5697

03/14/2025 ৬৯-এ পা দিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

৬৯-এ পা দিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

কে এ এম সাকিব, রাবি

৬ জুলাই ২০২১ ১৫:৫২

১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই দেশের দ্বিতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। আজ ৬ জুলাই সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। অথবা বলা যায়, ৬৯-এ পা রাখছে উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ ও গৌরবময় এই বিদ্যাপীঠ। প্রায় সাত দশক ধরে দেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। মাত্র দুটি অনুষদের ছয়টি বিভাগ নিয়ে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল, আজ সেখানে ১২টি অনুষদের ৫৯টি বিভাগ ও ছয়টি ইনস্টিটিউটে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম চলছে। ভবিষ্যতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও কয়েকটি অনুষদ ও বিভাগ চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।

১৯৬৬ সালের ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সব প্রগতিশীল আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের ভূমিকা প্রশংসার দাবি রাখে। ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনরত ছাত্রদের আগলে রাখতে গিয়ে শহিদ হন তৎকালীন প্রক্টর ও রসায়ন বিভাগের রিডার ড. শামসুজ্জোহা। এ ছাড়া একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী দেশমাতৃকার টানে অস্ত্র হাতে শত্রুর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। মুক্তিযুদ্ধের সময় অধ্যাপক হবিবুর রহমান, অধ্যাপক মীর আব্দুল কাইয়ুম ও অধ্যাপক সুখরঞ্জন সমাদ্দার অপহৃত ও শহিদ হন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ শামসুজ্জোহা হলের পাশেই আবিষ্কৃত হয় উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ গণকবর। প্রসঙ্গত, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে শহিদ শামসুজ্জোহা হল ও জুবেরী ভবনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প ছিল।

এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন দায়িত্বে নিয়োজিত উপাচার্য প্রফেসর ড. আনন্দ কুমার সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, অ্যালামনাইসহ সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি এক বাণীতে বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই তাদের প্রতি, যাদের দাবিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়, আর যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও নিষ্ঠায় গড়ে উঠেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানাই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা।’

জানা যায়, ১৯৫৩ সালের ৩১ মার্চ তৎকালীন পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ হয়। একই বছরের ৬ জুলাই অধ্যাপক ড. ইত্রাত হোসেন জুবেরীকে উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। সেই সময় পদ্মাপারে ওলন্দাজ (ডাচ) বণিকদের নির্মিত ঐতিহাসিক বড় কুঠিভবন ও রাজশাহী কলেজের বিভিন্ন ভবনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৬১ সালে বড় কুঠি থেকে নয়নাভিরাম মতিহারের বর্তমান সবুজ চত্বরে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম। রাজশাহী শহর থেকে অনুমান পাঁচ কিলোমিটার দূরের পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষে অবস্থিত সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় ক্যাম্পাস। এর আয়তন ৩০৩ দশমিক ৮০ হেক্টর।

দর্শন, ইতিহাস, বাংলা, ইংরেজি, অর্থনীতি, গণিত ও আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স নিয়ে যাত্রা শুরু করা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থী ৩৮ হাজার ২৩০ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২৫ হাজার ৫৭৯ জন এবং ছাত্রী ১২ হাজার ৫৫১ জন। বর্তমানে আবাসিক হলের সংখ্যা ১৭টি। ১০ তলাবিশিষ্ট আরও দুটি অত্যাধুনিক আবাসিক হলের (শেখ হাসিনা ও শহিদ কামারুজ্জামান) নির্মাণ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অন্যান্য বছর নানা আয়োজন থাকলেও করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে টানা দুই বছর ধরে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন নেই।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]