9099

09/20/2024 ইমরানের সামনে তিন পথ !

ইমরানের সামনে তিন পথ !

ডেক্স রির্পোট

৩ এপ্রিল ২০২২ ১৪:২০

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকার ইতোমধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। দেশটির জাতীয় পরিষদে বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আজ ভোটাভুটি হওয়ার কথা। ভোটাভুটির আগে ইমরান খান বলেন, তাকে তিনটি উপায়ের মধ্যে একটি বেছে নিতে বলেছে ‘এস্টাবলিশমেন্ট’। এগুলো হলো-অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হওয়া, পদত্যাগ করা অথবা আগাম নির্বাচন দেওয়া। পাকিস্তানের ‘এস্টাবলিশমেন্ট’ মূলত দেশটির ক্ষমতাধর সেনাবাহিনী। খবর দ্য ডন ও জিও নিউজের।

বেসরকারি একটি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শুক্রবার ইমরান খান বলেন, জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালেও তিনি পদত্যাগ করবেন না। তাকে ছেড়ে যেসব আইনপ্রণেতা বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন, বিরোধীরা তাদের দিয়ে সরকার চালাতে পারবে না বলে দাবি করেছেন তিনি। ইমরান খান বলেন, তিনি পদত্যাগ বা নতুন সরকার গঠনের বদলে আগাম নির্বাচনের পক্ষে। আগাম নির্বাচন হলেই সবচেয়ে ভালো হবে বলে মনে করছেন তিনি। ইমরান খান বলেন, ‘আমরা বলেছি, নির্বাচন হলো সবচেয়ে ভালো বিকল্প। আমি পদত্যাগ করার কথা ভাবতেও পারি না। আমি শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে বিশ্বাস করি।’ দলত্যাগীদের নিয়ে সরকার চালানো যায় না দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি আগাম নির্বাচনের আয়োজন করি, তাহলে সেটাই পাকিস্তানের জন্য ভালো হবে।’ অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ইমরান বলেন, কাল যখন জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠক হবে, তখন তিনি আরেকটি চমক নিয়ে আসবেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একজন অধিনায়ক কখনো তার কৌশল কাউকে জানায় না। কিন্তু আমি আবার বলছি, এই অনাস্থা প্রস্তাব বড় একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র।’

ইমরান খান আরও বলেন, তিনি কখনো পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যাবেন না। কোনো অবস্থাতেই সামরিক বাহিনীকে বিতর্কিত হতে দিতে চান না জানিয়ে বলেন, ‘আমি কখনো সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কথা বলব না।’ পাকিস্তানের অস্তিত্বের জন্য শক্তিশালী সেনাবাহিনী প্রয়োজন বলে জানান তিনি। ইমরান বলেন, যদি শক্তিশালী সেনাবাহিনী না থাকত তাহলে দেশ এত দিনে তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে যেত। তিনি বলেন, ‘আমাদের সেনাবাহিনীর কারণে আমরা নিরাপদে আছি।’

আমার জীবন হুমকির মুখে : ইমরান খান বলেন, তার জীবন এখন হুমকির মুখে। তিনি দাবি করেন, তার সরকার পতনের ষড়যন্ত্র যারা করছেন, তারা এটা ভেবে ভয়ে আছেন, তিনি যদি ক্ষমতাচ্যুত হন তারপরও দেশের মানুষ তাকে সমর্থন করে যাবেন। ইমরান বলেন, ‘আমি এ কারণে প্রকাশ্যে এটা বলছি, আমার জীবন এখন হুমকির মুখে আছে।’ ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া ইমরান খান বলেন, ‘যারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে নিজেদের ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন, তারা এটা জানেন যে আমি চুপ করে বসে থাকব না। এ কারণে আমি প্রকাশ্যে এসব কথা বলছি।’

অনাস্থা ভোটে হারলে নতুন প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্বাচিত হবে : দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের নিয়ম ও কার্যপ্রণালীতে বলা রয়েছে, যদি প্রধানমন্ত্রীর পদ শূন্য হয়, তাহলে জাতীয় পরিষদ কোনো বিতর্ক বা অন্য কোনো কিছু না করে নতুন একজন মুসলিম ধর্মাবলম্বী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করার প্রক্রিয়া শুরু করবে। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে প্রার্থীর নাম ঠিক হয়ে গেলে নির্বাচনের আগের দিন বেলা ২টার মধ্যে প্রার্থীদের নাম সচিবের কাছে পাঠাতে হবে। প্রার্থী ও তাদের প্রস্তাবক বা সমর্থনকারীদের উপস্থিতিতে (যারা উপস্থিত থাকতে ইচ্ছুক) মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করবেন স্পিকার। তিনি যদি সন্তুষ্ট না হন, তবে কিছু বিষয় বিবেচনায় মনোনয়নপত্র বাতিল করতে পারেন। জাতীয় পরিষদের বিধানে বলা আছে, ‘প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ বা বাতিলের ক্ষেত্রে স্পিকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।’ নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের দিন স্পিকার প্রার্থীদের নাম পড়ে শোনাবেন। প্রার্থী একজন ও সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের ভোট পেলে স্পিকার তাকেই নির্বাচিত ঘোষণা করবেন। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোট না পেলে সেখানেই এই নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সমাপ্তি ঘটবে। স্পিকার আবারও পরিষদে নতুন করে একটি প্রক্রিয়া শুরু করবেন। তবে দুই বা তারও বেশি প্রার্থী থাকলে এবং প্রথমবার ভোটে যদি কোনো প্রার্থী সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পান, তবে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুজনকে নিয়ে আবারও ভোট হবে। যদি দুই প্রার্থীর ভোট সমান হয়, তাহলে কোনো একজন সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়া পর্যন্ত তাদের মধ্য থেকে একজনকে নির্বাচিত করার জন্য ভোট হতে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর স্পিকার ভোটের ফল প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠাবেন। এরপর সচিব নির্বাচিত ওই প্রধানমন্ত্রীর নাম জানিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে।

সূত্র: যুগান্তর।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]