আপেলের কার্টনে সিগারেট আমদানি, রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা
রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:০১; আপডেট: ৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৪:০৭

জাল ব্যান্ডরোলে শত শত কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা নস্যাৎ করার রেশ এখনো কাটেনি। এরই মধ্যে ফ্রেশ আপেলের মধ্যে সিগারেট আমদানিতে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা নস্যাৎ করে দিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা ২২ লাখ ১৯ হাজার শলাকা সিগারেট জব্দ করেছে। যাতে প্রায় ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ সালাহউদ্দীন রিজভী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, চট্টগ্রামের স্টেশন রোডস্থ কোতওয়ালী থানাধীন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মারহাবা ফ্রেশ ফ্রুটস। প্রতিষ্ঠানটি সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ফ্রেশ আপেল ঘোষণা দিয়ে এক কন্টেইনার পণ্য আমদানি করে। চালানটি আমদানির জন্য ৬ ডিসেম্বর ডাচবাংলা ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখায় এলসি খোলে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। পণ্য খালাসে জিমি এন্টারপ্রাইজ নামে সিএন্ডএফ এজেন্টের মাধ্যমে ২০ ডিসেম্বর বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে।
তিনি আরো জানান, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের পোর্ট কন্ট্রোল ইউনিট (পিসিইউ)ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার আওতায় রপ্তানিকারক, রপ্তানিকারকের ওয়েবসাইট, তৈরি দেশ, আমদানিকারকের ব্যবসায়ের ধরণ ও ঠিকানা, পণ্যের বর্ণনা প্রভৃতি বিশ্লেষণ করে পণ্যচালানটিতে অসত্য ঘোষণায় পণ্য আমদানির বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা লাভ করে। পরবর্তীতে এই তথ্যের ভিত্তিতে বিগত ২২ ডিসেম্বর কাস্টম হাউসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) কর্তৃক পণ্য চালানটির খালাস কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
ডেপুটি কমিশনার জানান, এআইআর পণ্যচালানটি শতভাগ কায়িক পরীক্ষার লক্ষ্যে পণ্যের প্যাকেট কেটে কায়িক পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। কন্টেইনারে থাকা এক হাজার ১২০টি ফ্রেস আপেল এর কার্টন শতভাগ কায়িক পরীক্ষা শেষে ৭৫৪টি কার্টনের মধ্যে আপেলের নিচে ইনার কার্টনে লুকায়িত অবস্থায় বিভিন্ন ব্রান্ডের বিদেশি সিগারেট পাওয়া যায়। কার্টনসমূহের মধ্যে মোট ২২ লাখ ১৯ হাজার শলাকা (মন্ড ব্যান্ড ৬ লাখ ৯১ হাজার ৪৮০ শলাকা, ইজি ব্যান্ড ১৪ লাখ ৮ হাজার ৭২০ শলাকা, অরিস ব্যান্ড ১ লাখ ১৮ হাজার ৮০০ শলাকা) সিগারেট পাওয়া যায়। যার আনুমানিক মূল্য এক কোটি ৩৭ লাখ টাকা এবং যার মাধমে প্রায় ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা করা হয়। এছাড়াও পণ্যচালানটিতে ১৫ হাজার ৯৮ কেজি ফ্রেস আপেল পাওয়া যায় ও দুই হাজার ৪৮৮ কেজি জিপি শিট সিগারেটের কার্টনের মধ্যে পাওয়া যায় (৩৬৬ কার্টনে শুধুই ফ্রেস আপেল পাওয়া যায় এবং অবশিষ্ট ৭৫৪টি কার্টনের মধ্যে আপেলের নিচে লুকায়িত অবস্থায় সিগারেট পাওয়া যায়)।
রিজভী জানান, পণ্যচালানটিতে শর্ত সাপেক্ষে আমদানিযোগ্য ও উচ্চ শুল্কের পণ্য সিগারেট আমদানি করে আনুমানিক প্রায় ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা করা হয়। কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস প্রশাসনের কঠোর নজরদারি এবং কর্মকর্তাদের নিষ্ঠা ও আন্তরিকতায় পূর্বের ন্যায় এই অপচেষ্টাও নস্যাৎ করে দেয়া সম্ভব হয়েছে। এ ঘটনায় দোষি ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার।
বিষয়: রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: