মিয়ানমার-থাইল্যান্ডে ভূমিকম্পে কয়েক শ মানুষের মৃত্যুর শঙ্কা
রাজ টাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০২৫ ২০:৩৪; আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৫ ১৬:২১

রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের প্রভাবে ভবনসহ বহু অবকাঠামো ধসের ঘটনায় মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে কয়েক শ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিবিসি বার্মিজ সার্ভিসকে মান্দালাই অঞ্চলে কর্মরত উদ্ধারকারী দলের একজন সদস্য বলেছেন, ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি। মৃত্যুর সংখ্যাও অনেক বেশি। হতাহতদের সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি। তবে এটি অন্তত শতাধিক।
অন্যদিকে ব্যাংককে বহুতল ভবন ধসের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ শ্রমিকের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ৭০ জন হয়েছে। ভবনটিতে তিন শতাধিক শ্রমিক কাজ করছিলেন বলে জানা গেছে। তাদের বেশিরভাগের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কম।
উদ্ধারকারীরা জীবিতদের সন্ধান চালিয়ে যাওয়ার কারণে ঘটনাস্থলে একটি অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। এ অবস্থায় ব্যাংকক শহরকে দুর্যোগপূর্ণ ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
অন্যদিকে মিয়ানমারের ছয়টি রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে জান্তা সরকার। সাগাইং, মান্দালাই, ম্যাগওয়ে, বাগো, ইস্টার শান রাজ্য এবং নেপিডো অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে মিয়ানমারে। এর কেন্দ্রস্থল ছিল দেশটির উত্তর-পশ্চিমের শহর সাগাইং থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে। এলাকাটি রাজধানী নেপিডো থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার উত্তরে।
এরপর আরও বেশ কয়েকটি আফটার শক অনুভূত হয় আশপাশের অঞ্চলে।
ভূমিকম্পে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে সড়ক, ভবনসহ বিভিন্ন অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মিয়ানমার থেকে এএফপির সাংবাদিকরা জানান, নেপিডোতে ভূমিকম্পের সময় বিভিন্ন ভবনের ছাদ থেকে অংশবিশেষ খসে পড়েছে। নেপিডো শহরে ২০ লেন পর্যন্ত প্রশস্ত রাস্তা আছে। ভূমিকম্পের কারণে শহরের বিভিন্ন সড়কে ফাটল তৈরি হয়েছে। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত সাগাইং অঞ্চলে ৯০ বছরের পুরনো একটি সেতু ভেঙে পড়েছে এবং বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনকে সংযুক্তকারী মহাসড়কের কিছু অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভূমিকম্পে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে ধর্মীয় উপাসনালয়গুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কিছু কাঠামো মাটিতে ধসে পড়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে অনেক এলাকা। ৯১ বছরের পুরনো একটি সেতু ধসে পড়েছে। এতে পাশাপাশি দুই অঞ্চলে সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে।
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে কেঁপেছে প্রতিবেশি বাংলাদেশও। রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭। শুক্রবার দুপুরে ১২টা ২৫ মিনিটে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
ভারতের পশ্চিবঙ্গের কলকাতা, মনিপুর রাজ্য ও ইম্ফলেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। তবে দেশটি থেকে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এছাড়া বেইজিংয়ের ভূমিকম্পবিষয়ক সংস্থা বলছে, চীনের দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনান প্রদেশেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। এ কম্পনের তীব্রতা ছিল ৭ দশমিক ৯।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: