28035

07/21/2025 ঢাকায় মানবাধিকার হাইকমিশন কী কাজ করবে, কেন এতো বির্তক?

ঢাকায় মানবাধিকার হাইকমিশন কী কাজ করবে, কেন এতো বির্তক?

রাজ টাইমস ডেস্ক

২০ জুলাই ২০২৫ ১১:৩৪

বাংলাদেশের অন্তর্বতীকালীন সরকারের সাথে একটি সমঝোতা স্বাক্ষরের পর ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের (এইচআরসি) একটি মিশন চালু হওয়ার বিষয়টি এখন নিশ্চিত হয়ে গেছে।

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, বাংলাদেশে জাতিসংঘের এই দপ্তর চালু হলে এখানকার মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতির জন্য তা সহায়ক হবে। খবর বিবিসি বাংলার।

বাংলাদেশের অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বলা হয়েছে, মানবাধিকারের সুরক্ষা ও বিকাশে সহায়তা করার লক্ষ্যে একটি মিশন খোলার জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের অফিস এবং বাংলাদেশ সরকার তিন বছর মেয়াদি একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে।

এর আগে বাংলাদেশে যে ওএইচসিএইচআর-এর একটি অফিস খোলার কথা হচ্ছে, এই তথ্যটি সামনে আসে গত ২৯শে জুন। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলই সেদিন এক সংবাদ সম্মেলনে এটি প্রথম জানান।

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস স্থাপনে সমঝোতা সইঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস স্থাপনে সমঝোতা সই

এরপর ঢাকায় এই কার্যালয় খোলা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানারকম দৃষ্টিভঙ্গি ও বিতর্ক রয়েছে।

সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে একটি মহল আপত্তি জানিয়ে আসছে, বিশেষ করে কয়েকটি ইসলামপন্থি দল ও সংগঠন সভা করে সরাসরি নিজেদের আপত্তির কথাও জানিয়েছে।

আবার মানবাধিকারকর্মীরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। কিন্তু কেন জাতিসংঘের এই অফিস ঘিরে কিছু দলের আপত্তি? কোনো দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের মিশন আসলে কী কাজ করে?

মানবাধিকার হাইকমিশনের কাজ কী?

জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশন (Office of the High Commissioner for Human Rights - OHCHR) এমন একটি সংস্থা যার মূল কাজ হলো বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার রক্ষা, এ সংক্রান্ত প্রচার ও বাস্তবায়নে সহায়তা করা।

এই দপ্তরটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির তথ্য সংগ্রহ করে, পর্যালোচনা করে এবং প্রতিবেদন তৈরির মাধ্যমে সবার সামনে তা তুলে ধরে।

সেসব প্রতিবেদন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিভিন্ন সম্মেলনে তুলে ধরা হয়। এর মাধ্যমে সেসব দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ধারণা করতে পারে। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অনেক সময় উন্নত দেশগুলোর সম্পর্ক, বিনিয়োগ ও অনুদানের বিষয় নির্ভর করে।

বিশেষ করে, সংঘাতপ্রবণ দেশগুলোয় ওএইচসিআর-এর এই অফিসগুলো ওইসব দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। এরপর তারা তা বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন তৈরি করে।

বিশেষ করে নির্যাতন, বৈষম্য, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ, নারী ও শিশুদের অধিকার লঙ্ঘনের মতো বিষয়গুলোতে তদন্ত ও প্রতিবেদন তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে এই অফিস।

অনেক সময় কোনো দেশে কার্যালয় না থাকলেও যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে, সেখানে বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়ে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে এই সংস্থাটি।

এছাড়াও মানবাধিকার সুরক্ষায় তারা সরকার, নাগরিক সমাজ, ভুক্তভোগী ও অন্যান্য অংশীজনের সাথে কাজ করে।

যদিও মানবাধিকার হাইকমিশনের প্রতিবেদন বা সুপারিশ কোনো দেশের জন্য পালন করা বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু অনেক সময় এসব প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে জাতিসংঘ ও উন্নত দেশগুলোর নীতিনির্ধারণে ভূমিকা রাখে।

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘মিশনটির লক্ষ্য হচ্ছে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিক সংগঠনগুলোকে প্রশিক্ষণ এবং কারিগরি সহায়তা প্রদান। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে সক্ষমতা বৃদ্ধি, আইনি সহায়তা ও প্রাতিষ্ঠানিক শক্তিশালীকরণের বাংলাদেশকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক তার মানবাধিকার সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা পূরণে সহায়তা করা।’

‘ওএইচসিএইচআর মিশন মানবাধিকারের যেকোনো গুরুতর লঙ্ঘনের প্রতিরোধ ও প্রতিকার, বিগত সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর মনোনিবেশ করবে’– বলা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

যেসব দেশে মানবাধিকার হাইকমিশনের অফিস রয়েছে

ওএইচসিআর-এর সদর দপ্তর হলো সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ওএইচসিআর-এর একটি নৈতিক-নীতিনির্ধারণী অফিস রয়েছে।

সংস্থাটির ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশের মাঝে তাদের অফিস রয়েছে মাত্র ১৬টি দেশে।

এই অফিসগুলো ওই দেশগুলো নিয়েই সংশ্লিষ্ট অফিসে বসে কাজ করে।

এই দেশগুলোর মাঝে রয়েছে– বুরকিনা ফাসো, কম্বোডিয়া, চাড, কলম্বিয়া, গুয়াতেমালা, গিনি, হুন্ডুরাস, লাইবেরিয়া, মৌরিতানিয়া, মেক্সিকো, নাইজার, ফিলিস্তিন, সিরিয়া (লেবাননের বৈরুত থেকে পরিচালিত), সুদান, টিউনিশিয়া ও ইয়েমেন।

এছাড়া তাদের আরও দুটো অফিস রয়েছে। একটি দক্ষিণ কোরিয়ায়, অন্যটি ইউক্রেনে।

এই অফিসগুলোর বেশিরভাগই আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকায় যেখানে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই উদ্বেগ রয়েছে। বাকিগুলোর প্রায় সবই এশিয়া, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে।

এর বাইরে জাতিসংঘের নয়টি দেশে বর্তমানে শান্তিরক্ষা মিশন চলছে, এসব দেশে ওএইচসিআর-এর মানবাধিকার বিষয়ক আলাদা বিভাগ বা ইউনিট আছে।

দেশগুলো হলো–আফগানিস্তান, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, হাইতি, ইরাক, কসোভো, লিবিয়া, সোমালিয়া ও দক্ষিণ সুদান। এই দেশগুলো আফ্রিকা, এশিয়া, ইউরোপ ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে বিস্তৃত।

এগুলোর বাইরেও বিশ্বব্যাপী ১৩টি আঞ্চলিক অফিস রয়েছে ওএইচসিআর-এর। এর মাঝে ১১টি হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ অফিস, বাকি দুটি হলো হলো বিশেষ কেন্দ্র।

আঞ্চলিক অফিসগুলো অবস্থান করছে পূর্ব, দক্ষিণ, পশ্চিম আফ্রিকায়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায়, মধ্য এশিয়ায়, ইউরোপে, মধ্য আমেরিকায়, দক্ষিণ আমেরিকায় এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে। বাকি দুই বিশেষ কেন্দ্র মধ্য আফ্রিকা এবং কাতারে অবস্থিত। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক কার্যালয়টি থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অবস্থিত।

এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ওএইচসিআর-এর কার্যালয় থাকলেও শুধু দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এই অঞ্চলের কোনো দেশে সংস্থাটির কোনো কার্যালয় নেই। এমনকি আঞ্চলিক দপ্তরও নেই।

তবে সংস্থাটির ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সাল পর্যন্ত সংস্থাটি বিশ্বের ৪৩টি দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এর মাঝে বাংলাদেশের নামও রয়েছে।

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় যে হত্যাকাণ্ড হয়েছিলো, তা নিয়ে প্রতিবেদন তৈরির জন্য ওই বছরের সেপ্টেম্বরে হাইকমিশনের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে এসেছিলেন।

কিছু রাজনৈতিক দলের আপত্তি

জাতিসংঘের এই সংস্থাটি মূলত স্থানীয়ভাবে লিঙ্গভিত্তিক অধিকার, আবাসন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা, বৈষম্য নিরসন, স্বাস্থ্যসেবা, এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করে।

তবে যেসব দেশে ওএইচসিআর কাজ করছে, সেগুলোর কিছু কিছু দেশে জাতিগত সংঘাত বা যুদ্ধাবস্থা বিরাজমান। উদাহরণস্বরূপ, মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশ।

শনিবার প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে সমঝোতা স্মারকের খবরটি শেয়ার করা হলে সেখানে মন্তব্য করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা সারজিস আলম।

তিনি লেখেন, যেই কমিশন মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস হতে দিয়েছে, মুসলমানদের টার্গেট করে জঙ্গি ট্যাগ দিয়েছে, পশ্চিমাদের সাম্রাজ্যবাদী উদ্দেশ্যকে সার্ভ করেছে, যে কমিশন পুরো পৃথিবী কিংবা মানবতার না হয়ে কয়েকটি দেশ, গুটিকয়েক ব্যক্তি কিংবা কিছু গোষ্ঠীর দালাল হিসেবে কাজ করেছে, সেই তথাকথিত মানবাধিকার কমিশন দিয়ে আমরা কী করবো?

এদিকে ঢাকায় মানবাধিকার কমিশনের অফিস চালু নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছে বাংলাদেশের ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো।

শনিবার সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ জানিয়েছে, ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার কমিশনের অফিস খুলতে দেওয়া হবে না।’

অবিলম্বে চুক্তি বাতিল না করলে ‘কঠোর কর্মসূচি’ ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেয় তারা।

এই সংগঠনটি বলছে, এর আগেও বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংস্থা বাংলাদেশের মুসলিম পারিবারিক আইন, ইসলামি শরিয়া ও ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেছে। নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনেও একই চিত্র দেখা গেছে। এছাড়া সমকামী তথা এলজিবিটি ইস্যুটি জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের মানবাধিকার দর্শন ও নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত।

এদিকে মানবাধিকার কমিশনের অফিস খোলা সংক্রান্ত চুক্তি বাতিলের দাবিতে শুক্রবার বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে ইসলামী আন্দোলন ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি ইমতিয়াজ আলম শুক্রবার একটি সমাবেশে মানবাধিকার দপ্তর স্থাপন প্রসঙ্গে বলেন, ফিলিস্তিন, আফগানিস্তানসহ দেশে দেশে মুসলিম নির্যাতনে কী ভূমিকা পালন করেছে? এখন এ দেশে মানবাধিকার দেখাতে চায়?

ওই সমাবেশে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, যে কোনো মূল্যে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন থেকে সরকারকে সরে আসতে বাধ্য করা হবে।

তবে শনিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন পক্ষের আপত্তির বিষয়টি তুলে ধরে বলা হয়েছে, আমরা স্বীকার করি জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলির আদর্শিক অবস্থান নিয়ে সমাজের একটি অংশের উদ্বেগ রয়েছে। বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থা একটি শক্তিশালী সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। অনেক নাগরিক আমাদের জানিয়েছেন যেকোনো আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে এই মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত।

‘এ প্রেক্ষিতে, ওএইচসিএইচআর মিশন মানবাধিকারের যেকোনো গুরুতর লঙ্ঘনের প্রতিরোধ ও প্রতিকার, বিগত সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর মনোনিবেশ করবে। এটি দেশের প্রতিষ্ঠিত আইনি, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কাঠামোর বাইরে থাকা কোনো সামাজিক এজেন্ডাকে উৎসাহিত করবে না।’

এই অফিস হলে বাংলাদেশের কী লাভ হবে?

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন সময় জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা উদ্বেগ জানিয়ে আসছে।

বিশেষ করে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুম, বিচারবর্হিভূত হত্যা, বেআইনি আটক, গ্রেফতার-হয়রানির বহু অভিযোগ ছিল।

সমঝোতা স্বাক্ষরের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বলা হয়েছে, ‘বিগত সরকারের সময় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গণহত্যার দায়মুক্তির যে সমস্ত ঘটনা ঘটেছে সে সময় যদি এই ধরনের একটি সংস্থার কার্যক্রম চলমান থাকত, তাহলে সেই অপরাধের অনেকগুলো ঘটনা হয়ত সঠিকভাবে তদন্ত, লিপিবদ্ধ এবং বিচার করা হত,’ বলা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন বিবিসি বাংলাকে এ বিষয়ে বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের অফিস বাংলাদেশে থাকলে এসব ঘটনার তদন্ত করাটা সহজ হবে।

গত ১৬ই জুলাই গোপালগঞ্জে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের কথাও তিনি উল্লেখ করেন।

‘সেদিন সেখানে পাঁচ জনকে মেরে ফেলা হয়েছে। গতবছর যা যা ঘটলো, এগুলোর তদন্ত করতে গেলে মানবাধিকারের অফিস এখানে থাকলে সুবিধা হবে,’ বলেন তিনি।

ইসলামপন্থি দল ও সংগঠনগুলো ঢাকায় ওএইচসিআর-এর অফিস চালু না করার পক্ষে যেসব যুক্তি দেখাচ্ছে, সেগুলোর সাথে দ্বিমত পোষণ করেন এই আইনজীবী।

উনাদের (ইসলামপন্থি দল ও সংগঠন) কিছু তথ্য সংগ্রহ করা উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কার্যক্রমের সাথে বিশ্বের সব দেশ জড়িয়ে আছে। এই কাউন্সিলে বাংলাদেশসহ অনেক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ অংশগ্রহণ করে।’

নারী অধিকার থেকে শুরু করে শিশু অধিকারের মতো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নানান বিষয়ে ওএইচসিআর কাজ করে জানিয়ে উদাহরণ হিসেবে বলেন, ‘যারা আপত্তি জানাচ্ছে, তারা নিশ্চয়ই স্বীকার করবে–– বাংলাদেশে শিশু অধিকার পরিপূর্ণভাবে সংরক্ষিত না।’

‘শিশুরা যৌন হয়রানিসহ নানাকিছুর শিকার হচ্ছে। শিশু অধিকার সনদ আরও কার্যকরভাবে বাংলাদেশে প্রয়োগ করা যায়। সেখানে যদি জাতিসংঘ ভূমিকা রাখতে পারে, সেখানে সমস্যাটা কী? এটা প্রত্যাখ্যান করার তো কারণ নেই। এটিকে স্বাগত জানানো উচিত।’

অন্তর্বর্তী সরকারের গুম কমিশনের সদস্য এবং মানবাধিকার কর্মী নূর খানও সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক মনে করেন।

তবে সমঝোতা স্মারকে এই মিশনের সদস্যদের দায়মুক্তি দেওয়া হবে বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]