5386

03/29/2024 স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরতে চান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরতে চান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ জুন ২০২১ ১৪:৪২

বিশ্বব্যাপি করোনার যে সংক্রমণ চলছে তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে ব্যাপকভাবে। বিঘ্নিত হয়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। থমকে গেছে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের কর্মচঞ্চলতা। বন্ধ হয়েগেছে বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান। সংক্রমণের কারণে প্রায় পনের মাসে বিভিন্ন পতিষ্ঠান বন্ধ হলেও খুলেছে পুনরায়, কিন্তু গতবছর ১৭ মার্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার পর খুলেনি একটিবারের জন্যও। সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কয়েক দফা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত খুলা সম্ভব হয়নি। দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে ছুটি । এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা। এদিকে করোনার সংক্রমণও বেড়েছে অশংকাজনক হারে। একদিকে করোনার প্রকোপ অন্যদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার ফলে সৃষ্টি হচ্ছে নানা সংকট। এমন পরিস্থিতিতেও ক্লাসে ফিরতে মরিয়া শিক্ষার্থী-শিক্ষক এমনকি অভিভাবকও চাইছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হোক।


শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড বলা হলেও সে মেরুদন্ড আজা বাঁকা হওয়ার পথে। দীর্ঘদিন স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষার্থীদের পড়তে হয়েছে বিপাকে। শিক্ষগণও নেই স্বস্তিতে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অভিভাবকরাও শিকার হচ্ছেন নানা সমস্যার, হিমশিম খাচ্ছেন সন্তানদের সামলাতে। একধরণের হতাশা পেয়ে বসেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। বিশেষ করে শিশু শিক্ষার্থীরা হয়ে পড়েছেন ঘরবন্দি। অর্থনীতিতেও পড়েছে এর মন্দ প্রভাব। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘিরে গড়ে ওঠা ছোচ ছোট দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে ফলে ব্যববসায়িরা হয়ে পড়েছেন বেকার, বন্ধ হয়েগেছে ছাত্রাবাসগুলোও।


এমন পরিস্থিতিতেও শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মরিয়া স্কুলে ফেরার জন্য। চিরচেনা প্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অঙিনা স্পর্শ করার জন্য হাপিয়ে উঠেছেন তারা। ক্লাস করার জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দেশব্যাপি গড়ে তুলেছেন অন্দোলন। বিভিন্ন ব্যানারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে সোচ্চার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। দেশের বিভন্ন শহরে শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে রাজপথে করেছেন প্রতিকি ক্লাস ও পরীক্ষার আয়োজন। তবে স্কুল খুলে দেয়ার চাইতে শিক্ষার্থীদের সংক্রামণ থেকে রক্ষা পাওয়াকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।


মহামারিতে শিক্ষার্থী অক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির বিষয়টি অমলে নিলেও বিশেষ ব্যবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কথায় বললেন দেশসেরা কলেজ, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মুহাঃ অব্দুল খালেক, তিনি বলেন, মহামারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠন বন্ধ থাকার শিক্ষক শিক্ষার্থীরা পড়েছেন নানা সমস্যায়। শিক্ষক-শিক্ষার্থী মানুষিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, অনলাইনে ক্লাস দুধের সাধ ঘোলে মিটানোর একটা চেষ্টা মাত্র। অনেক ছেলেদের শিক্ষা জীবন ঝরে যাচ্ছে, মেয়েদের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে ফলে শিক্ষা জীবন সংকটে। তিনি বলেন পাইলোটিং করে হলেও কলেজ খুলে দেয়ার দিকে যেতে হবে। দীর্ঘদিন এভাবে চলা যায়না, ভাবতে হবে কিভাবে এ সংকটের মধ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা করে খুলে দেয়া যায়। । নির্দেশনা পেলে দুদিনের নোটিশে প্রতিষ্ঠনে ক্লাসের ব্যবস্থা করতে সক্ষম বলে জানান তিনি ।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের খারাপ প্রভাব পড়ছে শিক্ষার্থীদের মনে বলে মনে করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. এনামুল হক। তিনি রাজটাইমসকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন করোনাকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মানসিক ক্ষতিটা অপূরণীয়। শিক্ষা থেকে দীর্ঘ মেয়াদী বিচ্ছিন্ন থাকায় তাদের পড়াশুনার গতি হারিয়ে গেছে, নতুন করে এই ছন্দ ফিরে পেতে সময় লাগবে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও বন্ধুদের সাথে একটা যোগাযোগ ছিল। কিন্তু তারা এটা থেকে বিচ্ছিন্ন। এই বিচ্ছিন্নতা তাদের বিষাদগ্রস্ততায় নিয়ে যাচ্ছে। তারা শুধু পরিবারের সদস্যের সাথেই নিজের মনোভাব প্রকাশ করতে পারছে এক্ষেত্রে তাদের মনোভাবের সঠিক প্রকাশ হচ্ছে না। সর্বক্ষেত্রে বিধি-নিষেধে তাদের মাঝে নিরানন্দ এবং একগুয়েমিতা কাজ করছে। তাছাড়া তাদের চোখে ভবিষৎ জীবন অন্ধকার দেখছে ফলে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে তারা। শিক্ষার্থীদের আচার-আচরণে এর প্রভাব পড়ছে। তাদের মানসিক প্রভাব প্রভাবিত হচ্ছে শারীরিকভাবে। যেমন অনেকের লিখতে গেলে হাত কাঁপছে, জড়তা কাজ করছে। আবার অনেক শিক্ষার্থী অপরাধ প্রবণ হয়ে হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে তারা সাইবার অপরাধের দিকে ঝুঁকে পড়ছে।


আমার পরামর্শ থাকবে, তাদের নির্দিষ্ট কিছু সময় অভিভাবকরা যেন বিনোদনের ব্যবস্থা করে। যেমন ঘুরতে যাওয়া বা বাসায় কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা এবং তাদের সাথে সময় দেয়া। তাছাড়া নিয়মিত শারীরিক চর্চাও যেন অব্যাহত রাখে।
কয়েকদিন আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হল খুলে দেয়ার দাবিতে ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকগণ। এ সমাবেশে শিক্ষার্থীদের সাথে প্রায় ৫০জন শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন, সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রফেসর ড. অসিফ নজরুল বলেন, সরকারের শাসন কার্যে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে শিক্ষার্থীরা সামান্য এ ভয়ে সরকার প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে। তিনি আলো বলেন,যৌবন হচ্ছে সৃষ্ঠির সময় বিদ্রোহের সময় জীবন গড়ার সময় এ সময় দেশের কোটি কোটি তরুনকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে মহামারির কারণ দেখিয়ে। অবিলম্বে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি করেন তিনি।


এদিকে রাজশাহীতে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে প্রতিকী ক্লাস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে, ক্লাস নেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের প্রফেসর ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে এটি আমাদের অহিংস আন্দোলন।

এদিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রংপুরেও প্রতীকি পরীক্ষা নিয়েছেন গণযোগাগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহামুদুল হক। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আর্থিক ও প্রযুক্তিগত অবস্থা বিবেচনা করলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সশরীরে পরীক্ষাই নেওয়াই উচিত। স্মার্ট ডিভাইস, ইন্টারনেট স্পীড ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের অভাব রয়েছে অনেকের। অন্যদিকে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার নীতিমালা ও সক্ষমতার অভাবও রয়েছে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের। বিশ্ববিদ্যালসমূহের পরীক্ষা এসএসসি/এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষা নয়। একটা সেমিস্টারে ৫০-৬০ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা থাকে। সুতরাং স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সশরীরে পরীক্ষা নিলে কোন অসুবিধা হওয়ার কথা না।


শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার যুক্তি তুলে ধরেন পালপুর ধরমপুর কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ আব্দুর রহমান মুহসেনী , তিনি বলেন, কোভিড-১৯-এর কারণে শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপকভাবে নেতিবাচক পরিবর্তন ঘটে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় মোট শিক্ষার্থীর ৯৪ ভাগ কোনো-না-কোনোভাবে ক্ষতির শিকার হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ৯৯ ভাগই নিম্ন বা নিম্নমধ্য আয়ের পরিবারের শিক্ষার্থী। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার এই বিপর্যয়ের প্রভাব প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পড়বে, মানবজাতির অন্তর্গত যে সম্ভাবনা রয়েছে তা ধ্বংস হয়ে যেতে পারে, বিগত দশকগুলোর উন্নতির যে ধারা তা বাধাগ্রস্ত হবে। শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাঘাতের কারণে শিশুদের পুষ্টিহীনতা, বাল্যবিয়ে ও নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ার ব্যাপক আশংকা রয়েছে। সুতরাং এই বিপর্যয় থেকে উত্তরণের জন্য সীমিত পরিসরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। যেমন:- ১) প্রতি ১ম সারির বেঞ্চের উভয় প্রান্তে ২জন করে শিক্ষার্থী বসবে। ২য় সারির বেঞ্চের মধ্যে ১জন করে শিক্ষার্থী বসবে। এভাবে পরবর্তী বেঞ্চগুলোতে বসতে হবে ২) শিক্ষার্থীদের প্রবেশ ও বেরিয়ে যাওয়ার পথ আলদা হবে। ৩) উপস্থিত শিক্ষক শিক্ষার্থীকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই মাস্ক সরবরাহ করতে হবে। ৪) হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং সাবান পানিতে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকবে। ৫) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণীকক্ষ, টয়লেট, প্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ৬) শ্রেণিকক্ষে প্রচুর আলো বাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

রাজশাহী দারুসসালাম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এইচ এম শহিদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে সম্পর্কের একটা বড় অবনতি হচ্ছে। শিক্ষা একটা চলমান প্রক্রিয়া এটা দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে যা কার্যকর হয় না। অনলাইনের শিক্ষা ব্যবস্থা কার্যকর না। অন লাইনে ক্লাস করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা অনৈতিক কাজে জড়িয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া শিক্ষরাও অনলাইনে সবাই দক্ষ না। শিক্ষকগণ ক্লাসে পাঠদান করতে না পেরে তাদের দক্ষতা হারাচ্ছ্


শিক্ষা বিশেষজ্ঞ আইনুন নাহার বেগম বলেন, এই মহামারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে শিক্ষার্থীদের অপুরনীয় ক্ষতি হয়েগেল । প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কোন বিকল্প নাই। বিশেষ করে শিশু শিক্ষার্থীদের মানুষিক ক্ষতিটা হয়েছে বেশি। শিশু শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ছে, তারা কাজে চলে যাচ্ছে, বাল্যবিয়েও বেড়ে যওয়ার সম্ভবনা তৈরি হচ্ছে। তিনি বলেন অটো প্রমোশান প্রশ্নবিদ্ধ, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হলেও পরীক্ষা নেয়া উচিৎ। তিনি আরো বলেন ‘সমন্বিত স্বাস্থ্যবিধি’ মেনে প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া খুবই জরুরী।

শিক্ষার্থীদের বক্তব্য


বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সোহান রহমান তূর্য বলেন, একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হিসেবে বলবো করোনাকালীন মানসিক প্রভাব আমাদের সব থেকে বেশী পড়েছে। আমরা অটোপাসও করতে পারছিনা আবার চাকরির বয়সও পার হয়ে যাচ্ছে। এদিক থেকে দীর্ঘদিন পড়াশোনার বাইরে থাকায় বিগত দিনগুলোতে যা পড়েছিলাম। সব ভুলে গিয়েছি। নিজেকে নতুন করে তৈরী করতে সব লাগবে অনেক যাতে করে প্রতিযোগীতা থেকে পিছিয়ে পড়বো। এদিক থেকে পছন্দের মানুষও বিয়ে করে অন্যের ঘরে চলে যাচ্ছে। এর সাথে প্রতিদিন সোশ্যাল সাইটগুলো ভিজিট করতে করতে ডিপ্রেশন বেড়ে যাচ্ছে। এর সাথে কর্তাব্যক্তিদের ভিত্তিহীন কথা এবং সীমাহীন দুর্নীতি আরও মানসিকভাবে পঙ্গু করে দিচ্ছে। কোন কিছু নতুন করে শুরু করতে চাইলেও এখন মনের মধ্যে ভয় কাজ করে। এটা প্রতিযোগীতা থেকে ছিটকে পড়ার একটা লক্ষণ।


বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান আভা বলেন, জীবন যেন থমকে গেছে। দীর্ঘ দিন এভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে এর কুপ্রভাব পরেছে যা দিন দিন আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় এ শিক্ষার্থীরা যারা সোনালী সময় পার করে অপার সম্ভাবনাময় পথে যাত্রা করার কথা তারা ১ সেমিস্টার এর জন্য ও অনেকে আটকে গেছে, এমন অবস্থায় এখন পড়েছে না পারছে সামনে এগুতে ,অনেকের বিয়ে হয়ে গেছে মোট কথা ঝরে পড়ছে, অচিরেই এর সমাধান না করলে কোমলমতি মন থেকে শিক্ষার্থীসুলভ আচরণ চলে যাচ্ছে, আমার তো মনে হয় মাঝে মাঝে জীবনের কোন মানে নেই,অযথা সময় যাচ্ছে, মনোবল হারিয়ে গেছে, এখন আর আগের মত গুছিয়ে কথা বলতে পারিনা, বাহিরে বের হয়ে অনেক ইতস্তত লাগে, অনেক সময় এরকম হয়েগেছে মানসিক অশান্তিতে পুরো ৭ দিন ঘুমিয়ে কাটিয়েছি,গেম খেলে কাটিয়েছি, সত্যি বলতে অনেকেই অনেক কিছু করছে হয়ত অনলাইন


বিজনেস,গার্ডেনিং, ফ্রিল্যান্সিং কিন্তু পড়াশুনার মধ্যে ধাতস্ত হয়ে থাকা টা চলে গেছে, তাই কিছুই ভাল লাগেনা যত যাই করি মনে হয় বৃথা,মনে হয় জীবন আগাচ্ছে না, ভবিষ্যৎ বলে কিছুই নেই। মানসিকভাবে এতটাই ভেঙে পড়েছি যার বলার মত ভাষা সব অগোছালো।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, দূর্গম এলাকায় অনলাইনে ক্লাস করা সমস্যা, মোবাইল দেয়ার কথা বরে সরকার শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করেছে, আমরা হতাশায় আছি আমাদের মানুষিক চাপ বাড়ছে আর নিতে পারছিনা, শিল্প প্রতিষ্ঠান খুলে অর্থনীতির চাকা চালু রাখলেও শিক্ষায় জাতীর মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিচ্ছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের প্রভাবে আজ শিক্ষার্থীরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে, ছিনতায় করছে, পর্ণগ্রাফি তৈরী করছে নানান ধরনের বাজে কাজে জড়িয়ে পড়ছে, অন্যদিকে মেয়েদের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে।


ঢাকা লালমাটিয়া কলেজের শিক্ষার্থী সুমাইয়া জেনি বলেন, এমনিতেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট, আর এখন মহামারিতে ১৫ মাস কলেজ বন্ধ কবে খুলবে জানিনা! আমাদের ছাত্রত্ব শেষ করতে চাকুরির বয়স পার হয়ে যাবে, সরকারের উচিৎ চাকুরির বয়সসীমা বাড়িয়ে ৩০ থেকে ৩৫ করা।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির বক্তব্য


এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিগগিরই খুলে দেওয়া হচ্ছে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। গতকাল মঙ্গলবার কেরানীগঞ্জ জাজিরা মোহাম্মদিয়া আলীম মাদ্রাসায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে এ ইঙ্গিত দেন তিনি।
বতর্মানে করোনা সংক্রমণের হার ১৩ শতাংশের বেশি উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, 'গত বছরের শেষে ও এ বছরের শুরুতে সংক্রমণের হার কমিয়ে আনা গিয়েছিল। করোনা সংক্রমণ এখন ঊর্ধ্বগামী।
আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ৫ শতাংশের নিচে গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। কিন্তু এখন তো অনেক বেশি। সংক্রমণের যে ঊর্ধ্বগতি আপনারাই বলেন কীভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব!'
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সুনির্দিষ্ট সময় জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এটা আমাদের কারো পক্ষে বলা সম্ভব নয়। আমরা আশা করেছিলাম, মার্চ মাসে খুলে দেবো। প্রতিদিন সিনারিও চেঞ্জ হচ্ছে। লকডাউন মানলে সংক্রমণ কমবে। আমরা তো মানছি না। আর মানছি না বলেই পরিস্থিতি বার বার খারাপের দিকে যাচ্ছে।'
শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা থেকে দূরে সরে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, 'পরীক্ষা যদি নাও হয় তাহলেও তো পরের ক্লাসে তো উঠতে হবে। তাই পড়া ছেড়ে দিলে হবে না।'

এখন মহামারি পরিস্থিতি ও সরকারে সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে দেশের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকসহ দেশের সর্বস্তরের মানুষ।

এমএসইসলাম

 

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]