5471

09/25/2024 স্থানীয় আওয়ামী লীগের মধ্যস্থতায় রাবিতে আন্দোলন স্থগিত

স্থানীয় আওয়ামী লীগের মধ্যস্থতায় রাবিতে আন্দোলন স্থগিত

কে এ এম সাকিব

২২ জুন ২০২১ ০৩:০১

রাজশাহীর আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যস্ততায় আন্দোলন স্থগিত করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ‘অবৈধ’ নিয়োগপ্রাপ্তরা। সোমবার (২১ জুন) বেলা তিনটায় এই সিদ্ধান্ত জানায় তারা।

এর আগে চাকরী স্থায়ীকরণ ও দ্রুত যোগদানের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডহকের ভিত্তিতে বিতর্কিত নিয়োগপ্রাপ্তরা। রবিবার (২০ জুন) থেকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে তারা। তবে রবিবার রাতে এই দুই ভবনের তালা খুলে দেয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।

সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় আওয়ামী লীগের কাছে দ্বারস্থ হয় নিয়োগপ্রাপ্তরা। স্থানীয় আওয়ামী লীগ সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলতে চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার রাতে তালা খুলে দেন নিয়োগপ্রাপ্তরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থ বছরের শেষ ফাইন্যান্স (এফসি) কমিটির সভা হওয়ার কথা ছিল। সেদিন ১০টায় সভা হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ৯টার মধ্যেই চাকরিপ্রাপ্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন, সিনেট ভবন ও উপাচার্যের বাসভবনে তালা দেন। এতে সেদিনের সভা স্থগিত হয়ে যায়। ফলে এফসি সভার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার ২২ তারিখের সিন্ডিকেট সভাও স্থগিত করে প্রশাসন।

পরে সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আয়েন উদ্দিন ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ক্যাম্পাসে আসেন।

পরে তারা প্রশাসন ভবনের কনফারেন্স কক্ষে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। প্রশাসনের পক্ষে আলোচনায় ছিলেন রুটিন উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা এবং উপ-উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়া, ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর লিয়াকত আলি। নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে ছিল ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, বর্তমান সহ-সভাপতি ফারুক হাসানসহ ছাত্রলীগের নিয়োগপ্রাপ্ত প্রায় ১৫ জন নেতাকর্মী।

প্রায় তিন ঘণ্টার আলোচনা শেষে সাংসদ আয়েন উদ্দিন বলেন, 'এটা অস্বীকার করা যাবে না এই নিয়োগের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এর স্থায়ী সমাধানের জন্য আজ একটি শান্তিপূর্ণ আলোচনা করেছি। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় তার স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে যাক। শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক হোক। আশা করি শীঘ্রই এর একটি স্থায়ী সমাধান আসবে।

আন্দোলনকারীদের একজন ওমর ফারুক ফারদিন বলেন, 'স্থানীয় আওয়ামী লীগের যারা আমাদের অভিভাবক তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। তারা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন। তাদের আশ্বাসে আমরা আন্দোলন স্থগিত করছি। '

প্রসঙ্গত, মেয়াদান্তে বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য করে (৬ মে) ১৩৭ জনকে অ্যাডহকে (অস্থায়ী) নিয়োগ দিয়ে পুলিশি পাহারায় ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।সেদিন এই নিয়োগকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ও মহানগর ছাত্রলীগ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এই নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে সেদিনই বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সেই নিয়োগ স্থগিত রাখে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা। পরে মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে তদন্ত করে গত ২৩ মে তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। শেষ অবৈধ নিয়োগে তদন্ত কমিটি বিদায়ী উপাচার্যসহ বেশ কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে। আবদুস সোবহানের দেশ ত্যাগেও নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। তবে এখনো শিক্ষা মন্ত্রণালয় দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এর মধ্যেই নিয়োগপ্রাপ্তরা যোগদানের জন্য ক্যাম্পাসে আন্দোলন করছেন।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]