2318

09/17/2024 বৈঠক নিষ্ফলা, অমিত শাহের প্রস্তাব খারিজ চাষিদের

বৈঠক নিষ্ফলা, অমিত শাহের প্রস্তাব খারিজ চাষিদের

রাজটাইমস ডেক্স

৯ ডিসেম্বর ২০২০ ১৪:০১

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশে আসরে নেমেছিলেন স্বয়ং অমিত শাহ। ভেবেছিলেন, কেউ পারেনি, তিনি পারবেন। আন্দোলনকারী কৃষকরা তার কথা শুনবে, তারপর সব শর্ত মেনে নিয়ে যে যার বাড়ি ফিরে যাবে না। মধ্যরাতে বৈঠক শেষে তেমন কিছু কিন্তু হলো না। কৃষকরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, দাবি একটাই, প্রত্যাহার করতে হবে কালা আইন। যা কেন্দ্রীয় সরকার করবে না। অর্থাৎ, আন্দোলন চলবে।

উপরন্তু আজ বুধবার নির্ধারিত ষষ্ঠ দফার বৈঠকে কৃষক প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। এক কথায়, আজ সরকার-কৃষক বৈঠক হচ্ছে না। বৈঠক শেষে এ কথা জানিয়ে দিয়েছেন সর্বভারতীয় কিষাণ সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা। তবে অমিত শাহ প্রতিনিধিদের কাছে আর্জি রেখেছেন, কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার সংশোধনীর যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছিলেন, তা মেনে নিন। কৃষক স্বার্থে সরকারের আরো কিছু প্রস্তাব আছে। সেগুলি লিখিতভাবে বুধবার সকাল ১১টার মধ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কৃষক নেতারা জানিয়েছেন, সরকারের সেই সব প্রস্তাব দেখে তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসবেন। তারপর পরবর্তী কর্মসূচি স্থির হবে। তবে অবস্থান থেকে ওঠার কোনো রকম সম্ভাবনা মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত দেখা যায়নি।

পরিস্থিতি যে হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে, তা বিলক্ষণ বুঝেছিল সরকার। তাই রাতে আচমকা এই বৈঠকের আয়োজন। অমিত শাহেরই বাসভবনে। কিন্তু সেখানেও চমক। বৈঠক-স্থল বদলে গেল। প্রতিনিধিরা এলেন। আর তারপরই তাদের গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো অন্যত্র। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়ির সামনে সাংবাদিক ও ওবি ভ্যানের ভিড় থেকে অনেক দূরে। কোথায়? পুসায় আইসিএআরের ইন্টারন্যাশনাল গেস্ট হাউসে। কিন্তু এত নাটকীয় তোড়জোড় বিফলেই গেল। আগের পাঁচ দফার বৈঠক নিষ্ফলা। আজ, বুধবার ষষ্ঠবারের বৈঠকও বাতিল হলো। মরিয়া সরকার এবার চাইছে লিখিত আকারে কিছু গ্যারান্টি দিয়ে যাতে বিক্ষোভ থামানো যায়।

এরই মধ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় 'পুটিং ফারমার্স ফার্স্ট' নামে ১০৬ পাতার পুস্তিকা প্রকাশ করেছে। লিখিতভাবে জানিয়েছে, নতুন আইন এলেও এমএসপি ব্যবস্থা অটুট থাকবে। এপিএমসি মান্ডি উঠবে না। কৃষকের জমিও কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। কিন্তু তাতে বরফ গলবে কি? তার নিশ্চয়তা অমিত শাহের কাছেও নেই। তাই ইতিমধ্যেই ইউপিএ আমলের কৃষি সংক্রান্ত এক অভ্যন্তরীণ রিপোর্টকে হাতিয়ার করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। তার কিছু অংশকে অস্ত্র করে কৃষিমন্ত্রক বলছে, ওখানেও তো মার্কেটিংয়ের পরিধি বাড়ানোর কথা ছিল। কৃষকরা যাতে যেখানে ইচ্ছা খাদ্যশস্য বিক্রি করতে পারে, তাতেও জোর দেয়া হয়েছিল।

তাহলে এখন এত হাঁকডাক কেন? এত কিছুর পরও অবশ্য পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না সরকার। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বলেছেন, ‘কৃষকদের একতায় চিড় ধরানোর নির্লজ্জ চেষ্টা করছেন মোদি-শাহ।’ আজ, বুধবার এই ইস্যুতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে যাচ্ছেন শারদ পাওয়ার, রাহুল গান্ধী, সীতারাম ইয়েচুরি, ডি রাজার মতো বিরোধী দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।

ইস্যুর আঁচ বাড়ছে। যেভাবে হোক তাই কৃষকদের বোঝাতে চাইছে মোদি সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘ওস্তাদের মার’ বিফলে গিয়েছে। এবার অপেক্ষা রাত পোহানোর। আর নজর? দিল্লির সীমানায়।

সূত্র : বর্তমান

 

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]