অবশেষে অনুদান নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অপমানজনক মন্তব্যের জবাবে মুখ খুললেন ভারতের শীর্ষ কূটনীতিক।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে আমেরিকার অনুদান প্রসঙ্গে কথা বলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি জানান, ট্রাম্প প্রশাসনের তরফ থেকে যে তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে, তা উদ্বেগের।

ভারতে ভোটারদের বুথমুখী করতে অনুদান বাবদ আমেরিকার ২ কোটি ১০ লাখ ডলার (১৮২ কোটি রুপি) নিয়ে বিতর্ক থামতেই চাইছে না।

আমেরিকার এই অনুদান ভারতীয় সংস্থাকে সরল বিশ্বাসে কাজ করতে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এখন তা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বক্তব্য উদ্বেগজনক। এমনটাই মন্তব্য করলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

শনিবার দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সাহিত্য উৎসবে গিয়েছিলেন জয়শঙ্কর। সেখানে আমেরিকার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএইড) অনুদান প্রসঙ্গে তাকে প্রশ্ন করা হয়।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ট্রাম্পের প্রশাসনের কর্মকর্তারা কিছু তথ্য প্রকাশ করেছেন, যা অবশ্যই উদ্বেগের। আমার মনে হয়, একটি নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির জন্য কিছু মানুষ সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। একটি দেশের ক্ষমতাসীন সরকার হিসাবে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। সত্যি প্রকাশ্যে আসবেই।’

আমেরিকার অনুদান যে ভারতে আসে, তা অস্বীকার করেননি জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, দেখুন- ইউএসএইড নিয়ে আমরা কাজ করি কি না, তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। ইউএসএইড-কে ভারতে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে ওই সংস্থা এখানে কাজ করছে।

কিন্তু ওদের কাজ করতে দেওয়া হয়েছিল সরল বিশ্বাসে, ভাল কাজের জন্য। এখন কথা উঠছে, আমেরিকার অনুদান খারাপ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। যদি এই অভিযোগ সত্যি হয়, দেশের মানুষের এটা জানার অধিকার আছে যে, কারা সেই খারাপ কাজের সঙ্গে যুক্ত।

উল্লেখ্য, গত রোববার ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন আমেরিকার সরকারি দক্ষতা বিষয়ক দফতর ভারতের ১৮২ কোটি রুপির অনুদান বাতিল করে দেয়। জানা যায়, এই টাকা ভারতে আসত দেশের নির্বাচনে ভোটের হার বৃদ্ধি করার জন্য।

ট্রাম্পের বক্তব্য, তার পূর্বতন জো বাইডেন সরকার ভারতকে এই অনুদান দিত। এই অনুদানের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করছে না ট্রাম্প প্রশাসন।

পরে ট্রাম্প এই অনুদানের বিষয়ে সরাসরি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাম সামনে আনেন। তিনি বলেন, ভোটের হার বৃদ্ধির জন্য ২.১০ কোটি ডলার ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে যাচ্ছে! কিন্তু কেন আমরা এই টাকা ভারতকে দেব? আমাদেরও তো ভোটের হার বৃদ্ধি করা দরকার।

ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পরেই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি আসে।মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, সম্প্রতি মার্কিন প্রশাসনের তরফ থেকে তহবিল সম্পর্কিত কিছু তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে।

ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ হচ্ছে, যা উদ্বেগের। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে মোদি সরকার, জানান জয়সওয়াল। এবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও এ বিষয়ে মুখ খুললেন।