9791

05/18/2024 কেমন আছেন ঈশ্বরদীর লিচুকন্যারা?

কেমন আছেন ঈশ্বরদীর লিচুকন্যারা?

রাজ টাইমস

২৮ মে ২০২২ ০৩:২৬

প্রতি বছরই মধুমাসে আলোচনায় আসে লিচুর রাজধানী খ্যাত পাবনার ঈশ্বরদী। এ উপজেলার রসালো লিচুর কদর রয়েছে দেশজুড়ে। তাইতো ফলপ্রেমীদের বরাবরই আগ্রহ থাকে ঈশ্বরদীর লিচুর দিকে।

তবে অনেকেই হয়তো জানেন না ঈশ্বরদীর লিচু উৎপাদন, পরিচর্যা ও বিপণনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত প্রায় ৩০ হাজার নারী। তারা লিচু পাড়া, বাছাই ও গণনা কাজও করেন। তবে অনেকটাই অন্তরালে থেকে যান লিচু উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত লিচুকন্যারা। লিচুকন্যাদের পাশাপাশি বাগানমালিক ও চাষিদের পরিবারের নারী সদস্যরাও লিচু বাছাই ও গণনার কাজে অংশ নেন।

ঈশ্বরদীর মানিকনগর গ্রামের লিচু বাগানের মালিক রুহুল আমিন বলেন, ‘লিচু মৌসুমে ঈশ্বরদীর গ্রামাঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার নারী প্রত্যক্ষভাবে লিচুর বাগানে নানান কাজের সঙ্গে জড়িত থাকেন। বিশেষ করে লিচু পাকার পর বাছাই ও গণনার কাজ নারী শ্রমিকরাই বেশি করেন। এরা কেউ গৃহিণী, দিনমজুর, স্কুল-কলেজপড়ুয়া। তারা প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিভিন্ন বাগানে কাজ করেন।

মানিকনগর পূর্বপাড়া গ্রামের নারগিস বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘সংসারের বাড়তি আয়ের আশায় লিচু মৌসুমে সারাদিন কাজ করি। এতে যা আয় তা দিয়ে কেউ ছাগল কেনে, কেউ ঘরের আসবাবপত্রসহ সাংসারিক কাজে ব্যবহৃত হাঁড়ি-পাতিল কেনে। আবার অনেকে এ টাকা ছেলেমেয়ের পড়াশোনার কাজেও ব্যয় করে। লিচু মৌসুমে কাজ করতে পারলে অনেক টাকা আয় করা যায়।’

মিরকামারী গ্রামের লিচুকন্যা মর্জিনা খাতুন বলেন, ‘বাড়তি আয়ের আশায় সংসারের কাজের ফাঁকে লিচু বাগানে কাজ করি। সারাদিন কাজ শেষে ৪০০ টাকা হাজিরা দেওয়া হয়। অথচ একই কাজ করে পুরুষরা পায় ৬০০ টাকা। এখানেও নারীরা বৈষম্যের শিকার।’

জয়নগর গ্রামের কলেজছাত্রী আফরোজা খাতুন বলেন, ‘লিচু মৌসুমে কাজ করে আমার মতো শত শত স্কুল-কলেজের ছাত্রী। মজুরি হিসেবে যে টাকা পাই তা দিয়ে সারা বছরের পড়াশোনার খরচ হয়ে যায়। আমি স্কুলে পড়ার সময় থেকেই লিচুর কাজ করি।’

তবে বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী নারীদের পারিশ্রমিক কম বলে জানালেন আফরোজা। তিনি বলেন, মজুরি বাড়ানোর দাবি জানালেও বাগানমালিকরা এর চেয়ে বেশি মজুরি দিতে চান না।

জাতীয় কৃষি পদকপ্রাপ্ত লিচুচাষি আব্দুল জলিল কিতাব জাগো নিউজকে বলেন, লিচু বাছাই ও গণনার কাজে নারী শ্রমিকরা অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। নারী শ্রমিক না থাকলে লিচু বাছাই ও গণনার কাজ কঠিন হয়ে যেতো।

তিনি জানান, এ কাজে নারীদের ৪০০ টাকা মজুরি এবং সকাল-দুপুরে খাবার দিতে হয়। গত বছর নারীদের মজুরি ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। এবার ১০০ টাকা বাড়িয়ে ৪০০ করা হয়েছে। এতে নারী শ্রমিকদের আপত্তি থাকার কথা নয়।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]