7209

09/19/2024 সৌদি আরব ও লেবাননের বৈরী সম্পর্কের কারণ

সৌদি আরব ও লেবাননের বৈরী সম্পর্কের কারণ

রাজটাইমস ডেস্ক

১ নভেম্বর ২০২১ ০৭:১২

রিয়াদ থেকে লেবানিজ রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করেছে সৌদি আরব। একইসাথে লেবানন থেকে সকল ধরনের পণ্য আমদানিও বন্ধ করে দিয়েছে।

এরপর সৌদি আরবের সাথে সংহতি প্রকাশ করে একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও কুয়েত।

দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি নিয়ে শনিবার উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে আরব লীগ।

কিভাবে পরিস্থিতি এ পর্যায়ে পৌঁছল?

বিরোধের সূচনা হয় এ সপ্তাহের শুরুর দিকে একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারের পর।


ওই সাক্ষাৎকারে লেবাননের তথ্যমন্ত্রী জর্জ কোরদানিকে বলতে শোনা যায়, ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত আগ্রাসন চালিয়েছে।

সাত বছরের বেশি সময় ধরে ইয়েমেনের সৌদি নেতৃত্বাধীন সুন্নি আরব সামরিক জোট হাউছি শিয়া মুসলমান বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।

সৌদি আরব ও হাউছি বিদ্রোহী বাহিনী- উভয় পক্ষই ইয়েমেনে নৃশংসতা চালানোর অভিযোগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে।

তবে মন্ত্রী হওয়ার আগে গত অগাস্ট মাসে ওই সাক্ষাৎকারটি দিয়েছিলেন কোরদানি। সেখানে ওই যুদ্ধকে তিনি 'নিরর্থক' বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন যে, হাউছি বিদ্রোহীরা 'আত্মরক্ষা'র জন্য যুদ্ধ করছে।

লেবাননের সরকার বলেছেন, কোরদানির বক্তব্য তার ব্যক্তিগত, এটি সরকারের অবস্থান নয়। কিন্তু, গত কয়েক বছরে দু’দেশের সম্পর্ক বেশ তিক্ত হয়ে উঠেছে।

ইরান সমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রভাব লেবাননে বাড়ছে, যারা ইয়েমেনে হাউছি বিদ্রোহীদের সমর্থন করছে।


লেবানিজ রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের সৌদি সিদ্ধান্তের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বাহরাইন ওই দেশ থেকে রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে। এরপর কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত একই পদক্ষেপ নেয়। এ তিনটি দেশটি সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ মিত্র বলে পরিচিত।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, 'সংহতি' জানাতে তারা লেবানন থেকে তাদের কূটনৈতিকদের প্রত্যাহার করে নিয়ে আসবে। একইসাথে তাদের নাগরিকরা যাতে লেবাননে যেতে না পারে, ওই ব্যবস্থাও নেবে।

বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদদাতা টম বেটম্যান বলছেন, সৌদি আরব ও অন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে দীর্ঘদিন চলে আসা অসন্তোষের বারুদে অগ্নিসংযোগ করেছে কোরদানির মন্তব্য। ইরান সমর্থক ভারী অস্ত্রে সজ্জিত হিজবুল্লাহ প্রভাব লেবাননে অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এসব দেশ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।

এ ঘটনা এমন সময়ে ঘটছে, যখন লেবানন চরম অর্থনৈতিক সংকটে হিমশিম খাচ্ছে ও দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। জ্বালানি তেলের অভাবে দেশের অনেক এলাকা অন্ধকার হয়ে থাকছে। মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকায় অনেকে মৌলিক চাহিদাও পূরণ করতে পারছে না।

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সৌদি আরবের সিদ্ধান্তে তিনি হতাশ হয়েছেন। তার আশা, দেশটি তাদের এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে।

শনিবার মন্ত্রীদের একটি জরুরি বৈঠক হয়েছে। সেখানে হিজবুল্লাহ'র সাথে যুক্ত একটি রাজনৈতিক ব্লকের সদস্য কোরদানিকে পদত্যাগ করতে বলা হবে কিনা, ওই আলোচনাও হয়েছে।

তবে উদ্বেগ রয়েছে যে, তাকে পদত্যাগ করতে বলা হলে তার নেতিবাচক প্রভাবও রয়েছে, যার ফলে দেশটির জোট সরকার হুমকিতে পড়তে পারে।

বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদদাতা টম বেটম্যান বলছেন, কোরদানির পদত্যাগ চাওয়া বা রাষ্ট্রদূতদের বহিষ্কারের বড় ধরনের ঝুঁকি রয়েছে।

বৈরুতের বর্তমান সরকার নানা গোষ্ঠী-সম্প্রদায়ের জোট মিলে গঠিত হয়েছে। যদিও সরকার বেশ দুর্বল ও অকার্যকর, কিন্তু দেশটির বাসিন্দাদের আশঙ্কা, সেখানে কোনো সমস্যার তৈরি হলে তা লেবাননের জন্য বড় ধরনের বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারে।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]