ভোটের আগে বাসায় আ.লীগ নেতা

রাজশাহী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে শোকজ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২১ জুন ২০২৩ ০৫:৫৩; আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ০১:৩৩

সংগ্রহীত

ভোটগ্রহণের তিন দিন আগে বাসায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা কেন গিয়েছিলেন তা জানতে চেয়ে রাজশাহী সিটি নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল হোসেনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সোমবার নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন এই শোকজ নোটিশ দিয়েছেন তাকে। আবুল হোসেন রাজশাহীর জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।

মঙ্গলবার সকালে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন এই শোকজ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শোকজের জবাব আসার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তা নির্বাচন কমিশনে (ইসি) পাঠানো হবে। ভোটের আগের দিন এটা নিয়ে আর বেশি কিছু বলতে পারছি না।

আবুল হোসেন রাজশাহী নগরীর সাগরপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসায় একাই থাকেন। গত রোববার রাতে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন ওই বাসায় যান। এ সময় স্থানীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে মধ্যরাতে পুলিশ কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

বুধবারের সিটি নির্বাচনে লিমনের মামা নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী। তিনি এ ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলরও। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল গত বছরের অক্টোবরে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি সরভনগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।

লিমনের আরেক মামা ডাবলু সরকার নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া তার মামা জেডু সরকার নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক। আরেক মামা শাহনেওয়াজ সরকার সেডু নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এই পরিবারটি এবার সিটি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করছেন বলে অভিযোগ আছে।

ওই রাতে বাসা অবরুদ্ধ করে রাখার সময় রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাসিক দত্ত বলছিলেন, লিমনসহ মোট তিনজন নির্বাচন কর্মকর্তার বাসায় এসেছিলেন। তাদের কাছে একটি ব্যাগ ছিল। তারা নির্বাচন কর্মকর্তার বাসায় ঢুকলে লিমন বাথরুমে ঢুকে যান। তাকে বাথরুম থেকে বের করার সময় সঙ্গে আনা ব্যাগ নিয়ে অন্য দুজন দ্রুত পালিয়ে যান।

রাসিকের দাবি, ভোটের তিন দিন আগে নির্বাচন কর্মকর্তাকে ঘুস দিতে ওই ব্যাগে টাকা আনা হয়েছিল। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাকে ঘুস দিয়ে লিমন তার কাউন্সিলর প্রার্থী মামার বিজয় নিশ্চিত করতে এসেছিলেন। পাশাপাশি নৌকার পরাজয় করতে ঘুষ দেওয়া হচ্ছিল বলেও দাবি করেন তিনি।

রাতে লিমনকে নির্বাচন কর্মকর্তার বাসা থেকে উদ্ধারের পর পুলিশ হেফাজতেই রাখা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরদিন সোমবার তাকে তার বাবার জিম্মায় দেওয়া হয়। অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমনের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তার মোবাইল বন্ধ। তার বাবা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মীর ইকবালও এ নিয়ে কথা বলতে চাননি।

শোকজ করার বিষয়ে নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেনের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তারও মোবাইল বন্ধ। মঙ্গলবার সকালে তার কার্যালয়ে গিয়ে পাওয়া যায়নি। এ দিন নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণের স্থানেও তাকে দেখা যায়নি। তবে ঘটনার রাতে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন।

ওই রাতে তিনি বলেছিলেন, লিমন আমার পূর্বপরিচিত। তিনি একটি বিষয়ে কথা বলার জন্য এসেছিলেন। বাসার বাইরে দাঁড়িয়েই তিনি কথা বলতে চাচ্ছিলেন। আমিই তাকে বাসার ভেতরে নিয়ে এলাম। কারণ আমার বাসায় আমি ছাড়া কেউ থাকে না। লিমন ঢোকামাত্র কিছু ছেলে এসে তাকে আটকে রাখে। ঘুস দেওয়ার জন্য লিমন এসেছিলেন এটা সত্য নয়।

সূত্র: যুগান্তর।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top