743

09/20/2024 নীরব বৃদ্ধি ডেঙ্গুর প্রকোপ

নীরব বৃদ্ধি ডেঙ্গুর প্রকোপ

রাজটাইমস ডেস্ক

২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৯:৩৪

দেশে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির মুখে। প্রতিদিন এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ২ জন করে। রাজধানী ঢাকা ও আশেপাশে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

বৃষ্টির কারণে ডেঙ্গু রোগ সৃষ্টিকারী এডিস মশার উপদ্রব বাড়ার কথা জানান বিশেষজ্ঞরা। বর্তমানে সারাদেশে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এমন অবস্থায় মশক নিধন ব্যবস্থার বিকল্প নেই জানান বিশেষজ্ঞরা।

দেশে ক্রমান্বয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ার চিত্র উঠে আসে স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যসূত্রে। জানুয়ারিতে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৯৯ জন। এরপর ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত এ সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কমেছে। তবে জুন থেকে তা আবার বাড়তে শুরু করেছে। ফেব্রুয়ারিতে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৫ জন, মার্চে ২৭ জন, এপ্রিলে ২৫ জন, মে’তে ১০ জন, জুনে ২০ জন, জুলাইয়ে ২৩ জন এবং আগস্টে ৬৭ জন। এ নিয়ে চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৪১৬ জন। এর মধ্যে ঢাকা শহরে ৩৪২ জন এবং ঢাকার বাইরে ৭৪ জন। ঢাকার বাইরে ঢাকা বিভাগে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১১ জন, রাজশাহী বিভাগে ১ জন, খুলনা বিভাগে ১৭ জন, বরিশাল বিভাগে ৩ জন এবং সিলেট বিভাগে ১ জন।

দেশে করোনা মহামারী পরিস্থিতি বিরাজ করায় ডেঙ্গু রোগের প্রতি তেমন কেউ সচেতন নয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। যদিও ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিরাও হঠাৎ করে মারা যান। আর করোনা এবং ডেঙ্গু আক্রান্তের মূল উপসর্গ জ্বর। এ কারণে ডেঙ্গু হলেও করোনা মনে করে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে। হাসপাতালে না গিয়ে জ্বরের উপসর্গ নিয়েও মারা যাচ্ছেন কেউ কেউ। এ কারণে ডেঙ্গু আক্রান্তের সঠিক চিত্রও জানা সম্ভব হচ্ছে না।

আগামী মাসে ডেঙ্গু রোগের প্রভাব কিছুটা বাড়তে পারার আশংকা প্রকাশ করেছেন কীটতত্ত্ববিদ ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, এখন বৃষ্টির ধরন ভালো নয়। সে কারণে ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। চলতি মাস এবং আগামী মাসে এ অবস্থা বহাল থাকতে পারে। এ সময় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা বাড়তে পারে। তবে এখন পর্যন্ত গতবারের চেয়ে পরিস্থিতি অনেক ভালো রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে প্রকাশিত ডেঙ্গু রোগের তথ্যের উপর সন্দিহান নগর পরিকল্পনাবিদ এবং বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মুহাম্মদ খান। তিনি বলেন, করোনার ভয়াবহতার কারণে এবার ডেঙ্গু ভাইরাস ধামাচাপা পড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে যে চিত্র দেখানো হচ্ছে, সেটা প্রকৃত চিত্র বলে মনে হচ্ছে না। কেননা ডেঙ্গু এবং করোনার উপসর্গ একই ধরনের। প্রথমে জ্বর আসে। এ কারণে ডেঙ্গু হলেও অনেকে করোনা মনে করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে না।

দুই সিটি কর্পোরেশনের সম্মিলত প্রচেষ্টাই এ রোগের বিস্তার দমন করতে পারেন বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, গতবারের চেয়ে এবার ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের ডেঙ্গু ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে তৎপরতা বেশি ছিল।

এই রোগের সংখ্যা দ্রুত বিস্তার লাভ করায় মশক নিধন কার্যক্রম জোরদারসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনার আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পাশাপাশি জনসাধারণকে এডিস মশার বংশবিস্তার রোধে বাড়িঘরের আশপাশ পরিষ্কার রাখাসহ সচেতন থাকার অনুরোধ জানান।

এ রোগের বিষয়ে সার্বিক কথা বলতে যোগাযোগ করা হয় স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. জহিরুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্টদের মন্ত্রণালয় থেকে দিকনির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে যেসব বাস্তবায়ন কার্যক্রম মনিটরিং করা হচ্ছে, প্রতি মাসে এ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভা হচ্ছে। এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোমিনুর রহমান মামুন যুগান্তরকে বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি বছরজুড়ে কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রেখেছে। চিরুনি অভিযান ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমসহ রুটিন মশক নিধন কার্যক্রম চলছে। তিনি বলেন, জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে ডিএনসিসি এলাকায় ৩ জন আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ১ জন আক্রান্ত হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. শরীফ আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, মশক নিধনে ডিএসসিসি মেয়রের নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আগের তুলনায় জনবল এবং মশক নিধন কার্যক্রমের সময় বাড়ানো হয়েছে। খবর-যুগান্তর

  • এসএইচ

 

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]