03/15/2025 কৌশলে দখল হচ্ছে রাজশাহী টি.বি. পুকুর
নিজস্ব প্রতিবেদক :
২৭ আগস্ট ২০২০ ০১:৩২
রাজশাহী মহানগরীকে পুকুরের শহরও বলা হতো। শহরের আনাচে কানাচে ছিলো ছোট বড় অসংখ্য পুকুর। কিন্তু কালের বিবর্তনে মানব সভ্যতার বিকাশ ঘটাতে ও বসবাসের নীড় তৈরী করতে এ সকল মূল্যবান পুকুর নির্বিচার ভরাট করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতা এখনো রয়েছে।
যদিও সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগরীতে সকল প্রকার পুকুর ভরাট বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। কিন্তু গোপনে এখনো চলছে পুকুর ভরাট। তবে এর রকম হয়েছে ভিন্ন। ধীরে ধীরে চারিদিকে মাটি ও আবর্জনা ফেলে ভরাট অব্যাহত রয়েছে। যে সকল পুকুর এখনো আছে সেগুলো এই ভাবেই ভরাট হচ্ছে।
একইভাবে ভরাট হচ্ছে লক্ষ্মীপুর এলাকার টিবি হাসপাতালের সামনের পুকুর। যা টিবি পুকুর নামে পরিচিত। এই পুকুরে আশে পাশের মানুষ গোসলসহ সাংসারিক নানা প্রকার প্রয়োজন মিটিয়ে থাকে। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে পুকুরের দক্ষিণ পশ্চিম দিকে ভরাট করে বাড়ি করেছে কিছু ভূমিদস্যুরা। বন্ধ করে দিয়েছে চলাচলের রাস্তা। এই সকল ভূমিদস্যুদের কবল হতে পুকুর ও রাস্তাকে মুক্ত করার জন্য ইতোমধ্যে এলাকাবাসী রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবরে একটি লিখিত আদেবন করেছেন। বিষয়টি সম্পর্কে ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরও জ্ঞাত রয়েছেন।
আবেদনে উল্লেখ করা হয় রাসিক ৬ নং ওয়ার্ড লক্ষীপুর প্যারামেডিকেল রোড সংলগ্ন টি.বি পুকুরের পূর্ব দিক দিয়ে আব্দুল মতিনের বাড়ী হতে একটি রাস্তা রয়েছে। যাহার আর,এস দাগ নং- ২১১৫। নক্সার পরিমাপ অনুযায়ী সম্মুখভাগ অর্থাৎ পশ্চিম প্রান্ত ৩০ ফুট চওড়া এবং পূর্ব প্রান্ত ২১ ফুট চওড়া। রাস্তাটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৯০ ফুট। রাস্তাটি এক সময় পশ্চিম প্রান্ত থেকে শুরু করে ক্রমান্বয়ে পূর্ব দিকে গিয়ে লক্ষীপুর কাঁচা বাজারে ঠেকে ছিলো। কিন্তু পশ্চিম দিকটা অবৈধ দখলদারদের কারনে বর্তমানে সরু গলিতে পরিণত হয়েছে। আর পূর্ব দিক পাড় ভাংতে ভাংতে আর,এস ২১১৬ দাগের টি.বি পুকুরের মধ্যে নেমে গেছে। বর্ষাকালে ২১১৫ দাগের পূর্ব অংশ ২১১৬ দাগের পুকুরের সাথে মিলে অদৃশ্য হয়ে থাকে। এক শ্রেণীর মানুষ আর,এস ২১১৫ দাগের সরকারী রাস্তার জমিসহ আর,এস ২১১৬ দাগের পুকুরের জমিও অবৈধভাবে ভরাটের মাধ্যমে বৃদ্ধি করে মাদক, অসামাজিক কার্যকলাপ ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। তারা পুকুরের পানিতে নানান রকমের আবর্জনা ফেলাসহ তাদের অবৈধ দখলকৃত জমিতে আধাপাকা স্থাপনা যেমন : নিজ বসতবাড়ি সহ অন্যকে ভাড়া দেয়া, রাস্তার উপর বড় চার্জারের গাড়ির গ্যারেজ ও চার্জ দেয়া, ভ্যান রাখা, গরু ছাগলের গোয়ালসহ গবর রাস্তার উপর জমিয়ে রাখা, সাটারিং এর বাঁশ কাঠ রাস্তার ধারে রেখে গুদামের মত নির্মাণ করেছে।
দখলদাররা হলেন সাহাবুদ্দিন, রুহুল আমিন, রতন, মাহাতাব উদ্দীন, মাসুদ, সোহেল, রশিদ, ভাষান, মাইনুল ও মনিরসহ আরো অনেকে। এসকল লোকের অন্যত্র বাড়ি থাকলেও সেগুলো ভাড়া দিয়ে এসে এখানে দখল করে বাড়ি নির্মান করে বসবাস করছেন বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়াও চলাচলের সরু রাস্তার উপরে গরু ছাগল বেধে রাখা, কাপড় শুকানো দড়ি টাঙ্গানো, অপরিকল্পিত পায়খানা নির্মাণ করে মলমূত্র সরাসরি দৃশ্যমানভাবে পুকুরের পানিতে নামানো, রাস্তার ধারে গরুর আউড়ের পালা রেখে ও নোংরা আবর্জনা ফেলে রাস্তাকে আরো সংকীর্ণ করে ফেলায় এ পথে চলাচল করা জনসাধারণের জীবনকে অতিষ্ট করে তুলেছে বলে উল্লেখ করা হয়।
এসব বিষয়ে দখলদারদের বললে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং নানা ধরনের হুমকী দেন। এদের কারনে সাধারণ শান্তিপ্রিয় মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। তারা সকলেই অবৈধ দখল উচ্ছেদ পূর্বক সরকারী টি.বি পুকুরের নিজস্ব সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনাসহ অসামাজিক পরিবেশকে মুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন । দখলদারদের মোবাইল নম্বর না পাওয়ায় তাদের কোন মন্তব্য নেয়া যায়নি। পরিশেষে বলা যায় রাজশাহী বিসিক এ সপুরা সিল্ক এর সামনে সদ্য সংস্কারকৃত মঠ পুকুরের আদলে টিবি পুকুরটি দখল মুক্ত করে সংস্কার করলে এলাকার জনগণ একটি বিনোদন কেন্দ্র খুঁজে পাবে বলে মনে করে এলাকাসী।