8569

04/20/2025 ট্রেনে এখন টিকিট ছাড়া চুক্তিতে যাত্রী পরিবহণ

ট্রেনে এখন টিকিট ছাড়া চুক্তিতে যাত্রী পরিবহণ

রাজটাইমস ডেস্ক

৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১২:৩৩

এখন টিকিট ছাড়াই ট্রেনে উঠে গিয়ে পুলিশ বা ট্রেন কর্মচারিদের সঙ্গে চুক্তি করে ভ্রমণ করতে পারছেন রাজশাহীর যাত্রীরা। রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ডজনখানেক আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেনে মিলছে এ সুবিধা। যাত্রী পরিবহণে কোনো স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই এ কাজে সহযোগিতা করছে একটি দালাল চক্র। খবর পদ্মা টাইমসের।

কালোবাজারে ট্রেনের টিকিট বিক্রির বিষয় নিয়ে বেশ আলোচনার মধ্যেই রাজশাহী থেকে চলাচলকারি ট্রেনে পাওয়া গেছে এমন চিত্র। দালালরা প্রথমে চুক্তি করে যাত্রীকে ট্রেন কর্মচারি বা পুলিশের কাছে পাঠায়। ট্রেন ছাড়ার পর ফাকা আসনে বসিয়ে দেয়া হয় তাদের।

রাজশাহী স্টেশন ঘিরে গড়ে ওঠা একাধিক টিকিট কালোবাজারি চক্রের অপতৎপরতার কারণে সাধারণ যাত্রীদের ট্রেনের টিকিট না পাওয়া নিয়ে অনেক অভিযোগ উঠে। এমনকি সেই চক্রের সঙ্গে রাজশাহী রেলস্টেশনের এক বুকিং সহকারী জড়িত থাকার তথ্যও পাওয়া যায়।

এ ঘটনার পরে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে নতুন মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার নিজেই মাঠে নেমে তদারকি শুরু করেন। বিভিন্ন সময়ে স্টেশনে গিয়ে টিকিটের খোঁজ নেওয়াসহ ট্রেন ছাড়ার আগে টিকিট চেক করে প্লাটফর্মে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন যাত্রীদের। কিন্তু এতকিছুর পরেও ট্রেনে থাকছে অতিরিক্ত যাত্রী।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে গত ১৫ জানুয়ারি থেকে ট্রেনে অর্ধেক যাত্রী বহন শুরু করা হয়। যাত্রীদের আসনের ক্ষেত্রে একটির পরে একটি করে ফাকা রেখে আসন বিন্যাস করা হয়। কিন্তু ট্রেনে ঘুরে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র।

শুক্রবার বিভিন্ন ট্রেনের বগিগুলোর আসনের সবগুলোতেই যাত্রীদের থাকতে দেখা যায়। ট্রেনের গেটে গেটে টিকিট ছাড়া ট্রেনে ওঠা যাত্রীদের জটলা করে দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। পরে তাদের ফাকা আসনে বসিয়ে দেয়া হচ্ছে। কিছু যাত্রীদের আবার পুলিশের সঙ্গে চুক্তি করে তাদের জন্য নির্ধারিত টুল নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। শুক্রবার সকালে রাজশাহী থেকে ছেড়ে যাওয়া সাগরদাড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনে দেখা মেলে এমন চিত্র।

ট্রেনের গেটে পুলিশের জন্য নির্ধারিত আসনে তিন যুবককে বসে থাকতে দেখে তাদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। তারা টিকিট ছাড়াই উঠে ট্রেনে থাকা কর্মচারীদের সঙ্গে চুক্তি করেছেন বলে তথ্য দেন। তবে তাদের পরিচয় ও ছবি নেওয়া হলেও তা প্রকাশ করতে দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন তারা।

একই ট্রেনে আরেক বগিতে পুলিশ নিজেই চুক্তি করে তাদের বসার ব্যবস্থা করেন। বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে তাকে বসতে দেয়া হচ্ছে। এরপর তার পরিচয় জানতে চাইলে ও চুক্তির বিষয়ে বলা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলবেন না বলে পরিচয় না দিয়ে চলে যান।

এ ঘটনার পরে টিটি ও গার্ড টিকিট চেক করতে আসার কিছুটা সময় আগে এক স্টেশনে ট্রেন থামলে খাবার গাড়ির দুইজন লোক এসে পেছনে থাকা চুক্তিতে ওঠানো কয়েক জনকে নেমে প্রথমের বগিতে গিয়ে উঠে যেতে বলে। এর ফলে টিটি ও গার্ড যখন টিকিট চেক করতে আসেন তখন চুক্তিকৃতদেরকে আর দেখতে পান না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রেনের টিটি জানান, অতিরিক্ত যাত্রিদের সবার টিকিট করে দেয়া হয়েছে। কারও চুক্তি করে যাত্রি ওঠানোর ক্ষমতা নেই। আর এসব টুলগুলো তাদের নিজেদের বসার জন্য দেয়া হয়।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ট্রেন ছাড়ার আগে যাত্রিদের টিকিট চেক করে প্লাটফর্মে প্রবেশ করানো হচ্ছে। কিন্তু চুক্তি করে বিষয়টি নিয়ে আমি জানতাম না। এই কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]