25547

04/10/2025 হাসিনা দিল্লিতে, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক তলানিতে: এবিসি

হাসিনা দিল্লিতে, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক তলানিতে: এবিসি

রাজটাইমস ডেস্ক

২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:০৮

কয়েক দশক ধরেই দুই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। কিন্তু চলতি বছরের মাঝামাঝি থেকে সেই সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সাম্প্রতিক অবস্থা তুলে ধরে মার্কিন গণমাধ্যম এবিসি নিউজের করা এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ ছাত্র বিক্ষোভের ফলে শুরু হওয়া আন্দোলন শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ‘দেশব্যাপী আন্দোলনে’ পরিণত হয়।

ছাত্র-জনতার এই গণআন্দোলনকে 'বিশ্বের প্রথম জেন-জি বিপ্লব' হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলে দেওয়া এই আন্দোলনের ফলস্বরূপ শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান এবং এরপর থেকে তিনি দিল্লিতেই নির্বাসিত আছেন।

এর পরের মাসগুলোতে নানা ঘটনাবলীর প্রেক্ষপটে বাংলাদেশে এক ইসকন নেতাকে গ্রেপ্তার এবং ভারতে বাংলাদেশের একটি কনস্যুলেটে উগ্র হিন্দুত্ববাদী জনতার হামলার ঘটনা দুই দেশের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

এখন দক্ষিণ এশীয়ার এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে নেমেছে এবং সম্পর্কের মধ্যে ধর্মীয় উত্তেজনাও বিদ্যমান রয়েছে।

‘আয়রন লেডি’ খ্যাত শেখ হাসিনার কট্টর ও স্বৈরাচারী শাসনের অধীনে ভারত দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশকে তার অন্যান্য দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশীদের তুলনায় অনেক বেশি স্থিতিশীল অংশীদার বলে মনে করেত।

যদিও আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা সবাই সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উত্থান-পতনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। কিন্তু হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামল গত আগস্টে আকস্মিকভাবে অবসান ঘটার পর নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়।

বাংলাদেশের ১৭৪ মিলিয়ন বা ১৭ কোটি ৪০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে হিন্দুদের সংখ্যা প্রায় ১০ শতাংশ এবং তাদের অনেকেই ঐতিহাসিকভাবে হাসিনার আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছিল। শেখ হাসিনা ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর বিক্ষুব্ধ অনেকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রতীক এবং কিছু ক্ষেত্রে দলটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হিন্দুদেরও টার্গেট করেছিল।

হিন্দুদের রক্ষা করার জন্য তবুও ড. ইউনূসের সরকার যথেষ্ট কাজ করছে না বলে অভিযোগ করেছে ভারত। ভারতে নির্বাসিত থাকা হাসিনাও দাবি করেছেন, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে 'গণহত্যার' জন্য দায়ী এই সরকার।

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং গত সেপ্টেম্বরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীকে রাশিয়া-ইউক্রেন, ইসরায়েল-গাজার মধ্যে চলমান সংঘাত এবং বাংলাদেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির উল্লেখ করে অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

কিন্তু গত নভেম্বরের শেষের দিকে বাংলাদেশে এক হিন্দু সন্ন্যাসীকে (ইসকন) রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় এবং এটি ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে বড় ধরনের কূটনৈতিক উত্তেজনার সৃষ্টি করে।

চলতি বছরের অক্টোবরে এক সমাবেশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাকে অসম্মান করার অভিযোগে হিন্দু নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু তার সমর্থকদের বিশ্বাস, হিন্দুদের বিরুদ্ধে হামলার বিষয়ে সোচ্চার থাকায় তাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

যদিও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতীয় এক সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, হিন্দুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার দাবিগুলো অতিরঞ্জিত করে সামনে আনা হয়েছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাসিনা সরকারের পতনের অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশে ভারতকে নিয়ে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে।

চলতি ডিসেম্বর মাসের শুরুতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে সম্প্রতি হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার সময় উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা সেখানে ভাঙচুর চালায় এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলার পাশাপাশি অবমাননা করে।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]