এখনো আতঙ্ক কাটেনি, মণিপুরে বেশিরভাগ স্কুলই বন্ধ

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ৭ জুলাই ২০২৩ ০৩:৪০; আপডেট: ২১ মে ২০২৪ ০০:০১

ছবি: সংগৃহীত

পাহাড়ি এ রাজ্যটির বেশিরভাগ অংশে সহিংসতা থিতিয়ে এলেও মিয়ানমার সীমান্তবর্তী কিছু এলাকায় এখনও বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে। দুই মাসের এই গোষ্ঠীগত সহিংসতা শতাধিক লোকের প্রাণ কেড়ে নেওয়ার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টায় রাজ্য সরকার স্কুল খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিলেও মণিপুরের বেশিরভাগ স্কুলই বন্ধ। ভয় আতংক এখনো কাটেনি।

শিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তার বরাতে জানা গেছে, ভারতের উত্তরপূর্বের এই রাজ্যটির সরকার বুধবার থেকে স্কুল খোলার নির্দেশ দিলেও এদিন সকালে অধিকাংশ স্কুলেই শিক্ষক, শিক্ষার্থী কিংবা কোনো কর্মচারীকে দেখা যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা জানান, চারটি বেসরকারি স্কুল খুলেছে, কিন্তু সরকারি সব স্কুলই বন্ধ ছিল। ভয়াল এই পরিস্থিতিতে বাচ্চাদের এখনি স্কুলে পাঠাতে নারাজ অভিভাবকরা।

মণিপুরে সংঘর্ষ

মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলের ব্যবসায়ী ইবোতম্বি সিং বলেন, মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা বিরাজ করছে, যে কারণে আমরা আমাদের শিশুদের স্কুলে পাঠাতে রাজি হইনি। পাহাড়ি এ রাজ্যটির বেশিরভাগ অংশে সহিংসতা থিতিয়ে এলেও মিয়ানমার সীমান্তবর্তী কিছু এলাকায় এখনও বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে। তার মধ্যেই রাজ্যের শাসকদল বিজেপি বুধবার থেকে ৫ বছর থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের স্কুলগুলো খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

শিক্ষা বিভাগের ওই কর্মকর্তা এবং রাজ্যটির অনেক বাসিন্দা বুধবার বেশিরভাগ স্কুল বন্ধ ছিল বলে জানালেও বার্তা সংস্থা এএনআইয়ের ফুটেজে কয়েক ডজন শিক্ষার্থীকে ইম্ফলের একটি স্কুলে শ্রেণিকক্ষের ভেতর ক্লাস করতে ও স্কুলপ্রাঙ্গণে হাঁটতে দেখা গেছে।

মণিপুরের দুই প্রভাবশালী গোষ্ঠী কুকি ও মেইতেইয়ের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিনের, ৩ মে ওই বিরোধ সংঘর্ষে রূপ নেয়। রাজ্যের মোট বাসিন্দার ১৬ শতাংশ কুকিরা পাহাড়ে থাকে, তারা সরকারের কাছ থেকে চাকরি ও শিক্ষাখাতে কোটাসহ নানান সুবিধা পায়।

অন্যদিকে নিচু এলাকার ভূমির বেশিরভাগই আছে মেইতেইদের নিয়ন্ত্রণে, তারা রাজ্যের বাসিন্দাদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠও। ফেব্রুয়ারিতে ভারতের একটি আদালত কুকিদের জন্য থাকা বিশেষ সুবিধাগুলো মেইতেইদেরও দেওয়ার নির্দেশ দিলে দুই গোষ্ঠীর বিরোধ চরমে ওঠে। রাজ্যটিতে দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা এই গোষ্ঠীগত সংঘাত এরই মধ্যে অন্তত ১১৮ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, বাস্তুচ্যুত করেছে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষকে।

ভারতের মণিপুরে সহিংসতা

সংঘর্ষ থামাতে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকদফা শান্তি আলোচনা হলেও, শেষ পর্যন্ত তা সমাধান আনতে পারেনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীকে ‘কঠোর পরিশ্রম’ ও অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করতে বললেও বিবদমান দুটি গোষ্ঠী মিয়ানমার থেকেও সাহায্য পাচ্ছে সন্দেহ করে অনেকেই উদ্বিগ্ন।

ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব গিরিধর আরমানি ও মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং কয়েকদিন আগেই তাদের নিজ নিজ ভূখণ্ডে অপর দেশের জন্য ক্ষতিকারক এমন কিছুর অনুমতি না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন, বলেছে নয়া দিল্লি।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top