে বের করার সময় টানাহেঁচড়া শুরু হলে একজন সেনাসদস্য অস্ত্র উঁচিয়ে বলে ওঠেন, ‘এই গুলি করে দিব কিন্তু।’ তখন একজন পুলিশ সদস্য সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘দেন, গুলি করে দেন।’

পরে একজন জ্যেষ্ঠ সেনাসদস্য বিক্ষোভকারী পুলিশ সদস্যদের শান্ত করেন। এমন হট্টগোলের মাঝেই ডিসি নূরে আলম সিদ্দিকীকে পুলিশ লাইনসের প্রধান ফটক দিয়ে নিরাপদে বের করে দেন সেনাসদস্যরা।