9008

04/21/2025 বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি

বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ মার্চ ২০২২ ০৭:৪২

রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলে ক্রমেই পানির সংকট দেখা দিচ্ছে। বর্তমানে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষি পুরোপুরি ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীল। ভূ-গর্ভস্থ পানি তুলে চাষাবাদের কাজে ব্যবহারের কারণে খরাপ্রবণ রাজশাহী অঞ্চলে মাটির নিচে পানির স্তর শত শত ফুট নিচে চলে গেছে। ফলে এক সময়ের প্রমত্তা পদ্মার পানি শুকিয়ে যাওয়ায় বরেন্দ্র অঞ্চলের বিল-খারিগুলোও পানিশূন্য হয়ে পড়েছে।

তাই বরেন্দ্র অঞ্চলের পানির সংকট নিরসনে ‘উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প’ বাস্তবায়নের দাবি উঠেছে। আজ সোমবার (১৪ মার্চ) সকালে রাজশাহী নগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনোত্তর সবাবেশ থেকে রাজশাহীতে এই সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের জোর দাবি জানানো হয়।

আন্তর্জাতিক নদী কৃত্য দিবস উপলক্ষে ‘পদ্মা নদী বাঁচাও, রাজশাহী বাঁচাও’ শ্লোগানে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) রাজশাহী জেলা কমিটি এই কর্মসূচির আয়োজন করে। সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাপার জেলা কমিটির সভাপতি মো. জামাত খান।

সমাবেশে জামাত খান বলেন, ‘গোটা উত্তরাঞ্চলের পাতাল প্রায় পানিশূন্য। সরকারি সংস্থার জরিপেই এ চিত্র উঠে এসেছে। আমরা দুই দশক ধরে উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তুআমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আজও তা আলোর মুখ দেখেনি। আমরা অবিলম্বে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানাই। এটি না হলে উত্তরাঞ্চলের মানুষ আমলাদের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শুধু রাস্তা আর বিল্ডিং মানে উন্নয়ন নয়। উন্নয়নের পূর্বশর্ত পানি। কিন্তু পদ্মায় পানি নেই। চার বছর পরই ফারাক্কা চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার আগেই পানির নায্য হিস্যা নিশ্চিত করে নতুন চুক্তি করতে হবে। পদ্মায় প্রাণ ফিরিয়ে আনতে হবে। তা না হলে কৃষিভাণ্ডার নষ্ট হয়ে যাবে। আমরা অনাহারে থাকব। দেশ খাদ্য সংকটে পড়বে। তাই পদ্মায় পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। বাস্তবায়ন করতে হবে উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প।’ এটি বাস্তবায়ন হলে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার করে ৭৪ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমির চাষাবাদ সম্ভব হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বাপার জেলা কমিটির উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবদুল মান্নান সমাবেশে বলেন, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে এখন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) গভীর নলকূপের মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ পানি তুলে চাষিদের সরবরাহ করে। এতে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর প্রতিনিয়ত নিচে নামছে। তাই ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন বন্ধ করতে হবে। রাজশাহী অঞ্চল সব সময় অবহেলিত। কিন্তু আমরা সুষম উন্নয়ন চাই। সরকারকে বলব, এখনও সময় আছে। উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে এ অঞ্চলকে বাঁচান।’

বক্তারা পরিবেশ রক্ষায় রাজশাহী শহরের পুকুর ভরাট বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া, যত্রতত্র গাছ কাটা বন্ধ করা এবং পদ্মা নদীকে জাতীয় ড্রেজিং কর্মসূচির আওতায় নিয়ে ড্রেজিং করার দাবি জানান। এসব উদ্যোগ নেওয়া না হলে রাজশাহী অঞ্চলকে বাঁচাতে তাঁরা কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন।
বাপার জেলা কমিটির কোষাধ্যক্ষ জোবায়েদ হোসেন জিতুর পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- বাপার উপদেষ্টা দেবাশীষ প্রামাণিক দেবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেন, আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু, তরুণ সংগঠক গোলাম নবী রনি, নারী নেত্রী সেলিনা হোসেন, সুফিয়া বেগম, বাপার জেলা কমিটির সহ-সভাপতি শ.ম সাজু প্রমুখ।

 

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]