হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ : যা বললেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স
রাজ টাইমস ডেস্ক: | প্রকাশিত: ১০ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:০২; আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৫ ২০:১৫
-2023-10-10-09-02-04.jpg)
হামাস-ইসরাইল যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নিজস্ব অবস্থান ব্যক্ত করেছে সৌদি আরব। দেশটির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান চলমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে ফোন করেছেন। ক্রাউন প্রিন্সের অফিসে থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
এই ফোনে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, 'চলমান উত্তেজনা প্রশমনে সকল আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পক্ষগুলোকে সম্পৃক্ত করার জন্য সম্ভব সকল প্রয়াস চালাচ্ছে' সৌদি আরব।
বিবৃতিতে আরো বলা হয় যে তিনি বলেছেন, সৌদি আরব 'ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য অধিকার অর্জন, সম্মানজনক জীবন লাভের সংগ্রামে, তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে এবঙ ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে থাকবে।'
শনিবার শুরু হওয়া গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন এবং ইসরাইলের মধ্যকার যুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রায় ৯০০ ইসরাইলি নিহত হয়েছে।
আর ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে অন্তত ৬৮৯ জন। এদের মধ্যে ৯১টি শিশু রয়েছে। এছাড়া ৩,৭২৬ জন আহত হয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
গাজাভিত্তিক প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের ইসরাইলের অভ্যন্তরে হামলা নিয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যক্ত করেছে ইরান। উল্লেখ্য, ইরানের সমর্থন পেয়েই হামাস এই হামলা করে থাকতে পারে বলে অভিমত প্রকাশ করছে যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই তাদের একটি রণতরী এবং অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান মধ্যপ্রাচ্যের দিকে পাঠিয়ে দিয়েছে। অনেক বিশ্লেষক আশঙ্কা করছেন, ইরানকে টার্গেট করেই মধ্যপ্রাচ্যে রণসজ্জা বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
জাতিসঙ্ঘে পাঠানো এক বিবৃতিতে ইরান সুস্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে ইসরাইলের ভেতরে হামাসের নজিরবিহীন হামলার সাথে তার কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই।
বিবৃতিতে ইরান জানা, 'আমরা ফিলিস্তিনিদের প্রতি দ্ব্যর্থহীন সমর্থন প্রকাশ করছি। তবে আমরা ফিলিস্তিনিদের প্রতিক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত নই। এটি পুরোপুরি খোদ ফিলিস্তিনের দায়।'
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, 'জায়নবাদী জান্তার অবৈধভাবে সাত দশক নির্যাতনমূলক দখলতারিত্ব এবং জঘন্য অপরাধের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের গ্রহণ করা দৃঢ় পদক্ষেপ পুরোপুরি একটি বৈধ প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা।
গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সাথে ইসরাইলের লড়াই চলছে। এই প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন দেশ তাদের অবস্থান প্রকাশ করছে। রাশিয়া অবিলম্বে এই যুদ্ধ বন্ধ করে অর্থপূর্ণ সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভায় এক বার্তায় জাতিসঙ্ঘে নিযুক্ত রুশ দূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, 'অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করে যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং অর্থপূর্ণ আলোচনা করতে হবে।'
তিনি বলেন, এই যুদ্ধের 'আংশিক কারণ হলো অমীমাংসিত ইস্যুগুলো।'
গত শনিবার এই যুদ্ধ শুরু হয়। ইতোমধ্যেই উভয় পক্ষের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এই যুদ্ধের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লানকেন বলেন, সৌদি-ইসরাইল সম্পর্ক স্বাভাবিকিকরণের প্রক্রিয়া দেখে হামাস এ যুদ্ধ শুরু করতে পারে। তাদের এ আক্রমণ সৌদি-ইসরাইল সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে।
রোববার (৮ অক্টোবর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের উদ্ধৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারের গণমাধ্যম আলজাজিরা।
সিএনএনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ব্লিঙ্কেন বলেন, ইসরাইল-ফিলিস্তিনের চলমান যুদ্ধে কয়েকজন মার্কিন নাগরিক নিহত হয়েছে। আমরা এ সংবাদ নোট করেছি। ওয়াশিংটন এখন তাদের বিশদ পরিসংখ্যান যাচাই করতে চাইছে।
মার্কিন উপ-জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন ফিনার ফক্স নিউজকে বলেছেন, ‘হামাসের এই আক্রমণ যেন সৌদি-ইসরাইলের সম্পর্কের স্বাভাবিকীকরণ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। উভয় দেশের সম্পর্কের স্বাভাবিকীকরণ প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ইসরাইলের ওপর হামলা কেন হয়েছে, এ যুদ্ধে ইরান কী ভূমিকা পালন করতে পারে বা সৌদি-ইসরাইলের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করা এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল কিনা, খুব তাড়াতাড়ি এ বিষয়গুলোর উত্তর খোঁজা দরকার। আমরা মনে করি, এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার মধ্যে উভয় দেশের কল্যাণ হবে।’
উল্লেখ্য, শনিবার হঠাৎ করেই ইসরাইলে কয়েক হাজার রকেট হামলা চালানোর পর বেড়া ভেঙে ইসরাইলে ঢুকে পড়ে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। গাজাভিত্তিক এ সংগঠনের যোদ্ধাদের হামলায় এখন পর্যন্ত ৬০০-এরও বেশি ইসরাইলি নিহত হয়েছে।
সূত্র : আলজাজিরা এবং অন্যান্য
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: