কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বদলে দিতে পারে ভবিষ্যতের বাঁক !

রাজটাইমস ডেস্ক: | প্রকাশিত: ২ জানুয়ারী ২০২৪ ০৯:৫১; আপডেট: ১ মে ২০২৪ ০৯:৩১

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ববাসীর জন্য কী অপেক্ষা করছে নতুন বছরে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন, অপুষ্টির মতো অনেক চ্যালেঞ্জ সামনে। আবার এ বছর বিশ্বের ৬০টি দেশে নির্বাচন। সামনে যেমন চ্যালেঞ্জ আছে, তেমনি আছে আশা-জাগানিয়া স্বপ্ন। মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস সেই স্বপ্নকেই তুলে ধরেছেন তাঁর লেখায়। ১৯ ডিসেম্বর গেটসনোট ডট কমে প্রকাশিত তাঁর লেখাটি দুই কিস্তিতে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হচ্ছে। আজ প্রকাশিত হলো প্রথম কিস্তি।

২০২৩ সালে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো নিয়ে যদি আপনি ভাবতে বসেন, তাহলে মাথায় কী আসবে? আমার কাছে ২০২৩ এমন একটি বছর, যে বছরে আমি নানা হয়েছি। যে বছরে আমি ভালোবাসার মানুষদের সঙ্গে চমৎকার সময় কাটিয়েছি। আর এই বছরেই আমি প্রথম গুরুত্বপূর্ণ নানা কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করেছি।

২০২৩ সাল আমাদের একটি আভাস দিয়েছে—এআই কীভাবে ভবিষ্যৎ বদলে দেবে। বছর শেষে আমাকে ভবিষ্যৎ একটি বিশ্ব আগের চেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে। সেই বিশ্বে উত্তরাধিকারসূত্রে বর্তমান তরুণেরা বসবাস করবেন। আমি ভাবছি সেই বিশ্ব নিয়ে, যেখানে আমার নাতনি থাকবে। ভাবছি, কয়েক দশক পরে তার প্রজন্মের বিশ্বটা কেমন হবে।

ইন্টারনেটের শুরুর দিকের কথা চিন্তা করে দেখুন। সে সময় প্রথম দিকে হয়তো আপনি জানতেন না, কত মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। তবে দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারনেটের সঙ্গে মানুষের পরিচিতি বাড়তে থাকল। আর একদিন আপনি জানতে পারলেন, বেশির ভাগ মানুষের ই-মেইল আইডি রয়েছে, তাঁরা অনলাইন থেকে জিনিসপত্র কেনাকাটা করেন এবং কোনো প্রশ্নের জবাব পেতে সার্চ ইঞ্জিনের দ্বারস্থ হন।

প্রযুক্তিতে যে পরিবর্তন আসছে, আমরা এখন একেবারে সেটার শুরুর দিকে রয়েছি। সময়টা বিভ্রান্তিকর, একই সঙ্গে রোমাঞ্চকর। কীভাবে এআইয়ের সর্বোত্তম ব্যবহার করা যাবে, সেটি যদি আপনি না বুঝে থাকেন—তাহলে আপনি কিন্তু একা নন। আমিও ভেবেছিলাম, এ বছর গেটস ফাউন্ডেশনের কৌশলগুলো পর্যালোচনা করতে এআইয়ের সহায়তা নেব। তবে অভ্যাস ত্যাগ করাটা কঠিন। শেষ পর্যন্ত কৌশল পর্যালোচনায় সেই পুরোনো পথেই হাঁটলাম।

অবশ্য ২০২৩ সাল শুধু এআইয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়। এ বছরে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং ইথিওপিয়ায় যুদ্ধ-পরবর্তী প্রভাবের জেরে লাখ লাখ মানুষ অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট ভোগ করছেন। ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা আমার হৃদয় ভেঙে দিয়েছে। সুদানের মানুষকে নিয়েও আমার একই অনুভূতি। একই সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার খেসারত দিতে হচ্ছে অসংখ্য মানুষকে। আবার বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি ও ধীর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির শিকার হচ্ছে পরিবারগুলো।

সন্দেহ নেই, সময়টা চ্যালেঞ্জের। তবে ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি এখনো আশাবাদী। এখন যে গতিতে উদ্ভাবন হচ্ছে, তা আগে কখনো দেখা যায়নি। জটিল কিছু সমস্যার সমাধানে বড় অগ্রগতি হয়েছে। যেমন—আলঝেইমার, স্থূলতা ও সিকল সেল রোগের ক্ষেত্রে যে অগ্রগতি হয়েছে, তা লাখ লাখ মানুষকে ভালো রাখতে কাজে আসবে। আমার বন্ধু প্রয়াত হ্যানস রসলিং একটি কথা বলতেন—‘কোনো কিছু খারাপ হতে পারে এবং সেখান থেকে ভালোও হতে পারে।’

বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, শিক্ষা, লিঙ্গসমতা—এমন অনেক কিছুর উন্নয়নে গেটস ফাউন্ডেশনে আমার সহকর্মীরা নিবেদিত। অংশীদারদের সঙ্গে মিলে তাঁরা যেসব কাজ করছেন, তা নিয়ে আমি কয়েক হাজার পাতা লিখে ফেলতে পারি। তবে এই চিঠিতে সবচেয়ে যুগান্তকারী কিছু সাফল্য নিয়ে আমি কথা বলব।

বিশ্বের সীমিত সম্পদ থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে আপনাকে নতুন নতুন পথ খুঁজে বের করতে হবে। এ কাজে বড় ভূমিকা রাখতে পারে উদ্ভাবন। আর নিত্যনতুন আবিষ্কারের ধারাকে এআই ভবিষ্যতে এতটা গতি দিতে যাচ্ছে, যেমনটি আমরা আগে কখনো দেখিনি।

এখন পর্যন্ত আমরা নতুন ওষুধ তৈরিতে এআইয়ের বড় সাফল্য দেখেছি। ওষুধ আবিষ্কারের জন্য প্রচুর তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন পড়ে। এ কাজে গতি বাড়াতে পারে এআই। ইতিমধ্যে এ পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে কিছু প্রতিষ্ঠান ক্যানসারের ওষুধ তৈরির কাজ করছে। তবে এআই নিয়ে গেটস ফাউন্ডেশনের মূল অগ্রাধিকার এমন কিছু স্বাস্থ্যগত সমস্যার সমাধান বের করা, যেগুলো বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র মানুষের দুর্গতির কারণ হচ্ছে। বলা চলে, এইডস, টিবি ও ম্যালেরিয়ার মতো রোগের কথাই।

আমরা এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোয় জীবনযাত্রার মান বাড়াতে অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছি। এ কাজে যুক্ত কয়েকজন গবেষকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গত শরতে আমি সেনেগাল গিয়েছিলাম। এ সফরে আমার আরেকটি উদ্দেশ্য ছিল গেটস ফাউন্ডেশনের শীর্ষ উদ্ভাবনী প্রকল্প ‘গ্র্যান্ড চ্যালেঞ্জেস’-এর ২০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন করা।

যাত্রাকালে গ্র্যান্ড চ্যালেঞ্জেসের একটিমাত্র লক্ষ্য ছিল। তা হলো স্বাস্থ্য খাতে বড় সমস্যাগুলো শনাক্ত করা এবং স্থানীয় গবেষকদের মধ্যে যাঁরা ওই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারেন—তাঁদের অনুদান দেওয়া।

সেনেগালে আমি যাঁদের সঙ্গে দেখা করেছিলাম, তাঁদের অনেকেই গ্র্যান্ড চ্যালেঞ্জেস প্রকল্পে এআই নিয়ে প্রথম কাজ করছিলেন। কারণ, ২০০৩ সালে আমরা এই প্রকল্পের লক্ষ্য নির্ধারণের সময় এআইয়ের বিষয়টি গেটস ফাউন্ডেশনের ধারণায় ছিল না। তবে এখন বড় বড় সমস্যার সমাধানে মেধাবী বিজ্ঞানীরা যেভাবে এআইয়ের সহায়তা নিচ্ছেন, তা সব সময় আমাকে অনুপ্রাণিত করে।

সমস্যা সমাধানে বিজ্ঞানীদের এআইয়ের ব্যবহার এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আগামী বছর বা ২০২৫ সালে তা বড় পরিসরে কাজে লাগাতে দেখব—এমন সম্ভাবনাও কম। কিছু উদ্যোগ হয়তো একেবারেই কাজে আসবে না। এরপরও এআই নিয়ে তাঁদের সৃজনশীলতা তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। বর্তমানে এটা নিয়ে আশা-জাগানিয়া যেসব প্রশ্ন উঠেছে, তার কিছু আমি তুলে ধরছি:

শরীর অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী হয়ে ওঠা কি ঠেকাতে পারে এআই:

শরীরে জীবাণুর সংক্রমণ থামানোর জাদুকরি ক্ষমতা রয়েছে অ্যান্টিবায়োটিকের। তবে অ্যান্টিবায়োটিকের ঘন ঘন ব্যবহার হলে জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যকারিতা কমে যায়। একে বলা হয় ‘অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্ট’ বা এএমআর। ঘানার অরাম ইনস্টিটিউটের নানা কফি কুয়াকি একটি এআই প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছেন। ওই প্রযুক্তির সহায়তার স্বাস্থ্যকর্মীরা রোগীদের এএমআর ঝুঁকি এড়িয়ে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের পরামর্শ দিতে পারবেন।

এআই কি প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে আলাদাভাবে শিক্ষা দিতে পারে:

বর্তমানে শিক্ষাসংক্রান্ত এআই প্রযু্ক্তিগুলো খুবই চমৎকার। সেগুলো এমনভাবে তৈরি, প্রত্যেক শিক্ষার্থী আলাদাভাবে নিজের সমস্যা সমাধানে ব্যবহার করতে পারে। ‘খানমিগো’ ও ‘ম্যাথিয়া’র কথা বলা চলে। এআইভিত্তিক এই অ্যাপগুলো অসাধারণ। ভবিষ্যতে সেগুলো আরও ভালো কাজ করতে পারবে।

উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতীর চিকিৎসায় এআই: সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে বিশ্বে প্রতি দুই মিনিটে একজন নারীর মৃত্যু হয়। আমি আশাবাদী, এই মৃত্যুর হার কমাতে এআই সহায়তা করতে পারবে। গত বছর আমি লিখেছিলাম, এআই পরিচালিত আলট্রাসনোগ্রাফি কীভাবে গর্ভকালীন ঝুঁকি শনাক্তে সহায়তা করতে পারে। এ বছর ভারতীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এআরএমএমএএনের কয়েকজন গবেষক আমাকে বলেছেন, দেশটিতে নতুন মা হওয়া নারীদের নানা সমস্যার সমাধানে এআই ব্যবহারের প্রত্যাশা রয়েছে তাঁদের।

এইডসের ঝুঁকি নির্ণয়ে সহায়তায় এআই
অনেকেই চিকিৎসক বা নার্সের কাছে তাঁদের যৌনজীবন নিয়ে কথা বলতে অস্বস্তি বোধ করেন। তবে এইডসের মতো রোগের ঝুঁকি নির্ণয় এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে এসব তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন একটি চ্যাটবট এইডসের ঝুঁকি নির্ণয় অনেক সহজ করে তুলবে। এই চ্যাটবটের কাছে ২৪ ঘণ্টাই পরামর্শ নিতে পারবে মানুষ।

স্বাস্থ্যকর্মীদের চিকিৎসাসংক্রান্ত তথ্য দিতে পারে এআই:

জটিল কোনো রোগীর চিকিৎসার সময় তাঁর চিকিৎসাসংক্রান্ত ইতিবৃত্ত জরুরি ভিত্তিতে জানার প্রয়োজন পড়ে। পাকিস্তানের মতো দেশে অনেক মানুষের এসব তথ্য নথি আকারে থাকে না। মরিয়ম মুস্তফার দল এমন একটি মুঠোফোন অ্যাপ নিয়ে কাজ করছেন, যেটি ব্যবহার করে পাকিস্তানে মাতৃস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা কর্মীরা সহজেই রোগীদের তথ্য সংরক্ষণ করতে পারবেন। ওই অ্যাপটি কোনো রোগী সম্পর্কে তথ্য জানতে চাইবে। এরপর কথা বলার মাধ্যমে যেসব তথ্য দেওয়া হবে, তা অ্যাপটি সংরক্ষণ করবে।

সামনে এখনো সুদীর্ঘ পথ। অনেক বাধা আসবে। তবে আমি আশাবাদী, আমরা তা কাটিয়ে উঠব। আমরা যদি এখন বুদ্ধির সঙ্গে বিনিয়োগ করি, এআই বিশ্বকে আরও সাম্যের একটি আবাসস্থলে পরিণত করতে পারবে। কোনো প্রযুক্তি উদ্ভাবন হলে ধনী দেশগুলো আগে সুবিধা পায়, দরিদ্র দেশগুলো পরে। এআই এই ব্যবধান কমিয়ে আনতে—এমনকি নির্মূলও করতে পারে।

অপুষ্টির সমস্যা সমাধানের দ্বারপ্রান্তে
আমাকে প্রায়ই একটি প্রশ্ন করা হয়। তা হলো, আমাকে শুধু একটি সমস্যা সমাধান করতে বলা হলে আমি কোনটি বেছে নেব। সব সময়ই আমি একটি উত্তরই দিয়েছি—অপুষ্টির সমাধান। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যবৈষম্য। বিশ্বে প্রতি চারটি শিশুর একটি পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। জন্মের পর প্রথম দুই বছরে শিশু যথেষ্ট পুষ্টিকর খাবার না পেলে শারীরিক বা মানসিক—কোনোভাবেই তার বিকাশ হবে না। অপুষ্টি মোকাবিলার মাধ্যমে আমরা শিশুমৃত্যু বন্ধে বড় ভূমিকা রাখতে পারি।

শুধু পর্যাপ্ত খাবার নয়, অপুষ্টির পেছনে রয়েছে আরও জটিল কিছু বিষয়। প্রায় ১৫ বছর আগে গবেষকদের নজরে আসে, যেসব অঞ্চলে অপুষ্টির হার বেশি, সেখানে পোলিওর মতো শিশুদের মুখে খাওয়ার টিকাগুলো তেমন কাজে আসছে না। এতে স্পষ্ট, ওই টিকাগুলো পুরোপুরি কার্যকর হতে কোনো কিছু বাধা দিচ্ছে। গবেষকদের সন্দেহের দৃষ্টি যায় অন্ত্রে থাকা একটি ব্যাকটেরিয়ার দিকে। এটি একটি মাইক্রোবায়োম (উপকারী জীবাণু)।

ওই সন্দেহ যে সঠিক, ২০১৩ সালে তা নিশ্চিত হয়। সে বছর জীববিজ্ঞানী জেফ গর্ডন যুগান্তকারী একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। এতে বলা হয়, মালাবিতে যমজ শিশুর শরীরে থাকা মাইক্রোবায়োম নিয়ে কাজ করেছিলেন তিনি। তাতে দেখা যায়, মাইক্রোবায়োম শুধু শরীরের একটি উপজাতই নয়, বরং স্বাস্থ্যের একটি নির্ধারকও বটে। সেই প্রথম আমরা ইঙ্গিত পেয়েছিলাম, অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমে পরিবর্তন এনে পুষ্টিহীনতা মোকাবিলা করা যেতে পারে।

আমরা আবিষ্কার করলাম, অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম অকর্মক্ষম অবস্থায় থাকতে পারে। ফলে অন্ত্রে প্রদাহ দেখা দেয়। ফলে শরীর পুষ্টি উপাদান শোষণ করতে পারে না। আমরা এটাও দেখেছি, আগেভাগে পদক্ষেপ নিলে অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমের সমস্যায় বড় সুফল পাওয়া যায়।

শিশুর শারীরিক বিকাশে প্রথমে যেসব ব্যাকটোরিয়া কাজে লাগে, তার একটি হচ্ছে বি. ইনফ্যান্টিস। ব্যাকটেরিয়াটি মায়ের দুধের শর্করাকে শিশুর জন্য নানা পুষ্টি উপাদানে পরিণত করতে সহায়তা করে। শিশুর শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ বি. ইনফ্যান্টিস ব্যাকটেরিয়া না থাকলে বুকের দুধ থেকে পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান তৈরি না-ও হতে পারে। একই সঙ্গে অন্ত্রের অন্যান্য উপকারী মাইক্রোবায়োম খাদ্য না পেলে সেগুলোর বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে।

আমরা ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের শরীরে আলাদাভাবে বি. ইনফ্যান্টিস সরবরাহ করলে কি সমস্যার সমাধান হবে? ঠিক এই জিনিসটিই নিয়েই গেটস ফাউন্ডেশনের অংশীদারেরা বছরের পর বছর কাজ করছে। বর্তমানে একটি গবেষণার তৃতীয় ধাপের কাজ চলছে। সেখানে মায়ের দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ানো যায় এমন বি. ইনফ্যান্টিস ব্যাকটেরিয়া নিয়ে পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। পাঁচটি দেশের ১৬ হাজার শিশুর ওপর তা প্রয়োগ করে দেখা হচ্ছে।

গবেষণায় এখন পর্যন্ত আসা ফলাফল ইতিবাচক। দেখা গেছে, শিশুদের আলাদাভাবে বি. ইনফ্যান্টিস খাওয়ানো হলে, তাদের অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং পুরোপুরি কর্মক্ষম হয়ে উঠছে। পুষ্টিহীনতা মোকাবিলায় এটি ব্যাপক সহায়তা করতে পারে।

গত এক দশকে শিশুস্বাস্থ্য খাত আমার ধারণার চেয়ে অনেক দ্রুত সামনে এগিয়েছে। মাইক্রোবায়োমের মতো যে জিনিসটি পুরোপুরি নজরের বাইরে ছিল, তা পুষ্টিহীনতার মতো অন্যতম বড় স্বাস্থ্যবৈষম্য মোকাবিলায় কাজ করছে। ২০২৪ সালে আমরা আরও কত কী জানব, সেই জ্ঞান জীবন বাঁচাতে কীভাবে কাজে লাগাব, তা দেখতে আমি মুখিয়ে আছি।

তথ্যসূত্র : দৈনিক প্রথম আলো 




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top