04/22/2025 ২০২৩ সালে কর ফাঁকি ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা : সিপিডি
রাজ টাইমস ডেস্ক
২১ এপ্রিল ২০২৫ ২০:৩৩
২০১২ সালে কর ফাঁকির এই পরিমাণ ছিল ৯৬ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত ১১ বছরে দেশে কর ফাঁকির পরিমাণ দ্বিগুণের বেশি হয়েছে।
এই বিপুল পরিমাণ কর ফাঁকি রোধ করতে পারলে বড় অংকের রাজস্ব আদায় সম্ভব হতো বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
সোমবার (২১ এপ্রিল) রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘করপোরেট ইনকাম ট্যাক্স রিফর্ম ফর গ্র্যাজুয়েটিং বাংলাদেশ : দ্য জাস্টিস পার্সপেক্টিভ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এসব তথ্য তুলে ধরেন।
ক্রিশ্চিয়ান এইড ইন বাংলাদেশ ও সিপিডির যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক মো: তামিম আহমেদ।
সিপিডির মতে, ২০২৩ সালে আনুমানিক ২ লাখ ২৬ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা কর ফাঁকি হয়েছে। এর মধ্যে করপোরেট কর ফাঁকির পরিমাণই ৫০ শতাংশ। সেই হিসাবে ২০২৩ সালে আনুমানিক ১ লাখ ১৩ হাজার ১১৮ কোটি টাকা করপোরেট কর ফাঁকি দেয়া হয়েছে।
গবেষণায় এই প্রবণতার পেছনে চারটি প্রধান কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে- ১. অতিরিক্ত করহার ২. কর প্রশাসনের দুর্বলতা ৩. আইনি কাঠামোর জটিলতা ৪. কর ব্যবস্থায় ব্যাপক দুর্নীতি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব সমস্যার কারণে সৎ করদাতারা নিরুৎসাহিত হন এবং পুরো কর ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা কমে যায়।
সিপিডির মতে, যখন কিছু করদাতা কর ফাঁকি দিয়ে পার পেয়ে যায়, তখন যারা নিয়মিত কর দেয় তাদের ওপর আর্থিক ও মনস্তাত্ত্বিক চাপ বাড়ে।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘কর ফাঁকি ছাড়াও প্রণোদনা ও কর ছাড়ের কারণে সরকার প্রতি বছর বিপুল পরিমাণে রাজস্ব হারাচ্ছে। বিনিয়োগের কথা বলে বিভিন্ন খাতভিত্তিক কর ছাড় দেয়া হচ্ছে। এগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ করা উচিত। প্রণোদনা বা কর ছাড় বিনিয়োগের ভিত্তি হতে পারে না। বাংলাদেশের প্রণোদনা কাঠামো সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক বিবেচনায় তৈরি বলে অভিযোগ করেন তিনি। তার মতে এই কাঠামো থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।’
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম আরো বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়ায় থাকা বাংলাদেশের জন্য এই পরিস্থিতি বড় চ্যালেঞ্জ। এলডিসি উত্তরণের পর বহুজাতিক কোম্পানির বিনিয়োগ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যার ফলে কর ফাঁকি ও কর পরিহারের ঝুঁকিও বাড়বে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কর ব্যবস্থার ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়ন ও নীতিগত সংস্কারের সুপারিশ করেছে সিপিডি।’
তিনি বলেন, ‘ডিজিটালাইজেশন কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা আমরা দেখতে পারছি। ব্যবসায়ী ও এনবিআরের স্বার্থে এটা করা জরুরি। অথচ এনবিআর ও ব্যবসায়ীদের এক ধরনের অনীহা রয়েছে। বাংলাদেশে যেকোনো লেনদেন একক ডিজিটাল সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। যাতে করে যেকোনো লেনদেন ট্রেস ও ট্রাক করা যায়। সেটার আলোকে দাখিলকৃত রিটার্নকে ভেরিফাই করা যায়।’
সূত্র : বাসস