গাজা যুদ্ধের ৭০০ দিন: ৯০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস, ক্ষতি ৬৮ বিলিয়ন ডলার
রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৩:০৫; আপডেট: ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৪:১৯

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকমী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। পরের দিন থেকেই অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বর্বর অভিযান শুরু করে দখলদার ইসরায়েল। এরপর কেটে গেছে ৭০০ দিন, তবে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
শনিবার (০৬ সেপ্টেম্বর) গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ৭০০ দিনের ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের ফলে উপত্যকার প্রায় সমস্ত অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে, যার আনুমানিক ক্ষতি পরিমাণ ৬৮ বিলিয়ন বা ৬ হাজার ৮০০ কোটি ডলারেরও বেশি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলি বর্বরোচিত হামলায় গাজার হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার আবাসিক ভবনসহ ৯০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে, যা গত ৭৬ বছরে ফিলিস্তিনিদের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক পরিস্থিতি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বিশেষ করে বিগত কয়েক সপ্তাহে পুরো শহর ও আশেপাশের এলাকা ধ্বংস করে মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে, যেখানে আগে হাজার হাজার মানুষ বসবাস করত।
এছাড়াও ৩৮টি হাসপাতাল, ৮৩৩টি মসজিদ এবং ১৬৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের পাশাপাশি হাজার হাজার অন্যান্য সরকারি স্থাপনার ব্যাপক ক্ষতির কথাও উল্লেখ করেছে মিডিয়া।
ইসরায়েল ‘গণহত্যা ও বাস্তুচ্যুতির’ মাধ্যমে গাজা ধ্বংস করছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ৭৩ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন অথবা নিখোঁজ রয়েছেন, যার মধ্যে ২০ হাজারের বেশি শিশু এবং ১২ হাজার ৫০০ জন নারী রয়েছেন।
মিডিয়া অফিসের মতে, ২ হাজার ৭০০ পরিবারকে নাগরিক নিবন্ধন থেকে সম্পূর্ণরূপে মুছে ফেলা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১ হাজার ৬৭০ জন চিকিৎসা কর্মী, ২৪৮ জন সাংবাদিক, ১৩৯ জন বেসামরিক প্রতিরক্ষা সদস্য এবং ১৭৩ জন পৌর কর্মচারী রয়েছেন। আরও ১ লাখ ৬২ হাজারও বেশি আহত হয়েছেন, যাদের অনেকেই শরিরের বিভিন্ন অঙ্গ, দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন।
হামাস নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া অফিস অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল গাজা শহর এবং উত্তর গাজার বাসিন্দাদের বাড়িতে ফিরে যেতে বাধা দিয়ে ব্যাপকভাবে বাস্তুচ্যুতি জোরদার করছে, পাশাপাশি অনাহার যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
মিডিয়া অফিস আরও জানিয়েছে, সীমান্তে অপেক্ষারত হাজার হাজার ত্রাণের ট্রাক ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজায় প্রবেশ করতে পারছে না, যার ফলে ১০ লাখেরও বেশি শিশুসহ ২৪ লাখ ফিলিস্তিনি দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হয়েছে।
এই ধ্বংসযজ্ঞের জন্য ইসরায়েল এবং তার সমর্থকদের, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছে গাজার মিডিয়াঅফিস। একই সঙ্গে আরব ও ইসলামী দেশ, বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, জাতিসংঘের প্রতি আগ্রাসন বন্ধ করতে, অবরোধ তুলে নিতে, বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে এবং আন্তর্জাতিক আদালতের সামনে ইসরায়েলি নেতাদের জবাবদিহি করতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
সূত্র: আনাদোলু
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: