ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে সংঘাত কেন, কবে থেকে?

রাজ টাইমস | প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:০৬; আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৫ ২১:২৬

ছবি: প্রতীকী

প্রায় আট দশক ধরে সংঘাত চলছে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল অঞ্চলে। এই সংঘাত-সহিংসতা ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। শুধু ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের ভেতরেই সীমাবদ্ধ না থেকে এই ইস্যু নিয়ে বিরোধের হাওয়া ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মধ্যে।

গত শনিবার (৭ অক্টোবর) ভোরে হামাস যোদ্ধারা অতর্কিতে ইসরায়েলে প্রবেশ করে হামলা চালায়। জবাবে গাজায় বোমাবর্ষণ শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ইসরায়েলের বিমান হামলায় গাজা শহরের বিভিন্ন এলাকা ধূলোয় মিশে গেছে। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে অন্তত এক হাজার এবং গাজায় ৮০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানাচ্ছে। ইসরায়েল সর্বাত্মক অবরোধ আরোপের পাশাপাশি হামলা আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।

তবে সময়ের চাকা ঘুরে আবার আলোচনায় উঠে আসা এই বিরোধের শেকড় গাঁথা আছে ইতিহাসের গভীরে।

কীভাবে ইসরায়েলের জন্ম?
বলা হয়, ইসরায়েলের জন্ম মূলত বেলফোর ঘোষণা থেকে। ১৯১৭ সালের ২ নভেম্বর ব্রিটেনের তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব আর্থার বেলফোর ব্রিটিশ ইহুদি সম্প্রদায়ের সদস্য ও আন্দোলনকারীদের নেতা লিওনেল ওয়াল্টার রথশিল্ডকে সম্বোধন করে একটি চিঠি লিখেছিলেন। চিঠিটি ছিল মাত্র ৬৭ শব্দের। এই চিঠিতে ‘ইহুদি জনগোষ্ঠীর জন্য ফিলিস্তিনে আবাস প্রতিষ্ঠা’ এবং এর অর্জন সহজতর করার বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারের প্রতিশ্রুতির কথা বলা হয়। চিঠিটি ‘বেলফোর ঘোষণা’ নামে পরিচিত।

অর্থাৎ একটি ইউরোপীয় শক্তি ইহুদিবাদী আন্দোলনকে এমন একটি দেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যেখানে ফিলিস্তিনি আরবরা সংখ্যায় ৯০ শতাংশের বেশি ছিল। ১৯২৩ সালে এই ইস্যুতে একটি ব্রিটিশ ম্যান্ডেট তৈরি করা হয়েছিল যা ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল। ইউরোপে নাৎসিবাদের কারণে ইহুদিরা পালাচ্ছিল এবং সেই সময়ে ব্রিটিশরা ব্যাপকহারে ফিলিস্তিনে ইহুদি অভিবাসনকে সহায়তা করেছিল।

এদিকে ফিলিস্তিনিরা তাদের দেশে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল। ১৯৩৬ সালে তারা আরব ন্যাশনাল কমিটি গঠন করে। তারা ক্রমবর্ধমান ইহুদি বসতির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অবরোধ ঘোষণা করে এবং ইহুদিদের উৎপাদিত পণ্য বর্জনের ডাক দেয়।

তবে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকরা সব উপায়ে ইহুদি বসতি স্থাপনাকারীদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। ইহুদিদের প্যারামিলিটারি বাহিনী গঠনেও সহায়তা করে ব্রিটেন। ১৯৩৭ থেকে ১৯৩৯ সাল নাগাদ তিন বছরে আরবদের সঙ্গে ইহুদি সশস্ত্র যোদ্ধাদের লড়াইয়ে অন্তত পাঁচ হাজার ফিলিস্তিনি মারা যায়। ১৫ থেকে ২০ হাজার ফিলিস্তিনি আহত ও সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ বন্দি হয়।

১৯৪৭ সাল নাগাদ ইহুদিরা ফিলিস্তিনের ছয় শতাংশ দখল করে নেয়। তাদের মোট জনসংখ্যা দাঁড়ায় ফিলিস্তিনের ৩৩ শতাংশে। তখনও ৬৭ শতাংশ আরব জনগোষ্ঠী ছিল দেশটির ৯৪ শতাংশ জমির মালিক।

