04/20/2025 দ্বিতীয় দিনেও বেনাপোলে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
রাজটাইমস ডেস্ক
২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৩:৪১
বাংলাদেশের বেনাপোলের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে অনির্দিষ্টকালের ডাকা ধর্মঘটে দ্বিতীয় দিনের মতো সমঝোতা ছাড়াই মঙ্গলবার সকাল থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে দুদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে।
ফলে পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক। এসবের অধিকাংশই বাংলাদেশের শতভাগ রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্পের কাঁচামালসহ পচনশীল পণ্য। আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল বন্দর অভ্যন্তরে ও কাস্টমসের সব কার্যক্রম সচলসহ দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্ট যাত্রীদের চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
সোমবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সব পক্ষ আলোচনায় বসলেও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর, কাস্টমস, বিএসএফ, সিএন্ডএফ এজেন্ট, ট্রাক মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নসহ বন্দর ব্যবহারকারীরা তাদের নিজ নিজ সিদ্ধান্তে অটল থাকায় বিষয়টি সুরাহা হয়নি। মঙ্গলবার বিকালে আবারও বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
ভারতীয় বিএসএফ ও পেট্রাপোল ল্যান্ড পোর্ট অথরিটির হঠকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন, বনগাঁ গুডস ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন, বনগাঁ নব মালিক সমিতি, বনগাঁ মোটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, সীমান্ত পরিবহন মালিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠনসহ একাধিক সংগঠন সোমবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দেয়। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধে যোগ দেয় পেট্রাপোল সীমান্তে পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত কয়েক হাজার শ্রমিক।
পেট্রাপোল সেন্ট্রাল পার্কিংয়ের (ল্যান্ড পোর্ট) নতুন ম্যানেজার কমলেশ সাইনীর খামখেয়ালি সিদ্ধান্তের কারণে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত কর্মীসহ বন্দর ব্যবহারকারীদের। সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়েছে, করোনার আবহে এমনিতেই তাদের আয় কমে এসেছে। নতুন ম্যানেজার তাদের সঙ্গে কথা না বলে নতুন নতুন আইন তৈরি করছে।
এছাড়া নতুন ল্যান্ড পোর্ট ম্যানেজারের বিরুদ্ধে পরিবহনকর্মীরা অভিযোগ এনেছেন যে, বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সকে (বিএসএফ) কাজে লাগিয়ে তাদেরকে বন্দরের ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এসবের প্রতিবাদে এবং শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবিকে সামনে রেখে এই কর্মবিরতি শুরু করেছেন আটটি সংগঠনের কয়েক হাজার শ্রমিক।
পেট্রাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান, কোভিড-১৯ এর কারণে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যে আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। আগে যেখানে ২৪ ঘণ্টায় ৭০০ থেকে ৭৫০ পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে রপ্তানি হতো। করোনার কারণে এখন মাত্র সাড়ে ৩০০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। এরপর নতুন ল্যান্ড পোর্ট ম্যানেজার ব্যবসায়ীদের কোনো কথা না বলে বন্দর এলাকায় প্রবেশের ওপর নতুন নতুন আইন তৈরি করে আমাদের বাণিজ্যে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে।
নতুন ম্যানেজার বিএসএফকে কাজে লাগিয়ে পরিবহনকর্মীদের বন্দরের ভিতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। পরিবহন কাজে জড়িত কর্মীদের আইসিপিতে প্রবেশের মুখে বিএসএফের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। এমনটি এর আগে কখনো দেখা যায়নি। কয়েক হাজার শ্রমিক ও সীমান্তের বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা।
এসব হয়রানির প্রতিবাদে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করা হলেও ভারতের পেট্রাপোল স্থল বন্দরের ম্যানেজার তার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন। আমদানি-রফতানি কাজে বন্দর অভ্যন্তরে প্রবেশসহ নানা হয়রানি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। এর সমাধান দ্রুত না নিলে এশিয়ার বৃহত্তম বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থল বন্দর মুখ থুবড়ে পড়বে।