23937

09/19/2024 আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)

আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩৪

আজ সোমবার হিজরি ১২ রবিউল আউয়াল (১৬ সেপ্টেম্বর)। পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশারী, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে মক্কার সম্ভ্রান্ত কুরাইশ গোত্রে মা আমিনার কোল আলোকিত করে পৃথিবীতে আগমন ঘটে। রিসালাতের দায়িত্ব পালন শেষে ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দের ১১ হিজরি সনের ঠিক এ তারিখেই ৬৩ বছর বয়সে তিনি দুনিয়া থেকে বিদায় নেন।

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম এবং ওফাতের পুণ্য স্মৃতিময় দিন হিসেবে মুসলিম উম্মাহর কাছে ১২ রবিউল আউয়াল অত্যন্ত পবিত্র ও মহিমান্বিত। সারাবিশ্বের ইসলাম ধর্মাবলম্বীর মতো বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান যথাযোগ্য মর্যাদায় হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও মৃত্যুর দিনটি ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) এবং সিরাতুন্নবী (সা.) নামে পালন করেন। রাসুল (সা.) এর স্মরণে নফল নামাজ আদায়সহ রোজা পালন করেন অনেক ধর্মপ্রাণ মুসুল্লি। একই সাথে দিনটিতে কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিল এবং নবীপাক (সাঃ) এর বর্ণাট্য় পারিবারিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক  দর্শন নিয়ে আলোচনার আয়োজন করা হয়।

আরব দুনিয়া যখন আইয়ামে জাহেলিয়াত বা পাপাচারের অন্ধকারে ডুবে ছিল, তখন আলোকবর্তিকা হয়ে জন্ম হয় আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর। মক্কার কুরাইশ গোত্রের সাধারণ পরিবারে তাঁর জন্ম।

আরবের সর্বত্র দেখা দিয়েছিল অরাজকতা ও বিশৃংখলা। এ সময়কে বলা হতো আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগ। তখন মানুষ হানাহানি ও কাটাকাটিতে লিপ্ত ছিল এবং মূর্তিপূজা করত। এই অন্ধকার যুগ থেকে মানবকুলের মুক্তিসহ তাদের আলোর পথ দেখাতে মহান আল্লাহতাআলা রাসুলুল্লাহকে সা: প্রেরণ করেন এই পৃথিবীতে। তিনি সত্যবাদিতা ও সততার প্রতীক হয়ে ওঠেন। শান্তি প্রতিষ্ঠার অগ্রদূত হন। ক্ষমাশীলতা, দানশীলতা ও সহিষ্ণুতায় তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষে পরিণত হন। শুধু আধ্যাত্মিক শিক্ষা নয়, মদিনায় কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন।

মহানবী সা: অতি অল্প বয়সেই আল্লাহর প্রেমে অনুরক্ত হয়ে পড়েন এবং প্রায়ই তিনি হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন। পঁচিশ বছর বয়সে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা: বিবি খাদিজা নামের এক ধর্ণাঢ্য মহিলার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মাত্র ৪০ বছর বয়সে তিনি নব্যুয়ত প্রাপ্ত হন। আল্লাহতাআলার নৈকট্য লাভ করেন। 

পবিত্র কোরআন শরীফে বর্ণিত আছে, ‘মহানবীকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবীই সৃষ্টি করতেন না’। এসব কারণে এবং তৎকালীন আরব জাহানের বাস্তবতায় এ দিনের (পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর) গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক বেশি। বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় এ দিনটি ঈদে মিলাদুন্নবী হিসেবে পালন করে থাকে।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে আজ সরকারি ছুটি। দিনটি উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

যথাযথ মর্যাদায় ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মহানবী (সা.) এর ওপর আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। এ উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন উপলক্ষ্যে দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশুসদন, বৃদ্ধ নিবাস, মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রে উন্নত খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বাদ মাগরিব বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব গেইটে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে দিবসটির অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করবেন।

অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে ওয়াজ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, সেমিনার, ইসলামি সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, আরবি খুতবা লিখন প্রতিযোগিতা, ক্বিরাত মাহফিল, হামদ-নাত, স্বরচিত কবিতা পাঠের মাহফিল, ইসলামী ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী, ইসলামী বইমেলা, বিশেষ স্মরণিকা ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সব বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫৪টি ইসলামিক মিশন ও ৮টি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]