সংঘাতের শুরু কোথায়?
এই সংঘাতের একদিকে রয়েছে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা, আরেকদিকে রয়েছে ইসরায়েলের নিরাপত্তার দাবি। ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠাতা ডেভিড বেন গুরিয়ন ইহুদিদের জন্য এই অঞ্চলে একটি ’নিরাপদ আবাসভূমি’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছিলেন। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়নের মুখে পালিয়ে বেড়াতে থাকা ইহুদিরা নিরাপত্তা পাওয়ার আশায়ই ইসরায়েলে এসে আশ্রয় নেন।

ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা আসার পর দিন থেকে ব্রিটিশ শাসনাধীন ফিলিস্তিনে যে যুদ্ধ শুরু হয়, তাতে সাড়ে সাত লাখের মতো আরব নিজেদের আবাস ছেড়ে পার্শ্ববর্তী জর্ডান, লেবানন, সিরিয়ায় আশ্রয় নেন। অনেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে গাজা, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে বসবাস শুরু করেন। নিহত হয় অন্তত ১৫ হাজার ফিলিস্তিনি। ইহুদিরা দেশটির ৭৮ শতাংশ দখল করে নেয়। বাকি ২২ শতাংশ ছিল এর ভেতরেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন এলাকা।

যুক্তরাষ্ট্রের ঘণিষ্ট মিত্র ইসরায়েল ওই সময় দাবি করেছিল, রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেওয়ার পরদিনই পাঁচটি আরব দেশ তাদের আক্রমণ করেছে এবং এই হামলার কারণেই এতো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

১৯৪৯ সালে অস্ত্রবিরতির কারণে যুদ্ধ সাময়িক স্থবির হলেও এই সংঘাত মূলত পুরোপুরি আর থামেনি কখনও। ফিলিস্তিনিরা ১৯৪৮ সালের ১৫ মে যুদ্ধ শুরুর দিনটিকে প্রতি বছর ‘নাকাবা’ দিবস বা বিপর্যয়ের দিন হিসেবে পালন করে।

ইসায়েলের বসতির ফাঁকে ফোঁকরে এখনও যেসব আরব-ফিলিস্তিনি বসবাস করছে, তাদেরই বিভিন্ন আন্দোলনরত গোষ্ঠী লড়াই করে চলেছে। ইসরায়েলের জনসংখ্যার তুলতায় ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা এখন প্রায় ২০ শতাংশের মতো।

প্রধান যুদ্ধ কোনগুলো?
১৯৪৯ সালের পর ১৯৬৭ সালে ইসরায়েল প্রথমবারের মতো ও পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মিশর ও সিরিয়ায় হামলা করে। এটা ‘ছয় দিনের যুদ্ধ’ বা আরবিতে ‘নাকসা’ হিসেবে পরিচিত। এই যুদ্ধেই পশ্চিম তীর, জর্ডান নিয়ন্ত্রিত পূর্ব জেরুজালেম ও সিরিয়ার গোলান মালভূমি দখল করে নেয় ইসরায়েল।

১৯৭৩ সালে মিশর ও সিরিয়া সুয়েজ খাল ও গোলান মালভূমি বরাবর ইসরায়েলি স্থাপনাগুলোয় হামলা চালায়। শুরু হয় ‘ইয়োম কিপপুর যুদ্ধ’। তবে তিন সপ্তাহের মধ্যেই উভয় দেশের বাহিনীকে হটিয়ে দেয় ইসরায়েল।

১৯৮২ সালে ইসরায়েলি বাহিনী লেবাননে আক্রমণ চালায়। ১০ সপ্তাহের সংঘাতে ইয়াসির আরাফাতের (ফিলিস্তিনের সাবেক নেতা) নিয়ন্ত্রণাধীন হাজারো যোদ্ধাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে। ২০০৬ সালে লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী দুই ইসরায়েলি সেনাকে আটক করলে দুই দেশের মধ্যে আবারও সংঘাত সৃষ্টি হয়।

১৯৬৭ সালে মিশরের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া গাজা উপত্যকা ২০০৫ সালে ছেড়ে দেয় ইসরায়েল। কিন্তু গাজার নিয়ন্ত্রণকারী হামাস গোষ্ঠী মাঝে মধ্যেই রকেট হামলা চালালে ইসরায়েল বিমান থেকে হামলা করে। এরকম বিরোধের জের ধরেই ২০০৬, ২০০৮, ২০১২, ২০১৪ ও ২০২১ সালে বড় ধরনের ইসরায়েলি আক্রমণ-আগ্রাসনের ঘটনা ঘটেছে।

এসব যুদ্ধের বাইরেও ১৯৮৭ সালে থেকে ১৯৯৩ সাল এবং ২০০০ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ফিলিস্তিনিদের ডাকা দুটি ‘ইন্তিফাদা’ বা ’ইসলামি জাগরণ’-এর সময় ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে হামাসের আত্মঘাতী বোমা হামলার ঢেউ তৈরি হয়েছে এবং বড় ধরনের সংঘাত দেখা গেছে। ইন্তিফাদা বলতে সংহতি সমাবেশ, গণবিক্ষোভ, আইন অমান্য, ধর্মঘট এসবকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর হিসাবে, প্রথম ইন্তিফাদার সময় এক হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিকে হত্যা এবং প্রায় পৌনে দুই লাখ মানুষকে গ্রেফতার করা হয়।

শান্তি প্রতিষ্ঠায় কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?
১৯৭৯ সালে মিশর ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি সই হয়, যা দেশদুটির মধ্যে তিন দশকের বৈরিতা অবসানে ভূমিকা রাখে।

১৯৯৩ সালে ফিলিস্তিনের সীমিত সায়ত্বশাসনের বিষয়ে অসলো চুক্তিতে সম্মত হন ফিলিস্তিনের নেতা ইয়াসির আরাফাত ও ইসরায়েলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আইজ্যাক রবিন।

১৯৯৪ সালে ইসররায়েল ও জর্ডানের মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

২০০০ সালে ক্যাম্প ডেভিড সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক ও ফিলিস্তিনের ইয়াসির আরাফাত আলোচনায় বসলেও শান্তি চুক্তির প্রক্রিয়া ব্যর্থ হয়।

২০০২ সালে আরব দেশগুলোর পক্ষ থেকে ইসরায়েলকে সব সেনা প্রত্যাহার করে ১৯৬৭ সালের আগের মানচিত্রে ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়, যার বিনিময়ে ইসরায়েলের সঙ্গে বাকি সব আরব রাষ্ট্রের স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপন করা হবে বলে আশ্বাস ছিল। ইসরায়েল এতে সম্মত না হওয়ায় নিজ দেশে উদ্বাস্তু হয়ে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ভাগ্য বদলায়নি।

২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা সফল হয়নি।

পরবর্তীতে ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার যুক্তরাষ্ট্রের চিরাচরিত দুই দেশ নীতিকে প্রত্যাখ্যানের অবস্থানে অটল থাকায় ফিলিস্তিনিরা আর কোনো আলোচনায় অংশ নিতে আগ্রহী হয়নি।

শান্তি প্রক্রিয়ার অবস্থা কী এখন?
যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েল ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টায় আছে। তবে ফিলিস্তিন অঞ্চলে নতুন সৃষ্ট সংঘাতের ফলে মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করেছে বা সম্পর্কোন্নয়নের প্রক্রিয়ায় আছে তারা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো।

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে মূল বিরোধ কী নিয়ে?
দুই রাষ্ট্র সমাধান, ইসরায়েলি বসতি, জেরুজালেমের নিয়ন্ত্রণ, উদ্বাস্তু সমস্যা— এগুলোই মূলত যুগের পর যুগ ধরে চলমান বিরোধের মূল ইস্যু।

দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান— এটা­ বলতে বোঝানো হয় ইসরায়েলের পাশাপাশি পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকা নিয়ে ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি রাষ্ট্র গঠন। তবে হামাস এই দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান প্রত্যাখ্যান করে আসছে। তারা ইসরায়েলকে ধ্বংস করার শপথে অটল আছে। আর ইসরায়েল বলেছে, একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে অবশ্যই নিরস্ত্রীকরণ করতে হবে যাতে ইসরায়েলের জন্য তারা কোনও ধরনের হুমকি হয়ে দেখা না দেয়।

বসতি— পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশ ১৯৬৭ সালে ইসরায়েলের দখলকৃত ভূমিতে নির্মিত ইহুদি বসতিগুলোকে অবৈধ বলে মনে করে। তবে ইসরায়েলের দাবি, এই ভূমিতে তাদের অধিকার ঐতিহাসিক এবং বাইবেলেও এর সম্পর্কে উল্লেখ করে। তাদের অব্যাহত সম্প্রসারণ ফিলিস্তিনের সঙ্গেই শুধু নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যেও সবচেয়ে বিতর্কিত বিষয়গুলোর একটি।

জেরুজালেম— আল আকসা মসজিদসহ মুসলিম, খ্রিস্টান ও ইহুদি সম্প্রদায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো নিয়ে পূর্ব জেরুজালেমের দখল নিতে চায় ফিলিস্তিন। তারা এখানে নিজেদের রাষ্ট্রের রাজধানী স্থাপন করতে চায়। তবে ইসরায়েলের কথা হলো, জেরুজালেম তাদের ‘অবিভাজ্য ও চিরন্তন’ রাজধানী হিসেবে থাকবে। পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি পায়নি। তবে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিতর্কিত এই শহরে ইসরায়েলের এখতিয়ারের পরিমাণ নির্দিষ্ট না করেই তাদের দাবিতে সমর্থন দেন এবং ২০১৮ সালে সেখানে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তর করেন।

শরণার্থী— বর্তমানে প্রায় ৫৬ লাখ ফিলিস্তিনি শরণার্থী বা উদ্বাস্তু হিসেবে জীবনযাপন করছে। ১৯৪৮ সাল থেকে বিভিন্ন সময় বাস্তুহারা হয়ে তারা গাজা, পশ্চিম তীর, জর্ডান, লেবানন, সিরিয়ায় বসবাস করছে। নিবন্ধিত শরণার্থীদের প্রায় অর্ধেক বসবাস করছে ঘিঞ্জি শরণার্থী শিবিরগুলোতে। ফিলিস্তিনি নেতারা বহু বছর ধরে দাবি করে আসছেন, এই শরণার্থীদের নিজের মাটিতে ফিরে আসার সুযোগ দেওয়া হোক। তবে ইসরায়েলের উত্তর হলো, ফিলিস্তিনিদের যে কোনও স্থাপনা করতে হবে তাদের সীমানার বাইরে।

ফিলিস্তিনে কেন অন্তর্দ্বন্দ্ব?
বিশ্ব সম্প্রদায় ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। কিন্তু হামাসকে অনেকেই ‘সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠি’ হিসেবে গণ্য করে। ২০০৭ সালে ইসরায়েলকে হঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে গাজা উপত্যকায় ক্ষমতায় আসে তারা। তবে তাদের সঙ্গে পশ্চিম তীর তথা ফিলিস্তিনের মূল রাজনৈতিক দল ফাতাহ’র সুসম্পর্ক গড়ে ওঠেনি।

পিএলও তথা ফাতাহ নেতা ইয়াসির আরাফাত ২০০৪ সালে মারা যান এবং এর এক বছর পরে দ্বিতীয় ইন্তিফাদা শেষ হয়। এক বছর পর ফিলিস্তিনিরা প্রথমবারের মতো সাধারণ নির্বাচনে ভোট দেয়। নির্বাচনে হামাস সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে ফাতাহ-হামাস গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। কয়েক মাস ধরে চলা সংঘাতে শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হয়।

পরে হামাস গাজা উপত্যকা থেকে ফাতাহকে বহিষ্কার করে। ফাতাহ পশ্চিম তীরের কিছু অংশের নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করে।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স ও আল জাজিরা।



বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top