23493

04/20/2025 ডম্বুর বাঁধ অভিমুখে ছাত্রজনতার লংমার্চের ডাক

ডম্বুর বাঁধ অভিমুখে ছাত্রজনতার লংমার্চের ডাক

রাজটাইমস ডেস্ক:

৩০ আগস্ট ২০২৪ ২০:১৫

বাংলাদেশের আন্তঃসীমান্ত নদীগুলোতে ভারতের অবৈধ ও একতরফা বাঁধ ভাঙার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতীকী বাঁধ ভেঙেছে ইনকিলাব মঞ্চ। এসময় তারা আগামী শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা থেকে ডম্বুর বাঁধ অভিমুখে ছাত্রজনতার লংমার্চ ঘোষণা করে সবাইকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানায় সংগঠনটি।

শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত গণধিক্কার ও ভাঙার গান অনুষ্ঠানে লংমার্চ এর পোস্টার প্রদর্শনের মাধ্যমে এ ঘোষণা দেয় তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা নদীমাতৃক গান, প্রতিরোধমূলক গান, কবিতা আবৃত্তি করে প্রতিবাদ জানান। পরে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুলের সংগীত বাজিয়ে প্রতীকী বাঁধ ভাঙেন। এছাড়াও ‘বন্যায় মারে খরায় পোড়ায়, সীমান্তে রক্ত ঝরায়’, ‘পদ্মা তিস্তা আবরার, যুদ্ধে ডাকে বারবার’, ‘তিস্তা টিপাই ফারাক্কা, তোলরে আওয়াজ দে ধাক্কা’, ‘সোনিয়া আর গেরুয়া মোদী, গুম করেছে আমার নদী’, ‘খুনি ভারতে নদীর বাঁধ, বাংলাদেশের মরণ ফাঁদ’ ইত্যাদি স্লোগান সংবলিত ফেস্টুন প্রদর্শন করা হয়।

প্রতিরোধমূলক গান এই আন্দোলনের ভাবধারা ও উদ্দেশ্যকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে এবং এতে জাতির ঐক্য ও স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার যে অবিস্মরণীয় ঐতিহ্য রয়েছে তা পুনরুজ্জীবিত হবে বলে প্রত্যাশা আয়োজকদের।

এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজকের ইভেন্টের মূল উদ্দেশ্য হলো, ভারতের নির্মিত সব অবৈধ বাঁধ অবিলম্বে ভেঙে ফেলার দাবি তুলে ধরা এবং নদীকে তার স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো। একাদশ শতাব্দীতে বাংলাদেশে নদীর সংখ্যা ছিল প্রায় দেড় হাজার।

এখন বর্ষাকালে পানি থাকলেও শীতকালে প্রায় পুরোটাই যেন ধানক্ষেত। যেখানে বাংলার চিরাচরিত রূপ ছিল নদীময়। নদীর পানি প্রবাহের ওপরেই যে দেশের জন্ম, নদী বিপন্ন হলে সে দেশের অস্তিত্বও কতটা হুমকির সম্মুখীন হতে পারে তা বলা বাহুল্য। বাংলাদেশের নদীগুলো যেভাবে খুন হচ্ছে তার উল্লেখযোগ্য কারণ হলো ভারতের অন্যায় একতরফা আগ্রাসী তৎপরতা।

বাঁধের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে বলা হয়, উজানে ভারত গঙ্গার ওপর ফারাক্কা বাঁধ ও অন্যান্য নদীতে বাঁধের কারণে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের মতো অমূল্য সম্পদ আজ ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। বনটি বেঁচে থাকার জন্য যে পরিমাণ স্বাদু পানির প্রয়োজন, তা পাচ্ছে না। ১৯৮৬ সালে সুন্দরবনের মাটিতে লবণ ছিল ৩২ হাজার মাইক্রোমস, যা বর্তমানে প্রায় ৪০ হাজার মাইক্রোমসে দাঁড়িয়েছে।

কৃষির অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ। পানির স্তর অনেক নেমে যাওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের জি-কে সেচ প্রকল্প মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেচযন্ত্রগুলোর অনেকগুলোই বন্ধ হয়ে আছে অথবা সেগুলোর উপর তার ক্ষমতার চাইতে বেশি চাপ পড়ছে। শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশের ৩২০ কিলোমিটারের বেশি নৌপথ নৌ-চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে।

ফলশ্রুতিতে, কয়েক হাজার লোক বেকার হয়ে পড়ে, পরিবহন খরচ বেড়ে যায়। ভারত থেকে বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত নদীগুলোর ওপর তিস্তা, ফারাক্কা ও গজলডোবা বাঁধসহ আরও ১৫ থেকে ২০টি স্থায়ী অস্থায়ী কাঁচা বাঁধ কার্যকর রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আন্তর্জাতিক নদীর ব্যবহার সম্পর্কে ১৮১৫ সালে ভিয়েনা সম্মেলনে এবং ১৯২১ সালে আন্তর্জাতিক দানিয়ুব নদী কমিশন কর্তৃক প্রণীত আইনের আন্তর্জাতিক নদীর সমতার কথা তুলে ধরা হয়। একইসঙ্গে পানি সম্পদের সুষম বণ্টনের নীতি ১৯৭২ সালে স্টকহোমে অনুষ্ঠিত মানব পরিবেশ সংক্রান্ত জাতিসংঘের কনফারেন্স ঘোষণাপত্রের ৫১ অনুচ্ছেদ ও ১৯৬৬ সালে আন্তর্জাতিক আইন সমিতির হেলসিংকি সম্মেলনে গৃহীত নীতিমালার ১৫ অনুচ্ছেদ তুলে ধরা হয়।

ভারত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আইন অমান্য করেছে উল্লেখ করে বলা হয়, শক্তির জোরে একের পর এক বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ৫৪টি নদীর প্রায় সব প্রবাহ পথে বাঁধ দিয়ে বাধার সৃষ্টি করে এর বিশাল পানিপ্রবাহ কৃত্রিম খালের সাহায্যে উঁচু অঞ্চলে প্রবাহিত করে কৃষিক্ষেত্রসহ ইচ্ছেমতো সব ক্ষেত্রে পানি ব্যবহার করছে। ভারতের এসব আগ্রাসী তৎপরতা রুখে দাঁড়ানোর এখনই সময়।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]