2913

09/08/2024 আইনে হত্যার দণ্ডের ফারাক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি

আইনে হত্যার দণ্ডের ফারাক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি

রাজটাইমস ডেস্ক

১৪ জানুয়ারী ২০২১ ০৩:১৫

দেশে বিদ্যমান আইন সমূহে হত্যা মামলার ধারা সমূহে দণ্ডের মেয়াদ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, স্যার, হত্যা মামলায় আসামির বয়স ১৮ বছর হলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের কথা আইনে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু একই অপরাধে কারো বয়স ১৭ বছর ১১ মাস হলে শিশু আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের কথা বলা হয়েছে। হত্যার মত জঘন্য অপরাধে আইনে দণ্ডের এত বড় ফারাক কেন? কিশোর অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় আমি মনে করি এটা নিয়ে এখন নতুন করে চিন্তাভাবনার সুযোগ এসেছে।

বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) ‘শফিকুল ইসলাম বনাম রাষ্ট্র’ মামলায় এই প্রশ্ন উত্থাপন করেন আপিল বিভাগের কনিষ্ঠ এই বিচারপতি।

মামলাসূত্রে জানা যায়, শিশু হত্যা মামলায় প্রায় ২০ বছর ধরে জেলে আছেন শফিকুল। যশোরের শার্শা থানার ঐ হত্যা মামলায় নিম্ন আদালত তাকেসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেয়। হাইকোর্ট ঐ সাজা বহাল রাখে। সাজার এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন ঐ আসামি।

আপিলের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত দেবনাথ বলেন, মামলার নথিতে দেখা যাচ্ছে এই আসামি জেলে আছেন। নিম্ন ও উচ্চ আদালতে সাজা হওয়ার পর তিনি জামিন পেয়েছেন কি না এ ধরনের কোন তথ্য এখানে নাই। সেলুন ব্যবসাকে কেন্দ্র করে ঐ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। অপরাধ সংঘটনের সময় তার বয়স ছিলো ১৬ বছর।

এ পর্যায়ে নথি পর্যালোচনা করে প্রধান বিচারপতি বলেন, এই আসামির বয়সের উপর হাইকোর্ট ও নিম্ন আদালতের কোন পর্যায়ে শুনানি হয়নি। মনে হচ্ছে আসামি খুবই দরিদ্র। দরিদ্র হলে যত বিপদ। অর্থনৈতিক কারণে এরা ভালো আইনজীবী রাখার সুযোগ পান না।

এ পর্যায়ে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, আসামির বয়স ১৬ বছর। আর ভিকটিমের বয়স ১৫ বছর। দুজনের বয়স কাছাকাছি। আসামি শফিকুল যদি শিশু হয়ে থাকেন তাহলে তো বিচারে বড় ধরনের মিসটেক (ভুল) হয়ে গেছে। কোন আদালতেই (হাইকোর্ট ও নিম্ন আদালত) এই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হলো না।

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, এটা তো বড় ধরনের ভুল! হয়ত চার্জশিটের উপর নির্ভর করেছে। বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান বলেন, আত্মপক্ষ সমর্থনের সময় তো আসামিকে বয়স উল্লেখ করতে হয়। সেখানেও তো বয়সের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

ডিএজি বিশ্বজিত দেবনাথ বলেন, আপিল শুনে আপনারা একটা সিদ্ধান্ত দিয়ে দিন। প্রধান বিচারপতি বলেন, এ পর্যায়ে রেকর্ডের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নাই। আগে অভিযোগ গঠনের সময় আসামির বয়স ধরা হত। এখন আইনে অপরাধ সংঘটনের সময় আসামির বয়স কত সেটা গণনা করা হয়। এ পর্যায়ে আপিল বিভাগের বিচারপতিরা শিশু আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো পর্যালোচনা করেন।

পরবর্তীতে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন বিচারপতির বেঞ্চ আপিল মঞ্জুর করে আসামি শফিকুল কারাগারে থাকলে তাকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত, রওশন আলী নামে এক কিশোরকে হত্যার অভিযোগে তার বাবা শাহজাহান মিয়া যশোরের শার্শা থানায় ১৯৯৬ সালে মামলা দায়ের করেন। ঐ মামলায় ২০০২ সালে আসামি শফিকুল, খালেক ও নাসিরকে যাবজ্জীবন সাজা দেয় যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত। পরে তা বহাল রাখে হাইকোর্ট।

  • এসএইচ
প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]