04/20/2025 রাজশাহীতে জমে উঠছে ঈদের কেনাকাটা
নিজস্ব প্রতিবেদক
২০ এপ্রিল ২০২২ ০৪:১৫
পবিত্র মাহে রমজান শেষে পরিবার পরিজন নিয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতরের ঈদ পালনের জন্য রাজশাহী নগরীর বাজার গুলোতে কেনাকাটা শুরু হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির মধ্যে ক্রেতারা সাধ ও সাধ্যের মধ্যে খুঁজছেন ঈদের পোশাক। কারোনাকালীন সময়ের চাইতে এবার ব্যবসা বেশ ভালো হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। আর ক্রেতারা বলছেন দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির প্রভাব পড়ছে ঈদের বাজারে। নগরীর বিভিন্ন বাজার গুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে জমে উঠছে ঈদের কেনাকাটা।
ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে চাই নতুন জামা কাপড় জুতো। বছরজুড়ে এটা সেটা কিনলেও রমজান এলেই ঈদকে সামনে রেখে শুরু হয় কেনা কাটার উৎসব। ক্রেতাদের কথা ঈদের সময় কেনাকাটার মজাই আলাদা। সেই জন্মের পর থেকেই ঈদে কেনাকাটা চলছে। এ সময় সিয়াম সাধনার পাশাপাশি অন্যরকম আবহ বিরাজ করে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৩ মে পবিত্র পবিত্র ঈদুল ফিতর। সে হিসেবে ঈদের বাকী আর মাত্র ১৩ থেকে ১২ দিন। এ উপলক্ষে রাজশাহীর বিভিন্ন বাগার গুলোতে কেনাকাটা শুরু হয়েছে।
রাজশাহী নগরীর আরডিএ মার্কেট, হকার্স মার্কেট ও অন্যান্য মার্কেটে ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশ লক্ষ্য করা গেছে। সেইসাথে দেখা যাচ্ছে উচ্চবিত্ত থেকে নিন্মবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষদের ঈদের কেনাকাটা করতে। ঈদে মহিলা ও শিশুদের পোশাকের চাহিদা বেশি বলে ব্যবসায়ীরা জানান। তারা জানান, মহিলাদের পোশাকের মধ্যে বোরখা, লেহেঙ্গা, হিজাব, স্কাপসহ সব ধরনের কাপড়ই ক্রেতারা কিনছেন। কেনাকাটায় শাড়ী বেচাকেনা থেমে নেই একদম। বিভিন্ন ধরণের শাড়ী ক্রেতারা কিনছেন। ক্রেতারা মূলত জামদানি শাড়ি বেশি কিনছেন। ক্রোকারিজ পণ্য বিক্রেতারা জানান, আমাদের বেচাকেনা কদিন আগে একদম ছিলনা। আগের থেকে বেচাকেনা একটু বেড়েছে বলে জানান।
ক্রেতাদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, বিভিন্ন রেডিমেট এবং কাপড় পিসের দাম তুলনা মুলকভাবে বেশী রাখছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির প্রভাব পড়ছে ঈদের বাজারে। অনেকেই দামের কারণে পছন্দের পোশাক কিনতে না পেরে বাড়ী ফিরে যাচ্ছেন। অনেকেই আবার ফুটপাত এবং হকার্স মার্কেট গুলোতে ভীড় করছেন। এই শ্রেণীর ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তরা পরিবারগুলো।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঈদকে সামনে রেখে নিত্য নতুন ডিজাইনের পোশাক নিয়ে নিজেদের সাজিয়ে নিয়েছে রাজশাহীর মার্কেটে ছোট বড় দোকান গুলো। নিম্ন বিত্তদের ভরসাস্থল ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা পিছিয়ে নেই জামা কাপড় জুতো স্যান্ডেল নিয়ে। জরি পাথর কাঁচ চুমকীর কাজ করা জমকালো পোশাক শোভা পাচ্ছে দোকান গুলোয়। ডিসপ্লেতে রাখা হয়েছে। কাপড়ের প্যাকেটের মধ্যে মডেলদের ছবি। এসব আকৃষ্ট করছে ক্রেতাদের। এসব কাপড়ের পাশাপাশি বাংলাদেশী থ্রিপিসও কম যায়না।
অনেক ক্ষেত্রে ভারতীয় ডিজাইনকে ও টেক্কা দিয়েছে। অনেকে ক্রেতার মন বুঝে দেশী কাপড়ও ভারতীয় বলে বিক্রি করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সেলসম্যান বলেন, ‘যে দেবতা যে ফুলে তুষ্ট তাকে সেটি দেয়া হচ্ছে। ক্রেতার মন বুঝে ব্যবসা।’ ক্রেতারা জানান, যেভাবে যে পারছে দাম হাকাচ্ছে। এমন দেখা গেল একটা থ্রিপিসের দাম সাড়ে তিন হাজার চাওয়া হলো এরপর ক্রেতার মর্জি। যার কাছ থেকে যেমন পাওয়া যাচ্ছে কেটে নেয়া হচ্ছে। কারো কাছে একই থ্রি পিছ তিন হাজার থেকে এগারো’শো টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। যতই দাম হাঁকা হোক একটু সাহস করে কম দাম বলে দরাদরি করতে হবে। বিত্তবান যারা দরাদরি পছন্দ করেন না তারা পছন্দ হলেই বিক্রেতার দামে নিয়ে যাচ্ছেন। ব্যবসায়ীদের অবস্থা এমন দাড়িয়েছে বছরের এগারো মাসের ব্যবসা এক মাসেই করে নিতে চাচ্ছে। এমন অবস্থা ছেলেদের শিশুদের কাপড়ের দোকানেও। জুতো স্যান্ডেলের বাজারের একই অবস্থা। তবে জুতোর বাজার জমবে একেবারে শেষ মুহুর্তে। জামা কাপড়ের সাথে ম্যাচিং করে কেনা হবে জুতো স্যান্ডেল।
এবারের আবহাওয়ায় গরমভাব বেশী অনুভুত হচ্ছে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে ক্রেতারা ঝুকছেন সুতি কাপড়ের মত ভাল আরামদায়ক কাপড়ের দিকে। এজন্য থান কাপড়ও ভাল বিক্রি হচ্ছে। ভীড় বেড়েছে দরজি বাড়ি গুলোয়। কাপড় কিনে ছুটছেন পছন্দের টেইলার্সে। ভীষন ব্যাস্ত দরজীবাড়ি গুলো। কয়েকজন জানালেন মধ্য রমজানের পর থেকে অর্ডার নেয়া বন্ধ করে দেবেন। একদম শুরু দিকে যারা কাপড় দিয়েছেন এখন তাদের গুলো তৈরী করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন ঈদ আসতে এখনও সময় আছে। এ সময়ের মধ্যেই তাদের মুনাফা পাল্লাটা ভারী হয়ে উঠবে। অপর দিকে ক্রেতারা বাজার মনিটরিং এর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।